পৃথিবীর পৃষ্ঠ যত শান্তই মনে হোক, ভূ-অভ্যন্তরে লুকিয়ে আছে বিপুল তাপ ও শক্তি। এই শক্তির বিস্ফোরণেই ঘটে আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত। ল্যাভা, ছাই ও গ্যাস বেরিয়ে পরিবেশে বড় ধরনের পরিবর্তন আনে। ভূবিজ্ঞানীরা বলছেন, পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ তাপই মূলত আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণের কারণ।
আগ্নেয়গিরি কী
ভূবিজ্ঞান অনুযায়ী, লিথোস্ফিয়ারের ফাটল বা ভূ-পৃষ্ঠের ওপরে গঠিত পাহাড়সদৃশ কাঠামোর মাধ্যমে যখন গলিত পাথর বা ম্যাগমা বেরিয়ে আসে, সেটাই আগ্নেয়গিরি। প্রাকৃতিক এ গঠন দীর্ঘ সময় স্থির থাকলেও হঠাৎ বিস্ফোরণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতিও ঘটাতে পারে।

কেন ঘটে অগ্ন্যুৎপাত
ভূ-অভ্যন্তরে তাপমাত্রা ও চাপ বেড়ে শিলাগুলো গলে তৈরি হয় ম্যাগমা। এটি আশপাশের শিলার তুলনায় হালকা হওয়ায় ওপরের দিকে উঠতে থাকে। লিথোস্ফিয়ারের ফাটল বা দুর্বল অংশ দিয়ে ম্যাগমা উপরে উঠে আসে। এর ভেতরে থাকা গ্যাস ও চাপের কারণে বিস্ফোরণ ঘটে এবং বের হয় ল্যাভা, ছাই ও বিভিন্ন গ্যাস যাকে অগ্ন্যুৎপাত বলা হয়।
আগ্নেয়গিরির ধরন
সক্রিয় অগ্নেয়গিরি: নিয়মিত বা সাম্প্রতিক সময়ে অগ্ন্যুৎপাত ঘটায়।
নিস্তেজ (ডরম্যান্ট): দীর্ঘদিন শান্ত থাকলেও ভবিষ্যতে জেগে উঠতে পারে।
মৃত (এক্সটিঙ্ক্ট): হাজার হাজার বছর অগ্ন্যুৎপাত না হওয়ায় আর সক্রিয় হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
অগ্ন্যুৎপাতের ধরন
- ল্যাভা ফ্লো: গলিত পাথর ঢাল বেয়ে নেমে আসে।
- পিরোক্লাস্টিক ফ্লো: ছাই, গ্যাস ও পাথরের কণা দ্রুতগতিতে নেমে আসে।
- স্ট্রোম্বোলিয়ান বিস্ফোরণ: অপেক্ষাকৃত ছোট ও নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণ।
- প্লিনিয়ান বিস্ফোরণ: অত্যন্ত শক্তিশালী বিস্ফোরণ, প্রচুর ছাই ও ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ে।
অগ্ন্যুৎপাতের প্রভাব
অগ্ন্যুৎপাতের ধ্বংসাত্মক দিকও রয়েছে বসতবাড়ি ধ্বংস, কৃষিজমির ক্ষতি ও প্রাণহানি ঘটতে পারে। তবে ইতিবাচক দিকও কম নয়। ল্যাভা ঠান্ডা হয়ে তৈরি করে নতুন ভূমি, ছাই মাটিকে করে তোলে উর্বর, আবার ভূতাপীয় শক্তি থেকে পাওয়া যায় জ্বালানি।
ভূবিজ্ঞানীরা বলছেন, আধুনিক সিসমোলজি ও ভূপ্রাকৃতিক বিশ্লেষণ ব্যবস্থার মাধ্যমে অগ্ন্যুৎপাতের পূর্বাভাস অনেকটাই উন্নত হয়েছে। সময়মতো সতর্কতা পাওয়া গেলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমিয়ে আনা সম্ভব।
কাক দিয়ে শহর পরিষ্কার প্রকল্পের ভবিষ্যৎ

