ফিলিপাইনের মধ্যাঞ্চলে টাইফুন কালমায়েগি আঘাত ও প্রবল বৃষ্টিপাত-বন্যায় অন্তত ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছেন। টাইফুনের তাণ্ডব থেকে বাঁচতে কয়েক লাখ মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সরকারি কর্মকর্তারা।
রোমে টাওয়ার ধসে রোমানিয়ান নাগরিকের মৃত্যুমঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) ভোরের দিকে দেশটির মধ্যাঞ্চলের উপকূলীয় এলাকায় টাইফুন কালমায়েগি আঘাত হানতে শুরু করে।
ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কালমায়েগি প্রভাবে দেশটির মধ্যাঞ্চলীয় সেবু দ্বীপের সব শহর প্লাবিত হয়েছে। কর্দমাক্ত বন্যার পানির তোড়ে ভেসে যাচ্ছে গাড়ি, ট্রাক এমনকি বিশাল আকারের কনটেইনারও।
আফগানিস্তানে ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ২৭, আহত ৫৩০সেবুর বেসামরিক প্রতিরক্ষা বিষয়ক উপ-প্রশাসক রাফায়েলিতো আলেজান্দ্রো টেলিফোনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, কেবল সেবুতেই এখন পর্যন্ত ২১ জনের প্রাণহানির তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। আমাদের কাছে আসা তথ্য অনুযায়ী, বেশিরভাগ মানুষই পানিতে ডুবে মারা গেছেন।
দেশটির সরকারি আবহাওয়া অফিসের বিশেষজ্ঞ চারম্যান ভারিলা জানিয়েছেন, কালমায়েগি আঘাত হানার আগের ২৪ ঘণ্টায় প্রাদেশিক রাজধানী সেবু সিটির আশপাশের এলাকায় ১৮৩ মিলিমিটার (সাত ইঞ্চি) বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যা মাসিক গড় ১৩১ মিলিমিটারের চেয়েও অনেক বেশি।
ভারতের তেলেঙ্গানায় বাস-ট্রাক সংঘর্ষে নিহত ১৯মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে প্রাদেশিক গভর্নর পামেলা বারিকুয়াত্রো বলেছেন, সেবুর পরিস্থিতি সত্যিই নজিরবিহীন। আমরা ভেবেছিলাম প্রবল বাতাসই বিপদ ডেকে আনবে। কিন্তু প্রকৃত ঝুঁকির কারণ হচ্ছে পানি। বন্যার পানিতে ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
স্থানীয় দুর্যোগ কর্মকর্তা এথেল মিনোজা বলেছেন, সেবু সিটিতে দুই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে এবং উদ্ধারকর্মীরা এখনও পানিবন্দি মানুষদের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন।
এছাড়া লেইতে প্রদেশে নিজ বাড়িতে পানিতে ডুবে এক বৃদ্ধ মারা গেছেন। আর বোহলে এলাকায় গাছচাপা পড়ে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। সেবু সিটির ২৮ বছর বয়সী বাসিন্দা ডন ডেল রোসারিও বলেন, ঝড়ের সময় তিনি অন্যদের সঙ্গে একটি ভবনের ওপরের তলায় আশ্রয় নিয়েছিলেন।
বিজ্ঞানীরা সতর্ক করে দিয়ে বলছেন, মানব সৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বজুড়েই ঘূর্ণিঝড় ও টাইফুন ক্রমান্বয়ে শক্তিশালী হয়ে উঠছে। উষ্ণ মহাসাগর টাইফুনকে দ্রুত তীব্র করে তুলছে। আর উষ্ণ বায়ুমণ্ডলের কারণে আর্দ্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় ভারী বৃষ্টিপাতও ঘনঘন দেখা দিচ্ছে।
সেবুর তথ্য কর্মকর্তা রন রামোস বলেন, গত সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে ৬ দশমিক ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যারা তাঁবুতে বাস করছিলেন, তাদের নিরাপত্তার স্বার্থে জোরপূর্বক সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মকর্তা আলেজান্দ্রো বলেন, ঝড়ের সম্ভাব্য গতিপথ থেকে প্রায় ৪ লাখ মানুষকে আগাম সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
সূত্র: এএফপি।
