নীতি সুদহার অপরিবর্তিত রেখে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের (জানুয়ারি-জুন) মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের সভাকক্ষে গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর জানুয়ারি-জুন সময়ের জন্য আগাম মুদ্রানীতি ঘোষণা করেন।
২০২৫ সালের জানুয়ারি-জুন পর্যন্ত মুদ্রানীতিতে রেপো হার ১০%-ই রেখেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৯.৮%। আগের মুদ্রানীতিতেও লক্ষ্যমাত্রা একই ছিল। আর সরকারি খাতে ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৭.৫০%, যা আগের মুদ্রানীতিতে ছিল ১৪.২% শতাংশ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর ড. হাবিবুর রহমান জানান, আগামী জুন নাগাদ মূল্যস্ফীতি ৭-৮% নামিয়ে আনার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন করা হয়েছে ১৭.৫%। গত ডিসেম্বরে যা হয়েছে ১৮.১০%।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক আশা করছে, নতুন মুদ্রানীতি কার্যকর করা গেলে মূল্যস্ফীতি ৭% থেকে ৮%-এর মধ্যে আটকে রাখা যাবে। আগের মুদ্রানীতিতেও মূল্যস্ফীতির ৬.৫%-এর মধ্যে রাখার লক্ষ্য ধরা হয়েছিল, যদিও বাস্তবে তা হয়েছে ১০%-এর কাছাকাছি।
এর আগে, গত ২২ অক্টোবর দেশের মুদ্রানীতির অন্যতম টুল নীতি সুদহার (ব্যাংক রেট) ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ১০%-এ উন্নীত করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। গত ২৪ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় ব্যাংক নীতি সুদহার ৯% থেকে বাড়িয়ে ৯.৫% করা হয়, গত ২৫ আগস্ট উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নীতি সুদহার ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ৯% করে বাংলাদেশ ব্যাংক। পরবর্তীতে এটি ৯.৫% করা হয়। ২০২২ সালের মে মাস নীতি সুদহার ছিল ৫%। সে সময় থেকে এখন পর্যন্ত মোট ১০ বার বাড়ানো হয়েছে নীতি সুদহার।
এদিকে, দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি ভোগাচ্ছে দীর্ঘদিন। নানা পদক্ষেপের সঙ্গে সুদহার বাড়িয়েও তা নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। এরই মধ্যে নীতি সুদহার (রেপো সুদ) আরেক দফা বাড়িয়ে চলতি (২০২৪-২৫) অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের (জানুয়ারি-জুন) মুদ্রানীতিতে ঘোষণার কথা জানিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। উদ্যোক্তাদের মতে বর্তমান পরিস্থিতিতে সুদহার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি কমানো সম্ভব হবে না, এতে আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এর প্রভাব পড়বে বিনিয়োগ, ব্যবসা-বাণিজ্য ও কর্মসংস্থানে।
