ঢাকা
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

প্রশাসনিক অবহেলায় জিআই হারাচ্ছে বাংলাদেশ: ড. দেবপ্রিয়

আপডেট : ২৬ জুন ২০২৪, ০৫:৩৭ পিএম

দেশের প্রশাসনিক অবহেলার কারণে বাংলাদেশ অনেক পণ্যের ভৌগলিক নির্দেশক (জিআই) হারাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন সেন্টার পর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। বুধবার (২৬ জুন) দুপুরে ‘সুন্দরবনের মধু এখন ভারতের ভৌগলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য’ শীর্ষক মিডিয়া ব্রিফ্রিংয়ে তিনি একথা বলেন। 

ড. দেবপ্রিয় বলেন, ‘সুন্দরবনের মধু ভারত এবং বাংলাদেশে উৎপন্ন হয়। তবে এর দুই তৃতীয়াংশ হয় সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে। কিন্তু ভারতের পশ্চিমবঙ্গ সরকার এ মধু'র ভৌগলিক নির্দেশক অর্থাৎ জিআই নিয়ে গেছে। অথচ এ বিষয়ে আমাদের দেশ জানেই না।’

তিনি বলেন, মে মাসের ১৩ থেকে ১৭ তারিখ পর্যন্ত জেনেভাতে একটি কনফারেন্স হয়েছিলো। কনফারেন্স শেষে পশ্চিমবঙ্গের এক উর্ধতন কর্মকর্তা সুন্দরবনের মধুর জিআই এখন তাদের দাবি করে ট্যুইটারে একটি পোস্ট করেন। সেখান থেকে বিষয়টি জানতে পারে সিপিডি। 

বাগেরহাটের ডিসির কথা উল্লেখ করে দেবপ্রিয় বলেছেন, ২০১৭ সালে ৭ আগস্ট সুন্দরবনের মধুকে জিআই পণ্য করার জন্য ঢাকায় আবেদন পাঠিয়েছিলো বাগেরহাটের ডিসি। কিন্তু ২০২৪ সালে এসেও সংশ্লিষ্ট কেউ এ বিষয়ে কোনো ধরণের পদক্ষেপ নেয়নি।

অন্যদিকে ২০২১ সালের ১২ জুলাই সুন্দরবনের মধুকে ভারতের জিআই পণ্য করার জন্য আবেদন করে পশ্চিমবঙ্গ। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে ভারত সরকার ৩ বছরের মধ্যেই সুন্দরবনের মধুকে জিআই পণ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে। বাংলাদেশে এতো আগে আবেদন করেও জিআই ট্যাগ না পাওয়াকে প্রশাসনের অন্যায়, অবহেলা আর অবজ্ঞাকে দায়ী করছেন দেবপ্রিয়।

দেবপ্রিয় বলেছেন, ভারত কোনো ধরণের ভৌগলিক অবস্থান স্পষ্ট না করেই বাংলাদেশি অনেক পণ্যের জিআই নিজেদের বলে দাবি করছে। এর মধ্যে জামালপুরের নকশি কাঁথাকে শুধুমাত্র নকশি কাঁথা, জামালপুরের খিরসাপাত আমকে মালদার হিমসাগর, রাজশাহী-চাপাইনবাগঞ্জের ফজলি আমকে মালদার ফজলি, ঢাকাই মসলিনকে বাংলার মসলিন, জামদানী শাড়িকে ফুলিয়ার জামদানী, গোপালগঞ্জের রসগোল্লাকে বাংলার রসগোল্লা, এবং টাঙ্গাইল শাড়িকে টাঙ্গাইল শাড়ি অফ বেঙ্গল নামে জিআই ট্যাগ নিয়েছে ভারত। সিপিডির আশঙ্কা এই তালিকা আরও বড় হবে। বাংলাদেশি আরও অনেক পণ্যের জিআই ট্যাগ নিয়ে নিতে পারে ভারত। 

জিআই নিয়ে সমস্যা সমাধানে এবং আইনি সুরক্ষার জন্য কিছু পরামর্শ তুলে ধরেছেন এই অর্থনীতিবিদ। তিনি বলছেন, আন্তর্জাতিকভাবে আইনি সুরক্ষা পেতে হলে সমীক্ষার মাধ্যমে কোনো কোনো পণ্যকে জিআই তালিকাভুক্ত করতে হবে তার পূর্ণাজ্ঞ তালিকা তৈরি করতে হবে। আন্তর্জাতিক আইনি কাঠামোতে যেতে হবে সরকারকে। জিআই সুরক্ষার জন্য দুই দেশের অভিন্ন আইনি কাঠামোতে যেতে হবে। দ্বিপাক্ষিক চুক্তি করতে হবে ভারতে সাথে। ইউরোপীয় আইনি কাঠামোতে যেতে হবে। এতে করে ইউরোপের দেশগুলোতে এসব পণ্যের প্রসার বাড়বে। এছাড়া দ্রুত জেনেভা এক্টের সদস্য হতে হবে বাংলাদেশকে। কারণ প্রচলিত আইনি কাঠামোতে আন্তর্জাতিকভাবে জিআইয়ের পূর্ণাঙ্গ সুরক্ষা পাওয়া সম্ভব না।

MB/AST
আরও পড়ুন