ঢাকা
মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

ইসরায়েলে ইরানের হামলা, দেশে দেশে আনন্দ মিছিল

আপডেট : ১৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:০৮ পিএম

বহুদিনের বৈরিতা থাকলেও এবারই প্রথমবারের সরাসরি ইসরায়েলে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। এ হামলার পরপরই আনন্দ-উল্লাসে মেতেছে বিভিন্ন দেশের নাগরিকরা। ইরানের পাশাপাশি আনন্দের বন্যা বয়ে যায় ইরাক, অবরুদ্ধ গাজা থেকে কানাডার টরন্টো পর্যন্ত।

শনিবার (১৩ এপ্রিল) গভীর রাতে হামলার খবর প্রকাশের পরপরই ইরানের রাস্তায় নেমে আসেন হাজার হাজার মানুষ। পতাকা হাতে নিয়ে রাজধানী তেহরানের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে জড়ো হন আনন্দ মিছিল নিয়ে। কেউ কেউ আসেন গাড়িতে করে। নেচে-গেয়ে তারা প্রকাশ করেন উল্লাস। 

এ সময়, ‘ডেথ টু ইসরায়েল’ স্লোগানে প্রকম্পিত হয় ইরানের রাজপথ। উল্লাস প্রকাশে আতশবাজিও ছোঁড়ে অনেকে। তেহরানে অবস্থিত যুক্তরাজ্যে দূতাবাস ও ফিলিস্তিন স্কয়ারে আনন্দ মিছিল করেন অনেক ইরানি। 

ব্রিটিশ দূতাবাসের সামনে বহু মানুষকে ইরানের পতাকা হাতে দেখা যায়। ফিলিস্তিনের বড় একটি পতাকা নিয়ে অনেকেই জড়ো হন তেহরানের ফিলিস্তিন স্কয়ারে। ইসরায়েলের পরাজয় না হওয়া পর্যন্ত এ হামলা চালিয়ে যাওয়ার দাবি জানান তারা। সংহতি জানান গাজার নিপীড়িত মানুষের প্রতি।  

আনন্দ-উল্লাসে যোগ দেওয়া এক ইরানি নাগরিক বলেন, যুদ্ধ মানুষকে খুশি করে, এমনটা কখনো দেখিনি। কিন্তু আজ রাতে ঘুম বাদ দিয়ে মানুষজন এখানে জড়ো হয়েছেন। তারা বুঝাতে চেয়েছেন এই হামলা আমাদের জন্য কতটা জরুরি। আরেকজন বলেন, ইসরায়েল ধ্বংস না হওয়া পর্যন্ত এই হামলা চলবে- এটাই আশা করি। 

গাজার নিরীহ মানুষদের প্রতি সংগতি জানিয়ে আরেক ইরানি বলেন, ইসরায়েলের শাস্তি হওয়া উচিত। তারা গাজায় যে নৃশংসতা চালিয়েছে তাতে চুপ করে বসে থাকা উচিত না।

ইরানের হামলার খবরে বাঁধভাঙা উল্লাসে ফেটে পড়েন ইরানের প্রতিবেশী রাষ্ট্র ইরাকের জনগণ। খুশিতে তারা রোববার সকালে ইরাকের রাজধানী বাগদাদের রাজপথে নেমে ইরান, ইরাক আর ফিলিস্তিনির পতাকা নিয়ে নেচে-গেয়ে আনন্দ-উল্লাস করতে থাকে। বাগদাদের পাশাপাশি কারবালাসহ বিভিন্ন শহরের রাজপথে নেমে ইরাকিদের এভাবে আনন্দ প্রকাশ করতে দেখা গেছে।   

একইভাবে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন কানাডার টরেন্টো শহরের বাসিন্দারা। তেমনি উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন ইসরাইল অধিকৃত জেরুজালেম শহরের আরব নাগরিকরা। 

ইসরায়েলে সরাসরি ইরানের হামলার পর সৌদি আরব, কাতার ও মিশর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। সৌদি আরব বলেছে, তারা আঞ্চলিক পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন। তবে হামলার জন্য ইরানের নিন্দা করেনি রিয়াদ। সৌদি আরবের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের বিবৃতিতে ইরান বা ইসরায়েলের নাম উল্লেখ না করেই সব পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে।

ইসরায়েলে হামলার ‘দ্ব্যর্থহীন নিন্দা’ করেছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। তিনি বিবৃতিতে বলেছেন, এই হামলা আবারো এই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতার প্রতি ইরানের শাসকদের অবজ্ঞা প্রদর্শন করে। আমরা এই হামলা থেকে নিজেকে এবং তার জনগণকে রক্ষা করার জন্য ইসরায়েলের অধিকারকে সমর্থন করি।  তিনি পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়। 

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এক বিবৃতিতে ইসরায়েলের ওপর ইরানের ‘বৃহৎ আকারের হামলার’ তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। গুতেরেস এই ‘শত্রুতা’ অবিলম্বে বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আমি বারবার জোর দিয়েছি যে এই অঞ্চল বা বিশ্বের কেউই আরেকটি যুদ্ধ সহ্য করতে পারে না। সূত্র: এপি ও ইরনা।

AS/SA
আরও পড়ুন