দক্ষিণ আমেরিকার বিশ্বকাপ বাছাই ফুটবলের লড়াই আবার শুরু হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) সপ্তম রাউন্ডের খেলা শুরু হবে। এদিন আর্জেন্টিনা নিজেদের মাঠে চিলির বিপক্ষে খেলবে। এ ম্যাচের জন্য আর্জেন্টিনার কোচ লিওনেল স্ক্যালোনি দল ঘোষণা করেছেন। দলের দুই বড় তারকা লিওনেল মেসি ও আনহেল ডি মারিয়াকে ছাড়াই এ ম্যাচে খেলতে দেখা যাবে আর্জেন্টিনাকে। শুধু এ ম্যাচে নয়, পরের ম্যাচে অর্থাৎ কলাম্বিয়ার বিপক্ষেও আর্জেন্টিনা এ দুই তারকাকে ছাড়াই মাঠে নামবে।
প্রায় এক যুগ পরে আর্জেন্টিনা এই দুই তারকাকে বাইরে রেখে প্রথম ম্যাচ খেলতে যাচ্ছে। সর্বশেষ আর্জেন্টিনা মেসি ও মারিয়াকে বাইরে রেখে ২০১৩ সালে মাঠে নেমেছিল। সেটাও ছিল বিশ্বকাপের বাছাই পর্বের ম্যাচে। সে ম্যাচে প্রতিপক্ষ ছিল উরুগুয়ে।
গত কয়েক বছর মেসি ও মারিয়ার ওপর ভর করে আর্জেন্টিনার একের পর এক সাফল্যের গান গেয়েছে। তারা দলকে এনে দিয়েছেন বহুল কাঙ্ক্ষিত বিশ্বকাপ, কোপা আমেরিকা ও ফিনালিসিমা। কোপা আমেরিকা টানা দুইবার জয় করেছে। এ সব ট্রফি জয়ের মাঝ দিয়ে উভয়েই তারা ক্যারিয়ারটা শেষ সময়ে রাঙিয়ে নেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন।
তবে দুই তারকাকে বাইরে রেখে স্ক্যালোনি দল সাজানোর যে দুঃসাহস দেখিয়েছেন সেখানে কিন্তু কোনো চমক নেই। কেননা লিওনেল মেসি ইনজুরির কারণে এ ম্যাচে দলে নেই। জুলাইয়ে কোপা আমেরিকার ফাইনাল ম্যাচে ইনজুরি আক্রান্ত হওয়ার পর এখনো মাঠে ফেরেননি তিনি। আর কোপা জয়ের পর ডি মারিয়া জাতীয় দলকে বিদায় জানিয়েছেন। ফলে দুই তারকার কাউকে দেখা যাবে না।
২০১৩ সালে ১৫ অক্টোবর আর্জেন্টিনা সর্বশেষ ম্যাচে মাঠে নেমেছিল যেখানে মেসি ও ডি মারিয়ার কেউ ছিলেন না। মূলত ২০১৪ সালের বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে আর্জেন্টিনার খেলা নিশ্চিত হওয়ায় সে সময়ের কোচ আলেহান্দ্রো সাবেলা ডি মারিয়াকে বিশ্রামে দিয়েছিলেন। আর মেসি ইনজুরির কারণে বিশ্রামে ছিলেন। দুই তারকা বাইরে থাকার সুযোগ সাবেলা একাধিক নতুন খেলোয়াড়কে একাদশে রাখার সুযোগ পেয়েছিলেন। অন্যদিকে উরুগুয়ের কোচ শক্তিশালী মাঠে নামিয়েছিলেন। না নামিয়েও উপায় ছিল না তার। কেননা সরাসরি বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ তাদের ছিল না। প্লে অফ খেলতে হলে তাদের জয়ের বিকল্প ছিল না। শেষ পর্যন্ত তারা ৩-২ গোলে জয় পেয়েছিল। লুইস সুয়ারেজ, এদিনসন কাভানি ও ক্রিশ্চিয়ান রদ্রিগুয়েজ গোল করেছিলেন। অন্যদিকে আর্জেন্টিনার জোড়া গোল করেছিলেন ম্যাক্সি রদ্রিগুয়েজ।
২০০৫ সালে মেসি জাতীয় দলে প্রথম খেলার সুযোগ পান। ডি মারিয়াকে সঙ্গী করে ২০০৮ অলিম্পিকে খেলেন মেসি। জয় করেন স্বর্ণপদক। ১৬ বছর তারা জুটি হয়ে খেলেছেন। ১৬ বছর কোপা জয়ের মাঝ দিয়ে তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলেন। মারিয়া তার শেষ ম্যাচ স্মরণীয় করে রেখেছেন। প্রায় দুই দশক পর তাদের কাউকে ছাড়াই আর্জেন্টিনা দল আবার মাঠে নামছে।
