সম্প্রতি চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট সরকার জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রীগুলো মূল্য সংযোজন করের (ভ্যাট) আওতায় এনেছে। এতে কনডমের ওপর আরোপ করা হয়েছে ১৩ শতাংশ ভ্যাট, ফলে স্বাভাবিকভাবেই দেশটিতে এই জন্মনিয়ন্ত্রণ পণ্যের দাম বেড়ে গেছে।
চীনের সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বাৎসরিক জন্মহার বৃদ্ধির জন্য সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে, কনডমের ওপর ১৩ শতাংশ ভ্যাট জারি করাও সেসবের মধ্যে অন্যতম। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গকে এক কর্মকর্তার বলেন, “দাম বেড়ে যাওয়ায় সঙ্গত কারণেই লোকজন কনডম কেনা কমিয়ে দেবে এবং নিশ্চিতভাবেই এর প্রভাব বাৎসরিক জন্মহারের ওপর পড়বে।”
তবে সরকারের এই পদক্ষেপের সমালোচনা করেছেন বেইজিংয়ের ইউওয়া পপুলেশন রিসার্চ ইনস্টিটিউটের গবেষক হি ইয়াফু। তিনি বলেছেন, “সরকারের এই পদক্ষেপ প্রতীকী এবং এত বাস্তব চিত্রে বড় পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা কম।”
প্রসঙ্গত, চীন একসময় বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ ছিল। জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে দেশটির সরকার ১৯৮০ সালে এক সন্তাননীতি প্রণয়ন করে এবং কঠোরভাবে তা মেনে চলে ২০১৫ সাল পর্যন্ত। তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে এই নীতি মেন চলার জেরে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে সাফল্য আসে ঠিকই, কিন্তু নতুন সমস্যা আকারে দেখা দেয় বাৎসরিক নিম্ন জন্মহার।
গত প্রায় এক যুগ ধরে প্রতিবছরই নবজাতক শিশুদের সংখ্যা কমছে দেশটিতে। সেই সঙ্গে চিকিৎসাসেবা ও সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নত হতে থাকায় বাড়ছে বয়স্ক মানুষের সংখ্যা। এর ফলে প্রতিবছরই দেশটিতে কর্মক্ষম তরুণ-তরুণীর হার কমছে।
জাতিসংঘের হিসেব অনুযায়ী, বর্তমানে গড় হিসেবে চীনে প্রতিবছর জন্ম নিচ্ছে ১৪০ কোটি শিশু। নিম্ন জন্মহারের প্রবণতা যদি অব্যাহত থাকে, তাহলে আগামী ৭৫ বছর পর অর্থাৎ ২১০০ সালে দেশটির বাৎসরিক জন্মহার নেমে আসবে ৮০ কোটিতে।
এদিকে এমন এক সময়ে কনডমের দাম বাড়িয়েছে বেইজিং, যখন চীনে নাটকীয়ভাবে বাড়ছে এইডস রোগীদের সংখ্যা। চীনের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংস্থা চাইনিজ সেন্টার ফল ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন-এর তথ্য অনুসারে ২০০২ সালে দেশটিতে প্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে এইডসে আক্রান্ত রোগীদের হার ছিল দশমিক ৩৭। ২০ বছর পর ২০২১ সালে প্রতি ১ লাখ মানুষের মধ্যে এইডসে আক্রান্তদের হার পৌঁছেছে ৮ দশমিক ৪১-এ। সূত্র : ব্লুমবার্গ
২০২৬ ফিফা বিশ্বকাপ ড্র, যে গ্রুপে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা