বৃষ্টি হলেই সরবরাহের ঘাটতির কথা বলে সবধরনের সবজি, কাঁচা মরিচ, মাছ, মুরগি ও ডিমের অতিরিক্ত দাম রাখতো বিক্রেতারা। কিন্তু এবার হলো তার ব্যতিক্রম।
সারা দিন বৃহস্পতিবার (২৯ মে) বৃষ্টি হয়। শুক্রবার (৩০ মে) সকাল থেকেও আবহাওয়া খুব একটা ভালো হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোতে ক্রেতার সংখ্যা অনেক কম। তবে পণ্য সরবরাহে খুব একটা তারতম্য হয়নি। প্রায় সব পণ্য বিক্রি হচ্ছে আগের দামেই।
রাজধানীর রামপুরা, হাজীপাড়া বউবাজার, খিলগাঁও তালতলা বাজার ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র। সকাল থেকে বৈরী আবহাওয়ার কারণে প্রতিটি বাজারে ক্রেতার সংখ্যা ছিল কম। আবার বাজারে অনেক দোকান বন্ধ দেখা গেছে।

সবজি বিক্রেতারা জানিয়েছেন, রাতে বৃষ্টি না থাকায় পাইকারি বাজারে সবজির সরবরাহ ছিল। যে কারণে পণ্য আনা-নেওয়াতে খুব বেশি সমস্যা হয়নি। তবে প্রত্যন্ত এলাকা থেকে সবজি এসেছে কম। বাজারে ক্রেতার সংখ্যা কম থাকায় দামে খুব একটা প্রভাব পড়ছে না।
আবু হোসেন নামে এক সবজি বিক্রেতা বলেন, গতকাল বৃষ্টির কারণে সারা দিন বেচা-বিক্রি হয়নি। সকাল থেকে একই অবস্থা। পুরোনো সবজি রয়ে গেছে। এর মধ্যে কিছু সবজি এনেছি আজ। দাম আগের মতোই আছে।

দেখা যায়, বাজারে বেশিভাগর সবজি ৪০ থেকে ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। পটল, ঢ্যাঁড়স, চিচিঙা ও ঝিঙা আছে এই তালিকায়। এছাড়া কাকরোল, বরবটি, কচুর লতি, উস্তা, বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকায়। এছাড়া কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি ৮০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে, বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম নেমেছে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা কেজি দরে। কিছু বাজারে দাম ১৮০ টাকা হাঁকলেও দরদাম করলে ওই দামে কিনতে পাওয়া যাচ্ছে। একইভাবে কমে সোনালি মুরগি প্রতি কেজি ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
মুরগি বিক্রেতা বজলু মিয়া বলেন, বাজারে সস্তা দামে মুরগি দুই সপ্তাহ ধরে বিক্রি হচ্ছে। এখন মুরগি বিক্রি করে খামারিদের লোকসান হচ্ছে।
মুরগির দাম কম থাকলেও ডিমের দাম মাঝামাঝি পর্যায়ে রয়েছে। প্রতি ডজন ডিম ১৩৫-১৪০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে, পুরোনো মিনিকেট চাল বাড়তি দামে বিক্রি হলেও কিছুটা কমে বিক্রি হচ্ছে বাজারে নতুন আসা মিনিকেট।

জাতীয় মাছ ইলিশের দাম সবসময়ই চড়া থাকে। আজকের বাজারে এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২২০০ টাকায়, দেড় কেজি ওজনের ইলিশ ২৫০০ টাকা, ৭০০-৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১৭০০ থেকে ১৮০০ টাকা, আর ৫০০-৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ কিনতে গুনতে হচ্ছে ১৪০০ থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত।
চাল বিক্রেতা হোসেন আলী বলেন, নতুন চালের দাম প্রতি বস্তায় (২৫ কেজি) ১০০ থেকে ২০০ টাকা কমেছে। এখন প্রতিবস্তা মিনিকেটের দাম ২০০০ টাকার মধ্যে এসেছে, যা আগে ২২০০ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল।
তিনি বলেন, বাজারে প্রচলিত প্রায় সব ব্র্যান্ডের মিনিকেট চালের দামই কমেছে। তবে পুরোনো কোনো চালের দাম এখনো কমেনি।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পুরোনো মিনিকেট চাল যেখানে সর্বনিম্ন ৭২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে সেখানে নতুন মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা কেজি দরে। তবে ভালো মানের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পুরোনো মিনিকেট চাল এখনো সর্বোচ্চ ৮৫-৮৬ টাকায় কিনতে হচ্ছে।
অন্যদিকে, মুদি বাজারে তেল, চিনি, ডালের দামে খুব একটা পার্থক্য দেখা যায়নি।
