ঢাকা
মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

ইসরায়েলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী

রাফাহতে ‘মানবিক শহর’ নয়, পরিকল্পিত ‘শিবির’ তৈরি করা হবে

আপডেট : ১৪ জুলাই ২০২৫, ০৪:৪০ এএম

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী কাটজের ‘মানবিক শহর’ প্রকল্পকে কনসেনট্রেশন ক্যাম্প আখ্যা দিয়েছেন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী এহুদ ওলমার্ট। গার্ডিয়ানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে তা ফিলিস্তিনিদের ওপর জাতিগত নির্মূল অভিযানেরই অংশ হবে।

ওলমার্ট বলেন, ‘এটি একটি কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্প। আমি দুঃখিত, কিন্তু একবার যদি ফিলিস্তিনিদের সেখানে পাঠানো হয়, তাদের আর কোনো বিকল্প থাকবে না। গাজা ও পশ্চিম তীরে ইতিমধ্যেই ইসরায়েল যুদ্ধাপরাধ করছে এবং এই ধরনের শিবির নির্মাণ সেই সহিংসতাকে আরও ভয়াবহ রূপ দেবে।’

প্রতিরক্ষামন্ত্রী কাটজ সম্প্রতি দক্ষিণ গাজার ধ্বংসস্তূপের ওপর একটি ‘মানবিক শহর’ নির্মাণের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন, যেখানে প্রাথমিকভাবে ছয় লাখ এবং পরে আরও ফিলিস্তিনি জনগণকে জোর করে পাঠানো হবে।

এই পরিকল্পনা নিয়ে ওলমার্টের বক্তব্য, ‘এটা বাস্তবে নির্বাসনের ছক। লাখ লাখ মানুষের জন্য শিবির তৈরি করার চেষ্টা জাতিগত নির্মূল বলেই ব্যাখ্যা করা হবে।’

ইসরায়েলের বর্তমান ডানপন্থী সরকারের মন্ত্রিদের সরাসরি দায়ী করে ওলমার্ট বলেন, ‘এই চরমপন্থী রাজনীতিবিদরা ইসরায়েলের জন্য বাইরের শত্রুর চেয়েও বড় হুমকি।’ এছাড়া অধিকৃত পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপনকারীদের হামলায় ফিলিস্তিনি হত্যাকাণ্ডকে তিনি ‘যুদ্ধাপরাধ’ আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘এই নৃশংসতা ক্ষমার অযোগ্য।’

ওলমার্ট অভিযোগ করেন, এই সহিংসতার পেছনে সরকার, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং সামরিক বাহিনীর নীরব সমর্থন রয়েছে।  তাদের এসব তৎপরতা এত নিয়মিত, বিস্তৃত এবং নিষ্ঠুর – তা সম্ভব হচ্ছে সরকারের মৌন সমর্থনেই।’

সাক্ষাৎকারে ওলমার্ট জানান, ৭ অক্টোবর হামলার পর তিনি প্রথমদিকে হামাসবিরোধী অভিযানের পক্ষে ছিলেন। কিন্তু চলমান যুদ্ধকে ‘উন্মত্ত ধ্বংসযজ্ঞ’ বলে অভিহিত করে বলেন, এটি আত্মরক্ষার সীমা ছাড়িয়ে গেছে এবং এখন এটি যুদ্ধাপরাধের পর্যায়ে পৌঁছেছে।

তিনি বলেন, ‘এটা সংগঠিত নিষ্ঠুরতার ফল নয়, বরং উদাসীনতা ও বিপুল মাত্রায় অসামরিক মানুষের মৃত্যু সহ্য করার ইচ্ছার প্রকাশ।’

সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বিশ্বাস করেন, ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে দুই রাষ্ট্র সমাধান এখনও সম্ভব। তিনি সাবেক ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী নাসের আল-কিদওয়ার সঙ্গে কাজ করছেন একটি শান্তি চুক্তির জন্য। সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিককরণ বিনিময়ে গাজা যুদ্ধের অবসান ঘটানোর সম্ভাবনার কথাও তুলে ধরেন।

তবে ওলমার্ট হতাশা প্রকাশ করে বলেন, নেতানিয়াহু এমন সময় আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানার মুখে থেকেও ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দিচ্ছেন!যখন ইসরায়েলিরা আন্তর্জাতিক চাপ টের পাবে, তখনই অভ্যন্তরীণ মনোভাবের পরিবর্তন শুরু হবে।’

সূত্র/ দি গার্ডিয়ান

 

khk
আরও পড়ুন