বর্তমান সময়ে নানান কারণে আলোচিত সাবেক পুলিশ প্রধান (আইজিপি) বেনজীর আহমদ। তিনি নামে-বেনামে এবং আত্মীয়-স্বজনদের নামে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গড়েছেন অঢেল সম্পত্তি। দেশের কোনো না কোনো এলাকায় তাঁর অবৈধ উপায়ে অর্ঝিত সম্পদের সন্ধান মিলছে। নারিকেল জিঞ্জিরা খ্যাত দ্বীপ সেন্টমার্টিনেও বেনজীরের মালিকানাধীন জমির খোঁজ মিলেছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, সেন্টমার্টিন দ্বীপে নিজের নামে জমি কেনার পাশাপাশি উখিয়ার ইনানীতে স্ত্রী ও মেয়েদের নামেও জমি কিনেছেন পুলিশের এই সাবেক মহাপরিদর্শক। তবে ইনানী সমুদ্র সৈকত এলাকায় এবং সেন্টমার্টিন দক্ষিণ পাড়ায় কেনা এসব জমিতে কোনো স্থাপনা তৈরি করা হয়নি। সেন্টমার্টিনের বিশাল জমিটি কংক্রিটের পিলারে কাঁটাতারের সীমানা দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। এদিকে গত কয়েকদিন আগে সেন্টমার্টিন দক্ষিণ পাড়ার জায়গাটিতে জমির মালিক হিসেবে বেনজীর আহমেদের নামে সাইনবোর্ড থাকলেও হঠাৎ করে সেই সাইনবোর্ডটি এখন নেই বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সংবাদকর্মী নুর মোহাম্মদ।
জানা গেছে, প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) সেন্টমার্টিনে ১০ বছর আগে (তখন তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার ছিলেন) নিজের নামে ১ একর ৭৫ শতক এই জমি কিনেছিলেন বেনজীর আহমদ। পাশাপাশি টেকনাফ-কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভ সড়কের ইনানী সৈকত এলাকায় স্ত্রী ও তিন মেয়ের নামে কেনেন ৭২ শতক জমি।
সরেজমিনে গিয়ে এবং স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০০৯ সালে স্ত্রী জীসান মীর্জার নামে ৪০ শতক জমি কেনেন বেনজীর। জমির দলিলমূল্য উল্লেখ করা হয় ৫ লাখ টাকা। জীসান মীর্জার নামে পরে আরও ১০ ও ৭ শতাংশ জমি কেনেন, যার দলিলমূল্য যথাক্রমে ১৬ লাখ ৬৬ হাজার টাকা ও ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা। এ ছাড়া বেনজীরের তিন মেয়ে ফারহীন রিশতা বিনতে বেনজীর, তাহসিন রাইশা বিনতে বেনজীর ও জারা জেরিন বিনতে বেনজীরের নামে কেনা হয় ১৫ শতাংশ জমি। যার দলিলমূল্য দেখানো হয় ২৪ লাখ ৮৫ হাজার টাকা।
উখিয়ার জালিয়াপালং ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের মেম্বার শামসুল আলম দৈনিক খবর সংযোগকে জানান, জমিগুলো এখনও পড়ে আছে।
এদিকে সেন্টমার্টিনে বেনজীর আহমেদের জমিগুলো দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা স্থানীয় আবাসিক হোটেল সেন্ড শোর এর মালিক আবদুর রহমান দৈনিক খবর সংযোগকে জানান, ২০১৪ সালে স্থানীয় ২২ জনের কাছ থেকে তিনি (বেনজীর আহমেদ) ১ একর ৭৫ শতক জমি কেনেন।
সেন্ড শোর হোটেলের মালিক আরও জানান, সেন্টমার্টিনের দক্ষিণ পাশের বিশাল জায়গা পরিত্যক্ত ছিল। মাটির নিচে পাথর থাকায় চাষাবাদ হয় না। তখন প্রতি কানি (১ কানিতে ৪০ শতক) জমি বিক্রি হয়েছিল ৬-৭ লাখ টাকা দামে।
এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সৈয়দ সাফফাত আলী দৈনিক খবর সংযোগকে বলেন, সেন্টমার্টিনসহ টেকনাফ উপজেলার ৮টি মৌজার জমি বেচাকেনা করতে জেলা প্রশাসনের অনুমতি লাগে। বেনজীর আহমেদের জমি কেনার আগে অনুমতি নেওয়া হয়েছিল কি না, তা তার জানা নেই।
