ঢাকা
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

রিজার্ভ বেড়ে ৩১.৫০ বিলিয়ন ডলার

আপডেট : ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ১০:০৫ পিএম

দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহের জোয়ারে বড় উত্থান ঘটেছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ ব্যাংকের গ্রস রিজার্ভ (মোট রিজার্ভ) ৩১ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। আর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৬ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলার।

রোববার (৫ অক্টোবর) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, রিজার্ভের তৃতীয় একটি হিসাবও রয়েছে, যেটি শুধুমাত্র আইএমএফকে জানানো হয়। সেই হিসাবে নিট রিজার্ভ ২১ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে, যদিও তা প্রকাশ করা হয় না।

বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও হুন্ডি প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপের ফলে রেমিট্যান্স এখন বৈধ পথে আসছে, যা রিজার্ভ বাড়াতে বড় ভূমিকা রাখছে।

বিদেশি মুদ্রাবাজারে চাপ কমায় বাংলাদেশ ব্যাংক এখন ডলার বিক্রি না করে উল্টো বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ডলার কিনছে। সর্বশেষ গত ৪ সেপ্টেম্বর ৫টি ব্যাংক থেকে কেনা হয়েছে ১৩ কোটি ৪০ লাখ ডলার। এর আগে ২ সেপ্টেম্বর ৮টি ব্যাংক থেকে ৪ কোটি ৭৫ লাখ ডলার কেনা হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে দেশে এসেছিল ২৪৭ কোটি ৭৯ লাখ ১০ হাজার ডলারের রেমিট্যান্স, পরের মাস আগস্টে এসেছিল ২৪২ কোটি ২০ লাখ ডলার। আর সদ্য বিদায়ী অক্টোবর মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ২৬৮ কোটি ৫৮ লাখ ডলার।

এর আগের অর্থবছর (২০২৪-২৫) জুড়ে মোট প্রবাসী আয় এসেছে ৩০ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় ২৬ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এই আয় ছিল ২৩ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার।

গত এক দশকে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। ২০১৩ সালে ছিল মাত্র ১৫.৩২ বিলিয়ন ডলার। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে তা বেড়ে ৩৯ বিলিয়ন ডলার ছাড়ায়। ২০২১ সালের আগস্টে রিজার্ভ পৌঁছায় সর্বোচ্চ ৪৮.০৪ বিলিয়ন ডলারে। এরপর ডলার সংকট শুরু হলে ধারাবাহিকভাবে রিজার্ভ হ্রাস পায়। ২০২৪-২৫ অর্থবছর শেষে রিজার্ভ দাঁড়ায় ৩১.৬৮ বিলিয়ন ডলারে।

আইএমএফের বিপিএম-৬ পদ্ধতি অনুযায়ী, কিছু অপ্রচলিত রিজার্ভ, যেমন সুদের আয়, বাজেট সহায়তা, বিভিন্ন কিস্তিতে পাওয়া ঋণের নির্দিষ্ট অংশ এবং কোনো কিছু শর্তসাপেক্ষে ব্যয়যোগ্য না হলে সেগুলো রিজার্ভ হিসেবে ধরা হয় না। এ কারণেই গ্রস রিজার্ভ ও বিপিএম-৬ অনুসারে হিসাবের মধ্যে ফারাক দেখা যায়।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, রেমিট্যান্সের স্থিতিশীল প্রবাহ এবং রিজার্ভ ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা বজায় রাখতে পারলে অর্থনীতি আরও শক্ত ভিতের ওপর দাঁড়াবে। তবে রপ্তানি আয় ও বৈদেশিক বিনিয়োগ বাড়ানোর দিকেও নজর দেওয়া জরুরি, যাতে আমদানি চাপ সামলাতে পর্যাপ্ত রিজার্ভ বজায় থাকে।

DR
আরও পড়ুন