ঢাকা
মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

করপোরেট করহার নিয়ে যা বললেন অর্থ উপদেষ্টা

আপডেট : ১৭ মার্চ ২০২৫, ১১:২২ এএম

অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বাংলাদেশে করপোরেট করহার অনেক বেশি ‘‘আগামী জাতীয় বাজেটে করপোরেট করহার 'রিভিজিট' করা হবে”। একইসঙ্গে বৈষম্য কমাতে পরোক্ষ করের চেয়ে প্রত্যক্ষ কর আদায়ে জোর দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় দেশের খ্যাতনামা অর্থনীতিবিদদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত প্রাক-বাজেট সভা শেষে গতকাল (১৬ মার্চ) সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন। 

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আমি দায়িত্ব গ্রহণের পর বিভিন্ন ব্যক্তি ও খাতকে দেওয়া কর অব্যাহতি বাতিল করে দিয়েছি। ট্যাক্স এক্সপেন্ডিচার (কর ব্যয়) কমাতে আগামী বাজেটে এ ধরনের অব্যাহতি আরও কমানো হবে।

তিনি আরও বলেন, পরোক্ষ করের প্রভাব ধনী-দরিদ্র সবার ওপর সমানভাবে বর্তায়। তাই পরোক্ষ করের চেয়ে প্রত্যক্ষ কর আদায়ে জোর দেওয়া হবে।

সভায় বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) চেয়ারম্যান রেহমান সোবহান প্রস্তাব করেন, যেসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের করযোগ্য আয় থাকা সত্বেও কর দেয় না, তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে নতুন আইন প্রণয়ন করা হোক।

আগামী বাজেটে এ ধরনের আইন করা হবে কি না, এমন প্রশ্নে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, এ বিষয়ে আমি কমিট করছি না। আমাদের ব্যবসায়ীরা এমনিতেই সবসময় বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন, নানা সুবিধা চান।

এনজিও এবং সরকার মিলে মোট যে টাকা ব্যয় করছে, তার কতটা কোন খাতে যাচ্ছে, মুদ্রানীতিতে তার বিস্তারিত তুলে ধরার পক্ষে সুপারিশ করেন রেহমান সোবহান।

এছাড়া পারফরম্যান্স-ভিত্তিক বাজেট প্রণয়নের ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, প্রত্যেকটি বাজেটে বলতে হবে, আগের অর্থবছরের বাজেটে কী কী প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল এবং তার মধ্যে কোনগুলো বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়েছে এবং কোনগুলো কেন সম্ভব হয়নি।

এদিকে ফুটপ্রিন্ট রেখে যাওয়ার মতো আগামী বাজেটে অন্তত দুটি কাজ করবেন বলে জানান অর্থ উপদেষ্টা। এর মধ্যে একটি হলো রাজস্ব আদায় ও রাজস্ব পলিসি বিভাগ পৃথক করা। আরেকটি হলো প্রকল্প বাস্তবায়নে দীর্ঘ সময় লাগার সমস্যাটির সমাধান করা।

তিনি আশা প্রকাশ করেন, পরবর্তী সরকার এসে কর ও প্রকল্প বাস্তবায়ন সংস্কারের প্রচেষ্টা এগিয়ে নেবে।

সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে দেখা যায়, একেকটি প্রকল্প মেয়াদ বেড়ে বেড়ে ১২ বছর ধরে বাস্তবায়ন হয়। এটি যাতে না হয়, সেজন্য আগামী বাজেটে উদ্যোগ নেওয়া হবে। 

এছাড়া অর্থবছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে প্রকল্পের অর্থ তেমন ব্যয় হয় না; কিন্তু শেষ প্রান্তিকে অনেক অর্থ ব্যয় হয়। এই ব্যয় এবং ব্যায়ের মান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। তাই আমরা এমন একটা ব্যবস্থা করব, যাতে প্রথম বা দ্বিতীয় প্রান্তিকের মধ্যেই প্রকল্প প্রস্তুত সম্পন্ন হয় এবং তৃতীয় ও চতুর্থ প্রান্তিক থেকে বাস্তবায়ন হয়।

তিনি আরও বলেন, 'স্থানীয়ভাবে কিছু প্রকল্প নিতে চাই, যা স্থানীয়দের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে। এছাড়া দক্ষতা উন্নয়নের জন্য বাজেটে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হবে। আমাদের কারখানাগুলো অটোমেশনে যাচ্ছে; সেখানে স্থানীয়দের নিয়োগ না দিয়ে বিদেশ থেকে লোক নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। এসব ক্ষেত্রে যাতে স্থানীয়দের চাকরি হয়, সেজন্য দক্ষতা উন্নয়নে আমরা জোর দেব। জনশক্তি রপ্তানির ক্ষেত্রেই এটি কাজে লাগবে।

আগামী অর্থবছরের বাজেট খুব বেশি উচ্চাভিলাষী হবে না উল্লেখ করে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে মূল্যস্ফীতির হার ৬.৫ শতাংশে নামিয়ে আনার প্রাক্কলন করা হচ্ছে, যা চলতি অর্থবছর শেষে ৮ শতাংশে নামবে।

অর্থসচিব মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার বলেন, আগামী বাজেট খুবই স্বচ্ছ হবে। আগে অনেক কিছুর বিষয়ে গাইডলাইন পেতাম না, যা এখন পাচ্ছি।

AHA
আরও পড়ুন