‘গাজা যুদ্ধ বন্ধ ও নিরীহ ফিলিস্তিনিদের হত্যা বন্ধ করতে না পারাটাকে আমরা মুসলিম বিশ্বের চরম ব্যর্থতাই বলবো। মুসলিম বিশ্বের অনৈক্যের কারণে এই যুদ্ধ বন্ধ হচ্ছে না। ফিলিস্তিনের বিষয়টি মুসলিম বিশ্বের নেতৃবৃন্দ সঠিকভাবে উপলব্ধি করতে পারছেন না বলেই আমাদের ধারণা’।
খবর সংযোগ ডটকমের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে কথাগুলো বলেন আল কুদস কমিটি বাংলাদেশের সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শাহ কাওসার মুস্তাফা আবুলউলায়ী।
তিনি বলেন, গাজায় বর্তমানে যে খাদ্য সংকট চলছে তা দূর করতে আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি করে সেখানে খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। গাজাবাসীর প্রতি মানবিক হয়ে তাদের খাদ্য সংকট দূর করা উচিত৷
আন্তর্জাতিক আল কুদস দিবস উপলক্ষে সাক্ষাৎকারে তিনি আরও বলেন, আল আকসা, আক কুদস শহর (জেরুজালেম) তথা ফিলিস্তিন নিয়ে আমরা আশাবাদী। আমরা বিশ্বাস করি সত্য ও ন্যায়ের জয় হবেই, ইনশা আল্লাহ।
তিনি বলেন, গাজা তথা ফিলিস্তিন ইস্যুতে ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) ভূমিকা সেভাবে লক্ষ করা যাচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে সংস্থাটি তার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছে। অথচ ইউরোপীয় ইউনিয়ন কিংবা অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থা যেভাবে কাজ করে ওআইসি সেভাবে কাজ করতে পারত। কিন্তু তা হচ্ছে না।
বাংলাদেশে আল কুদস কমিটির বর্তমান সভাপতি এই অধ্যাপক আরও বলেন, আল আকসা, আল কুদস তথা গোটা ফিলিস্তিনের সাথে আমাদের ঈমান, আবেগ ও ভালোবাসা জড়িত।
উল্লেখ্য, ১৯৮৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আররি বিভাগের অধ্যাপক ড. আ. ন. ম. আব্দুল মান্নান খানের নেতৃত্বে আল কুদস কমিটি গঠন করা হয়।
অধ্যাপক ড. শাহ কাওসার মুস্তাফা আবুলউলায়ী বলেন, আমাদের মূল ফোকাসটা হলো- গণসচেতনতা সৃষ্টি করা। আল আকসা মুসলমানদের প্রথম কেবলা হিসেবে যে দাবি সেটাকে সমুন্নত রাখা।
তিনি বলেন, আমরা প্রধানত সেমিনার করি। রমজানের শেষ শুক্রবার বা জুমাতুল বিদার দিনে আল কুদস দিবস পালন করি। আল কুদসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরার জন্যে মসজিদের ইমামদের নিকট চিঠি পাঠাই।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষক বলেন, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সমস্যার দ্বি-রাষ্ট্র (টু-স্টেট সলিউশন) ভিত্তিক সমাধানের বিষয়টি ইরান তাদের নিজেদের মত করে দেখে। কিন্তু বাস্তবতার নিরিখে আমরা অমানবিক নই। বিষয়টির আমরা একটি সম্মানজক সমাধান চাই। আমরা চাই, ফিলিস্তিনিরা তাদের দখল হয়ে যাওয়া সমগ্র এলাকা ফিরে পাক। আমরা এটার একটি ন্যায় ভিত্তিক সমাধান চাই।
আল কুদস কমিটি বাংলাদেশের এই সভাপতি বলেন, মুসলিম বিশ্বের দেশসমূহের মধ্যে ফিলিস্তিন বিষয়ে ইরানকেই সবচেয়ে সোচ্চার ভূমিকা পালন করতে দেখা যায়।
ইরান গাজা যুদ্ধ ও ফিলিস্তিন নিয়ে যেসব কথা বলছে ও বলে আসছে যেগুলো মুসলিম উম্মাহরই কথা। মুসলিম বিশ্বের সব রাষ্ট্র সেভাবে মন খুলে কথা বলতে পারছে না। কিন্তু ইরান তাদের রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক শক্ত অবস্থানের কারণে ফিলিস্তিন ইস্যুতে সব কথা বলতে পারছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশও ফিলিস্তিনের জনগণের অধিকার এবং বর্তমান যুদ্ধ নিয়ে সুস্পষ্ট অবস্থান গ্রহণ করেছে।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে মুসলিম বিশ্বের সমগ্র দেশগুলোর ফিলিস্তিনের নিপীড়িত জনগণের পক্ষে অবস্থান নেয়া নৈতিকতার দাবি। এটিকে ঈমানি দায়িত্ব বলেও আমরা মনে করি।
