১ সেপ্টেম্বর থেকে দেশের বিভিন্ন বন্দরে কনটেইনার হ্যান্ডলিং চার্জ ২০ থেকে ৫০ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত ও কোনো ক্ষেত্রে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়বে এমন সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে ব্যবসায়ীরা। তাছাড়া দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন।
শনিবার (৩০ আগস্ট) সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটিতে সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরওয়ার্ডার্স এসোসিয়েশন (বাফা) সদস্যরা এ বিষয় তুলে ধরেন।
তারা বলেন, এই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ করে তা পুনর্বিবেচনার অনুরোধ করছি। চার্জ বাড়ানোর পদক্ষেপ দেশের সার্বিক আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব রপ্তানিকারকদের জন্য বিরাট চাপ তৈরি করবে এবং এতে দেশের রপ্তানি ব্যাহত হবে।
অতিরিক্ত চার্জ বাড়ানোর কারণে রপ্তানি হ্রাস পেলে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের ওপর বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। জাতীয় অর্থনীতিতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। যেহেতু রপ্তানি আয়ের উপর দেশের অর্থনীতি ও বৈদেশিক মুদ্রা নির্ভরশীল।
সংবাদ সম্মেলনে বাফার সাধারণ সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, আবরারুল আলম, আদনান এমডি ইকবাল, মুনিম মাহফুজ, আনোয়ার হোসেন মিলন, আবুল হাসনাত, জনাব শামসুল হক ও তরিকুল ইসলাম তারেক।
আবরারুল আলম লিখিত বক্তব্যে বলেন, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকট, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অতিরিক্ত ট্যারিফ প্রয়োগনীতি ও সার্বিক বাজার সংকটের এই ক্রান্তিলগ্নে বিএসিডিএ কর্তৃক অযৌক্তিকভাবে রপ্তানি পণ্যের কনটেইনার হ্যান্ডেলিং চার্জ ২০–৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে, যা দেশের রপ্তানি অর্থনীতিতে একটি বড় উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।
নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী,২০ ফুট রপ্তানি কনটেইনারের চার্জ ৬,১৮৭ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৯,৯০০ টাকা, ৪০ ফুট কনটেইনারের চার্জ ৮,২৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৩,২০০ টাকা, ৪৫ ফুট হাই-কিউব কনটেইনারের চার্জ ৮,২৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৪,৯০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়াও খালি কনটেইনার, লিফট-অন/লিফট-অফ, ডকুমেন্টেশন, গ্রাউন্ড রেন্টসহ প্রায় সব সার্ভিসে অতিরিক্ত চার্জ আরোপ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের উদ্বেগের মধ্যে রয়েছে-
১. বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা ও বাজার সংকট: দেশের আমদানি- রপ্তানি বাণিজ্যের ব্যয়ভার সংকোচনের লক্ষ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নিরলস প্রচেষ্টা সত্ত্বেও বিআইসিডিএ কর্তৃক এই অস্বাভাবিক ও অসময় উপযোগী মূল্যবৃদ্ধির পদক্ষেপ দেশের সার্বিক আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব রপ্তানিকারকদের জন্য বিরাট চাপ তৈরি করবে এবং এতে দেশের রপ্তানি ব্যাহত হবে, যা নিতান্তই অপ্রত্যাশিত।
২. বৈদেশিক ক্রেতা হারানোর আশঙ্কা: বাংলাদেশি পণ্যের প্রতিযোগিতামূলক দাম আন্তর্জাতিক বাজারে আমাদের অন্যতম শক্তি। হ্যান্ডেলিং খরচ বাড়ানোর ফলে এ প্রতিযোগিতা আরও কঠিন এবং বৈদেশিক ক্রেতারা বিকল্প বাজারে চলে যেতে পারে।
৩. সংকটে ক্ষুদ্র ও মাঝারি রপ্তানিকারকরা: বড় প্রতিষ্ঠান হয়তো কিছুটা সামাল দিতে পারলেও ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের এই প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়বে। এর ফলে অনেক প্রতিষ্ঠানের রপ্তানি সীমিত বা বন্ধ করতে বাধ্য হতে পারে।
৪. জাতীয় অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব: যেহেতু রপ্তানি আয়ের উপর দেশের অর্থনীতি ও বৈদেশিক মুদ্রা নির্ভরশীল। অতিরিক্ত চার্জ বৃদ্ধির কারণে রপ্তানি হ্রাস পেলে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের ওপর বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
এবার ঊর্ধ্বমুখী মুদি পণ্যের বাজার