আজ জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আরেকটি বিজয়ের দিন বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, আজকের দিনে বিশেষ করে মনে পড়ছে জুলাই গণঅভ্যুত্থানকালে প্রাণ হারানোদের।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়ের প্রতিক্রিয়ায় এসব জানান তিনি।
আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশের জন্য একটা ঐতিহাসিক দিন, আজকে বাংলাদেশের মাটিতে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার শ্রেষ্ঠ ঘটনা ঘটেছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানকালে শত শত মানুষের মৃত্যু, হাজার হাজার মানুষের গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনা, অঙ্গহানির ঘটনা, বিকলাঙ্গ হওয়ার ঘটনার জন্য যে নৃশংস খুনি দায়ী ছিল, আজকে সেই শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের আদেশ হয়েছে। একইসঙ্গে তার প্রধান সহযোগী সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামালের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি আজকে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের আরেকটি বিজয়ের দিন। আজকে আমার বিশেষ করে মনে পড়ছে, যারা জুলাই গণআন্দোলনকালে প্রাণ হারিয়ে ছিলেন আবু সাঈদের কথা, মুগ্ধ, ওয়াসিম, ইয়ামিন, আনাসসহ সবার কথা মনে পড়ছে। মনে হচ্ছে আজকে তাদের বিদেহী আত্মা হয়ত একটু হলেও শান্তি পাবে। আজকে তাদের শোক সন্তপ্ত পরিবারের কথা মনে পড়ছে, হয়ত এই রায়ের মধ্যে দিয়ে তারা সামান্য হলেও সান্ত্বনা পাবেন।’
উপদেষ্টা বলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে আমি এই রায়ে সন্তুষ্ট, কিন্তু আমি বিস্মিত না। কারণ শেখ হাসিনা এবং তার সহযোগীদের মানবতাবিরোধী অপরাধের যে জোরালো বিস্তৃত প্রমাণ রয়েছে, তাতে পৃথিবীর যে-কোনো আদালতে বিচার হলেই তার সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়ার কথা।’
তিনি বলেন, ‘আমি এই বিচারের জন্য বিচার সংশ্লিষ্ট যারা আছেন বিশেষ করে আমাদের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল তার সহযোগীদের আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি, যারা সাক্ষী দিয়েছেন তাদের অভিনন্দন জানাচ্ছি। আমরা যতদিন আছি বিচারকার্য পূর্ণ উদ্যমে চলবে এবং আমরা আশা করি আগামীতে যেই সরকারে নির্বাচিত হবে এই বিচারের গুরু দায়িত্ব থেকে কোনো অবস্থাতেই যেন তারা পিছ পা না হয়।’
চব্বিশের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যার দায়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালকে ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
এর আগে, সোমবার দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটের দিকে ছয় অধ্যায়ে ৪৫৩ পৃষ্ঠার রায়ের প্রথম অংশ পড়া শুরু করেন বিচারিক প্যানেলের সদস্য বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী। ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলের অপর সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ।
২ ঘণ্টা ১০ মিনিটের সংক্ষিপ্ত রায় পড়া শেষে দুপুর ২টা ৫০ মিনিটে রায় ঘোষণা করেন ট্রাইব্যুনাল। মূল রায় ঘোষণা করেন ট্রাইব্যুনালের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদার।
শেখ হাসিনা ও কামালের সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের নির্দেশ
রাষ্ট্র ও জুলাই শহীদরা ন্যায়বিচার পেয়েছে: অ্যাটর্নি জেনারেল
সাবেক আইজিপি আল-মামুনের ৫ বছরের কারাদণ্ড