মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ভেনেজুয়েলার তেলবাহী জাহাজ জব্দ ও অর্থনৈতিক অবরোধের পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে কঠোর আইন পাস করেছে দেশটির ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি। নতুন এই আইনে বলা হয়েছে, যারা বিদেশি এই অবরোধ বা ‘জলদস্যুতার’ মতো কাজে সহায়তা করবে বা অর্থায়ন করবে, তাদের সর্বোচ্চ ২০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড দেওয়া হবে।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর দল নিয়ন্ত্রিত ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে সর্বসম্মতিক্রমে এই আইনটি পাস হয়। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক জলসীমায় ভেনেজুয়েলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকটি তেলবাহী ট্যাঙ্কার জব্দ করেছে মার্কিন কোস্টগার্ড। মাদুরো সরকার এই পদক্ষেপকে সম্পূর্ণ বেআইনি এবং ‘আন্তর্জাতিক জলদস্যুতা’ হিসেবে অভিহিত করেছে। খবর আলজাজিরার।
আইনটি পাসের সময় ভেনিজুয়েলার আইনপ্রণেতা জিউসেপ্পে আলেসান্দ্রেলো বলেন, ‘এই আইনের লক্ষ্য হলো জাতীয় অর্থনীতি রক্ষা করা। সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মান আরও নিচে নেমে যাওয়া রোধ করা।
প্রস্তাবিত আইনে অবরোধ সমর্থনকারী ভেনিজুয়েলানদের জন্য ১৫ থেকে ২০ বছরের জেল এবং ১০ লাখ মার্কিন ডলারের বেশি জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।
এদিকে, গত কয়েকমাস ধরে লাতিন আমেরিকায় মার্কিন সামরিক উপস্থিতি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভেনেজুয়েলার ওপর ‘পূর্ণাঙ্গ নৌ-অবরোধ’ ঘোষণা করেছেন। মাদুরো সরকারকে একটি ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন তিনি। ট্রাম্পের দাবি, ভেনেজুয়েলা তেল বিক্রির অর্থ দিয়ে মাদক পাচার এবং সন্ত্রাসবাদে মদদ দিচ্ছে।
তবে ভেনেজুয়েলার পক্ষ থেকে এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। জাতিসংঘে ভেনেজুয়েলার প্রতিনিধি স্যামুয়েল মনকাডা নিরাপত্তা পরিষদে বলেন, ‘ভেনেজুয়েলা হুমকি নয়; বরং মার্কিন সরকারই বিশ্ব শান্তির জন্য হুমকি।’
রাশিয়া ও চীনও মার্কিন এই পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করেছে। তারা এটিকে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো অবশ্য আশঙ্কা প্রকাশ করছে, এই নতুন আইনের মাধ্যমে মাদুরো সরকার দেশের অভ্যন্তরে ভিন্নমত দমন ও বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের আরও কঠোরভাবে হেনস্তা করতে পারে।
