চট্টগ্রাম ফ্যাঞ্চাইজি ২০১৩ সালের বিপিএলের দ্বিতীয় আসরে ফাইনালে উঠেছিল। এরপর বাকি আসরগুলোতে নিয়মিত খেললেও পাঁচবার প্লে-অফ খেলার সুযোগ পেয়েছে তারা। যদিও কোনোবারই ফাইনালে উঠতে পারেনি। অবশেষে ১১ বছরের আপেক্ষা শেষে এবার ফাইনাল খেলবে চিটাগং কিংস।
শেষ ওভারের রোমাঞ্চে আলিস আল ইসলামের বীরত্বে ২ উইকেটে খুলনা টাইগার্সকে হারিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনালে নাম লেখালো চিটাগং কিংস। বৃহস্পতিবার আগে ব্যাটিং করে খুলনা ১৬৩ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায়। সহজ লক্ষ্যে খেলতে নেমে আলিস আল ইসলাম ও আরাফাত সানির ব্যাটিংয়ে দারুণ ম্যাচ জেতে চিটাগং। আগামী শুক্রবার ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে ফাইনালে লড়বে চিটাগং।
মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে টস জিতে খুলনাকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানিয়েছিল চিটাগং। শিমরন হেটমায়ারের ইনিংসের ওপর ভর করে খুলনা ১৬৩ রান সংগ্রহ করে। জবাবে খেলতে নেমে পারভেজ হোসেন ইমন (৪) ও গ্রায়াম ক্লার্ক (৪) সাজঘরে ফেরেন। এরপর তৃতীয় উইকেটে খাজা নাফা ও হোসেন তালাত মিলে গড়েন ৪৮ বলে ৭০ রানের জুটি। এই জুটিতে জয়ের পথেই ছিলো চিটাগং। কিন্তু হুট করেই ২৫ রানে ৫ উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ফেলে খুলনা। শেষ ৩ ওভারে ৩৪ রান প্রয়োজন ছিল চিটাগংয়ের। কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে এই লক্ষ্যটা কঠিন ছিল না। ১৮তম ওভারে ১৩ রান নিয়ে লক্ষ্যটা পরের দুই ওভারের জন্য অনেকটাই সহজ করে ফেলে চিটাগং। ১৯তম ওভারে হাসান মাহমুদ ৬ রান দিলে শেষ ওভারে লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৫ রানের।
শেষ ওভারে মিরাজ বল তুলে দেন তরুণ পেসার মুশফিক হাসানের হাতে। প্রথম দুই বলে এক চার ও এক ডাবলসে ব্যবধান কমান সানি। তৃতীয় বলে ডাবলস নিতে গিয়ে স্লিপ করে কিছুটা আঘাত পান আলিস। ফলে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন এই স্পিনিং অলরাউন্ডার। চতুর্থ বলে শরিফুল চার মেরে চিটাগংকে জয়ের পথেই রাখেন। শেষ দুই বলে ফাইনালে উঠতে চিটাগংয়ের প্রয়োজন হয় ৪ রানের। পঞ্চম বলে শরিফুল আউট হওয়ার পর ফের ক্রিজে নামেন আলিস। মুশফিক ওয়াইড ইয়র্কার করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ঠিকমতো হয়নি। আলিস এক্সট্রা কভার দিয়ে বাউন্ডারি মেরে জয় নিশ্চিত করেন তিনি। চার মেরেই নিজের ব্যাটকে উড়িয়ে মেরে উল্লাসে মাতেন এই স্পিনিং অলরাউন্ডার। আলিস ও আরাফাস ১৫ বলে অবিচ্ছিন্ন ২৬ রানের জুটি গড়েন। আলিস ১৭ ও আরাফাত ১৮ রানে অপরাজিত ছিলেন।
খুলনার বোলারদের মধ্যে হাসান মাহমুদ ও মুশফিক হাসান তিনটি করে উইকেট নিয়েছেন। দুটি উইকেট নেন নাসুম আহমেদ।
টস হেরে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ পেয়ে খুলনার শুরুটা হয় বাজে। পাওয়ার প্লেতে রানও তুলতে ব্যর্থ হয় খুলনা। ২ উইকেট হারিয়ে খুলনা তুলতে পারে ৩০ রান। ১০ ওভার শেষে মেহেদী হাসান মিরাজের ব্যাটে দাঁড়ায় ৪৬ রান। মিরাজ, অ্যালেক্স রস, আফিফ হোসেন ও নাঈম শেখ–টপ অর্ডারের সব ব্যাটারই হন ব্যর্থ। ৪২ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন ও শিমরন হেটমায়ার প্রতিরোধ গড়েন। ৫০ বলে ৭৩ রানের পর মাহিদুল আউট হলে জুটি ভাঙে তাদের। ৩২ বলে ১ চার ও ৩ ছক্কায় ৪১ রানের ইনিংস খেলেন মাহিদুল। এরপর ১১ বলে ৩১ রানের জুটি বাঁধেন হেটমায়ার ও জেসন হোল্ডার। শেষ ওভারে লম্বা শট খেলতে গিয়ে শরিফুলের ক্যাচে সাজঘরে ফেরেন আগের ম্যাচে খুলনার জার্সিতে যুক্ত হওয়া ক্যারিবীয় এই ব্যাটার। ৩৩ বলে ৬ চার ও ৪ ছক্কায় ৬৩ রান করে আউট হন তিনি। হেটমায়ারের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ৬ উইকেট হারিয়ে খুলনা সংগ্রহ করে ১৬৩ রান।
চিটাগং বোলারদের মধ্যে বিনুরা ফার্নান্দো নেন ২৭ রানে দুটি উইকেট। একটি করে উইকেট নেন শরিফুল ইসলাম, আলিস আল ইসলাম, খালেদ আহমেদ ও আরাফাত সানি।
