ঢাকা
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

গাড়ির জ্বালানি খরচ কমানোর উপায়

আপডেট : ১৭ আগস্ট ২০২৫, ০১:৫৯ পিএম

বাংলাদেশে জ্বালানির দাম বাড়ায় গাড়ি মালিকদের জন্য কম খরচে গাড়ি চালানো এখন বড় চ্যালেঞ্জ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কয়েকটি ছোট অভ্যাস বদলালেই জ্বালানি খরচ কমানো সম্ভব। কীভাবে গাড়ির তেলের খরচ কমানো যায় কিছু তার কিছু উপায় চলুন জেনে নিন-

গাড়ির টায়ারে যদি বাতাস কম থাকে, তবে এর রোলিং রেজিস্ট্যান্স বেড়ে যায়। ফলে টায়ার বেশি ঘর্ষণ তৈরি করে এবং জ্বালানি খরচ বাড়ায়। গবেষণায় দেখা গেছে, টায়ারে নির্ধারিত চাপের চেয়ে ১০ পিএসআই কম থাকলে জ্বালানি দক্ষতা প্রায় ১০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে। তাই নিয়মিত টায়ারের চাপ পরীক্ষা করুন।

অযথা ওজন বহন করবেন না

অনেকেই গাড়ির বুটে অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র রাখেন। মনে রাখবেন, প্রতিটি অতিরিক্ত ৫০ কেজি ওজন জ্বালানি খরচ ২ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়ে দেয়। তাই জরুরি যন্ত্রাংশ ছাড়া অতিরিক্ত মালামাল না রাখাই ভালো।

এয়ারকন্ডিশন ব্যবহার করুন

অনেকে মনে করেন, এসি চালালে জ্বালানি বেশি খরচ হয়। তবে বাস্তবে ঘণ্টায় ৮০ কিমি গতিতে জানালা খোলা রাখলে বাতাসের চাপ অনেক বাড়ে। যা বেশি জ্বালানি খরচ করে। তাই এ ধরনের গতিতে এসি ব্যবহার করাই জ্বালানি সাশ্রয়ের জন্য ভালো।

খুব দ্রুত বা খুব ধীরে চালাবেন না

অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালালে বাতাসের প্রতিরোধ বাড়ে, এতে জ্বালানি খরচও বেড়ে যায়। উদাহরণস্বরূপ, ১০০ কিমি গতিতে চালালে ১৫ শতাংশ বেশি জ্বালানি খরচ হয়, আর ১১০ কিমিতে খরচ বেড়ে যায় ২৫ শতাংশ পর্যন্ত। আবার ঘণ্টায় ৫০ কিমির নিচে চালালে ইঞ্জিনকে নিচু গিয়ারে কাজ করতে হয়, যা জ্বালানি খরচ বাড়ায়। তাই হাইওয়েতে ৫০ থেকে ৯০ কিমি গতিই সবচেয়ে সাশ্রয়ী।

হঠাৎ এক্সিলারেটর দেবেন না

ইঞ্জিনকে অতিরিক্ত আরপিএম এ তুললে বেশি জ্বালানি পোড়ে। তাই ধীরে ধীরে এবং মসৃণভাবে এক্সিলারেটর চাপুন। এতে জ্বালানি খরচ কমবে এবং ইঞ্জিনের আয়ুও বাড়বে।

হঠাৎ ব্রেক করা এড়িয়ে চলুন

অপ্রয়োজনে হঠাৎ ব্রেক চাপলে আবার গতিতে ফেরাতে বাড়তি জ্বালানি খরচ হয়। বিশেষ করে সামনে গাড়ির খুব কাছাকাছি গিয়ে চালালে এ সমস্যা বেশি হয়। তাই নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে গাড়ি চালানো শুধু নিরাপদ নয়, বরং জ্বালানি সাশ্রয়েও কার্যকর।

সঠিক গিয়ার ব্যবহার করুন

অটোমেটিক গাড়িতে ক্রুজ কন্ট্রোল ব্যবহার করলে গতিবেগ স্থির থাকে, এতে জ্বালানি কম পোড়ে। আর ম্যানুয়াল গাড়িতে সুযোগ পেলে উচ্চ গিয়ার ব্যবহার করুন। এতে ইঞ্জিনের আরপিএম কমে এবং জ্বালানি খরচও কমে।

‘প্রেডিক্টিভ ড্রাইভিং’ অভ্যাস করুন

সামনের রাস্তা ভালোভাবে লক্ষ্য করুন এবং আগে থেকেই সিদ্ধান্ত নিন। উদাহরণস্বরূপ, সিগন্যাল লাল হলে হঠাৎ ব্রেক না দিয়ে ধীরে ধীরে গাড়ির গতি কমান। পাহাড়ি রাস্তার কাছে পৌঁছালে আগেভাগেই গতি বাড়ান। এতে হঠাৎ এক্সিলারেশন এড়ানো যায় এবং জ্বালানি সাশ্রয় হয়।

অফিস যাতায়াতের রুট পরিকল্পনা করুন

পিক আওয়ারে থেমে থেমে গাড়ি চালালে ইঞ্জিনের ওপর চাপ পড়ে এবং বেশি জ্বালানি খরচ হয়। তাই সম্ভব হলে অফিস বা বাসায় ফেরার জন্য এমন রুট বেছে নিন যেখানে জ্যাম কম। এতে সময় যেমন বাঁচবে, তেমনি জ্বালানি খরচও কমবে।

ইঞ্জিন অযথা চালু রাখবেন না

যদি কোনো কারণে তিন মিনিটের বেশি দাঁড়িয়ে থাকতে হয়, ইঞ্জিন বন্ধ রাখুন। কারণ গাড়ি না চললেও ইঞ্জিন চালু থাকলে জ্বালানি পোড়াতে থাকে।

জ্বালানি সাশ্রয়ের পাশাপাশি গাড়ির নিয়মিত সার্ভিসিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইঞ্জিনে যদি কাদা বা ক্ষয় জমে, তবে এর কার্যক্ষমতা কমে যায়। ভালো মানের ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করলে ঘর্ষণ কমে, স্লাজ জমা প্রতিরোধ হয় এবং জ্বালানি খরচও কম হয়।

তাই আজ থেকেই সচেতনভাবে গাড়ি চালানো শুরু করুন। ছোট ছোট অভ্যাস বদলালেই আপনার মাসিক জ্বালানি খরচ অনেকটা কমে আসবে।

NB/SN
আরও পড়ুন