বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বজ্রপাতের প্রকোপ ক্রমশ বাড়ছে, যা প্রতি বছর হাজারো মানুষের প্রাণহানি ও বিপুল অর্থনৈতিক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এমন পরিস্থিতিতে এক যুগান্তকারী সাফল্যের দাবি জানিয়েছে জাপানের নিপ্পন টেলিগ্রাফ অ্যান্ড টেলিফোন করপোরেশনের (এনটিটি) বিজ্ঞানীরা। তারা এমন এক উন্নত ড্রোন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন, যা বজ্রপাতের সঞ্চিত শক্তি নিয়ন্ত্রণ এবং নিরাপদ ব্যবহারে সক্ষম। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই প্রযুক্তি বিশ্বজুড়ে বজ্রপাত সুরক্ষায় এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে।
বিজ্ঞানীরা বজ্রপাত-প্রতিরোধী মানবহীন আকাশযান (ইউএভি) বা ড্রোনের মাধ্যমে বজ্রপাতের শক্তি নিয়ন্ত্রণের পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন। ড্রোনটি বজ্রপাতের কাছে উড়ে একটি কন্ডাক্টরের (পরিবাহক) মাধ্যমে বিদ্যুৎপ্রবাহকে মাটিতে নিরাপদে প্রবাহিত করে, যার ফলে মানুষ, অবকাঠামো ও প্রকৃতি ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পায়।
শুধু তা-ই নয়, সংকুচিত বাতাস এবং চার্জিং পদ্ধতির সাহায্যে ড্রোন এই বিশাল শক্তিকে পুনঃব্যবহারের জন্য সংরক্ষণও করতে পারে, যা টেকসই জ্বালানি উৎপাদনের সম্ভাবনা উন্মোচন করে।
পরীক্ষাগারে চালানো গবেষণায় দেখা গেছে, বজ্রপাত সুরক্ষা খাঁচার মধ্যে উড়ন্ত ড্রোন বজ্রপাতের গতিপথ পরিবর্তন এবং নিয়ন্ত্রণে সফল হয়েছে। বৈদ্যুতিক ক্ষেত্রের সঞ্চালনা ব্যবহার করে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা যেমন বিদ্যুৎকেন্দ্র, হাসপাতাল, বিমানবন্দর ও শিল্প এলাকা সুরক্ষিত রাখা সম্ভব হয়েছে। বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, এই সাফল্য মাঠপর্যায়ে বড় আকারে বাস্তবায়ন করা গেলে শহরাঞ্চলে বজ্রপাত-জনিত বিপর্যয় উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে।
জাপানি বিজ্ঞানীদের এই যুগান্তকারী আবিষ্কার শুধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সাফল্য নয়, বরং মানব সভ্যতার টিকে থাকার লড়াইয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন। ড্রোন প্রযুক্তি বজ্রপাতের মতো এক প্রবল প্রাকৃতিক শক্তিকে নিয়ন্ত্রণে এনে বৈশ্বিক সুরক্ষা ব্যবস্থায় যে বিপ্লব ঘটাতে যাচ্ছে, তা আগামী দিনে নগর ও গ্রামীণ জীবনকে আরো নিরাপদ, টেকসই ও উন্নত করে তুলবে বলে এমনটাই আশা করছেন বিজ্ঞানীরা।
বজ্রপাত যেন এক সাক্ষাৎ মৃত্যু, ৭২ শতাংশই কৃষক