ঢাকা
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

শেখ হাসিনা কেন ভারতে, তাকে ফেরত পাঠানো হোক: ওয়েইসি

আপডেট : ২২ আগস্ট ২০২৫, ০৮:৪২ পিএম

বাংলাভাষীদের বাংলাদেশে পাঠানোর প্রসঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছেন হায়দরাবাদের এমপি আসাদউদ্দিন ওয়েইসি।

ওয়েইসি বলেছেন, ‘অবৈধ বাংলাদেশি’ ফেরত পাঠাতে চাইলে আগে ভারতে থাকা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানো উচিত। যিনি ২০২৪ সালের আগস্টে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে ভারতে বসবাস করছেন।

বৃহস্পতিবার (২০ আগস্ট) ভারতের ইংরেজি দৈনিক দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের ‘আইডিয়া এক্সচেঞ্জ’ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে ভারত থেকে ‘অবৈধ বাংলাদেশিদের’ ফেরত পাঠানোর বিষয়ে আলোচনা করতে গিয়ে এমনই মন্তব্য করেছেন আসাদউদ্দিন ওয়েইসি।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ মোদি নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকারকে প্রশ্ন করে হায়দরাবাদের এই এমপি বলেন, আমরা কেন বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রীকে (শেখ হাসিনা) দেশে রাখছি? তাকে ফেরত পাঠানো হোক। তিনিও তো বাংলাদেশি, তাই না?

আসাদউদ্দিন ওয়েইসি বলেন, ঢাকায় যে ‘গণঅভ্যুত্থান’ ঘটে গেছে ভারতকে সেটি মেনে নিতে হবে এবং বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। ভারতে একজন বাংলাদেশিকে রাখা হয়েছে, যিনি বিবৃতি ও বক্তব্য দিয়ে সমস্যা তৈরি করছেন; অথচ মালদা ও মুর্শিদাবাদের দরিদ্র বাংলা ভাষাভাষী ভারতীয়দের পুনে থেকে কলকাতায় বিমানে পাঠিয়ে নো ম্যানস ল্যান্ডে ফেলে দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, ভারতে যিনিই বাংলা ভাষায় কথা বলবেন, তিনিই বাংলাদেশি হয়ে যাচ্ছেন। এ থেকে বোঝা যায়, এখানে বিদেশাতঙ্ক কাজ করছে। পুলিশ কীভাবে এসব মানুষকে আটক কেন্দ্রে রাখছে? এখানে সবাই যেন স্বঘোষিত আইনরক্ষক হয়ে উঠেছেন। 

ওয়েইসি এসময় সতর্ক করে দিয়ে বলেন, বিহারে চলমান ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) প্রক্রিয়ায় অনেক প্রকৃত নাগরিক, বিশেষ করে মুসলমানরা বাদ পড়তে পারেন। যদি এসআইআর হয় এবং প্রকৃত ভোটারদের নাম অন্তর্ভুক্ত না হয়, তাহলে তাদের নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠবে।

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনায় বলা আছে, যদি কোনও নির্বাচনী রেজিস্ট্রেশন অফিসার (ইআরও) কাউকে সন্দেহজনক মনে করেন বা তিনবার গিয়ে তাকে না পান, তাহলে তিনি নাগরিকত্ব আইন ১৯৫৫ অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানাতে পারেন। তার অভিযোগ, এ প্রক্রিয়ায় মুসলিম ভোটারদের নামই বেশি বাদ পড়ছে।

জম্মু-কাশ্মিরের পেহেলগামে গত ৭ মে সন্ত্রাসী হামলার পর বিজেপি নেতা বৈজয়ন্ত পান্ডার নেতৃত্বাধীন গঠিত সংসদীয় তদন্ত দলে আসাদউদ্দিন ওয়েইসিও ছিলেন। সেই ঘটনার বিষয়ে তিনি বলেন, ভারত সরকার আন্তর্জাতিক সাংবাদিকদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলার সুযোগ নষ্ট করেছে। আমাদের প্রতিনিধি দলকে ভালোভাবে গ্রহণ করা হলেও বিভিন্ন দেশ আমাদের জিজ্ঞাসা করেছে, কেন আমরা পাকিস্তানের সঙ্গে কথা বলি না। আমরা বলেছি, বহুবার কথা হয়েছে, কিন্তু কোনো ফল আসেনি। আমরা ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরতে এবং পাকিস্তানকে ভারত ধ্বংস করতে চাইছে, এমন প্রোপাগান্ডা ভাঙতে পেরেছি।

ভারতে সংখ্যালঘুদের নিয়ে সরকার ও বিরোধীদের নীরবতার সমালোচনা করেছেন ওয়েইসি। তিনি বলেন, ২০১৪ সালের পর থেকে তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলোও সংখ্যালঘু অধিকার ও অবিচারের বিরুদ্ধে কথা বলতে ভয় পাচ্ছে।

গাজা যুদ্ধ নিয়ে নীরব থাকার জন্য মোদি সরকারকে তীব্র সমালোচনা করেছেন ওয়েইসি। তিনি বলেন, ইসরায়েলের সমর্থনে নীরব থেকে সরকার ফিলিস্তিনে গণহত্যাকে সমর্থন করছে, যেখানে ৬৫ হাজারের বেশি মানুষ নিহত, যার মধ্যে ২০ হাজার শিশু।

NB/MMS
আরও পড়ুন