বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিলেও ইতিহাস গড়েছে আফগানিস্তান। প্রথমবার টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল খেলেছে দলটি। স্বপ্নের সেমিফাইনালে আরও বড় চমক উপহার দিতে চেয়েছিল রশিদ খানরা। কিন্তু বাস্তবে সেটা সম্ভব হয়নি। ত্রিনিদাদে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১১.৫ ওভারে মাত্র ৫৬ রানে গুটিয়ে যায় আফগানিস্তান।
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এই স্কোর আফগানিস্তানের সর্বনিম্ন সংগ্রহ। উইকেট যতই বোলিং বান্ধব হোক, এত কম রানের পুঁজি নিয়ে জেতা একরকম অসম্ভব! যেটা তো বোঝা গেছে দক্ষিণ ব্যাটিংয়েই। ৮.৫ ওভারেই মামুলি স্কোরটা টপকে গেছে প্রোটিয়ারা। তবে আফগান ক্যাপ্টেন রশিদ মতে, কঠিন একটি রাত কাটিয়েছে তারা। আর এর জন্য কন্ডিশনকেই দায় করছেন রশিদ। ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে রশিদ বলেন, ‘দল হিসেবে আমাদের জন্য কঠিন এক রাত গেছে। আমরা এর চেয়ে ভালো করতে পারতাম। কিন্তু কন্ডিশন আমাদের সেটা করতে দেয়নি, তবে এটাই টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট, আপনাকে যেকোনো পরিস্থিতির জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে।’
শেষ চারের লড়াইয়ে আফগানদের সংগ্রহ বড় হবে না। সেটা অনুমান করা গেছে পাওয়ারপ্লে শেষেই। প্রথম ৬ ওভারেই ২৮ রান তুলতেই ৫ উইকেট নাই হয়ে যায় তাদের। পরে আফগানরা প্রত্যাবর্তন করতে পারেনি। এজন্য রশিদ কাঠগড়ায় তুলছেন ব্যাটিং-অর্ডারকেই, ‘আমরা ব্যাটিংটা ভালো করিনি। ব্যাটিং নিয়ে কিছু কাজ করতে হবে, বিশেষ করে মিডল অর্ডার কীভাবে খেলাটাকে গভীরে নিতে পারে তা নিয়ে। যেটা বলছিলাম, অনেক কিছু শিখতে পেরেছি। আমরা দারুণ কিছু অর্জন করেছি, কঠোর পরিশ্রম করে আমরা আবার ফিরব। বিশেষ করে ব্যাটিং বিভাগ নিয়ে খাটতে হবে।’
আফগানিস্তান এখন বিশ্বের যে কোনো দলকে হারানোর সামর্থ্য রাখে। এই ধারাটা মাত্রই শুরু হলো। সামনে দারুণ এই ছন্দটা ধরে রাখতে চায় এশিয়ার দলটি। সেজন্য সতীর্থদের করণীয়টাই জানিয়ে দিলেন ক্যাপ্টেন, ‘আমরা এই টুর্নামেন্ট উপভোগ করেছি। টুর্নামেন্টের আগে যদি কেউ আমাদের বলত, তোমরা সেমিফাইনাল খেলবে, সেখানে দক্ষিণ আফ্রিকার মতো শীর্ষ কোনো দলের বিপক্ষে হেরে যাবে। আমরা তা ভালোভাবেই গ্রহণ করতাম। এটা মাত্র শুরু, যেকোনো দলকে হারানোর বিশ্বাস আমাদের আছে। আমাদের শুধু প্রক্রিয়া ঠিক রাখতে হবে। এটা আমাদের জন্য দারুণ শেখার অভিজ্ঞতা ছিল। এই টুর্নামেন্ট থেকে আমরা বিশ্বাস পেয়েছি। আমরা জানি, আমাদের সামর্থ্য আছে। এখন শুধু কঠিন পরিস্থিতি, চাপের মুহূর্তগুলো সামলাতে হবে।’
এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের পারফরম্যান্স আর অর্জন নিয়ে আফগানরা গর্ব করতেই পারে। গ্রুপ পর্বে উগান্ডা ও পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে বড় ব্যবধানে জয় ছিনিয়ে নিয়েছে। শুধু তাই নয়, নিউজিল্যান্ডের মতো শক্তিশালী দলকে ৭৫ রানে বিধ্বস্ত করে ৮৪ রানে জেতে তারা। পরে সুপার এইট থেকে বিদায় করে অস্ট্রেলিয়াকে।
