ভারতে প্রতিরক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়ল। পাকিস্তান ও চীনের চ্যালেঞ্জের মুখে আধুনিকীকরণের জন্য ভারতের সামরিক বাহিনীকে ঢেলে সাজাতে একগুচ্ছ পদক্ষেপের প্রতিফল দেখা গেল কেন্দ্রীয় বাজেটে।
শনিবার (২ ফেব্রুয়ারি) ২০২৫-২৬ সালে প্রতিরক্ষায় ব্যয় হিসাবে ৬৮১২১০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। মোট বরাদ্দের মধ্যে ১৮০০০ কোটি টাকা খরচ হবে সশস্ত্র বাহিনীর মূলধন ব্যয়ের জন্য। যার মধ্যে মূলত নতুন অস্ত্র, বিমান, যুদ্ধজাহাজ এবং অন্য প্রয়োজনীয় সামরিক হার্ডওয়্যার ক্রয় করার ক্ষেত্রে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
২০২৫ সালের জন্য প্রতিরক্ষা বাজেট ৯.৫% বাড়িয়ে ৭৮ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করেছে ভারত। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন সরকারের সর্বশেষ বাজেটে প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয়ের পরিমাণ দেশের মোট জিডিপির ৮% এ উন্নীত হয়েছে, যা বৈশ্বিকভাবে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও চীনের পর চতুর্থ বৃহত্তম প্রতিরক্ষা ব্যয়কারী দেশ হিসেবে ভারতকে প্রতিষ্ঠিত করছে।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ এই বরাদ্দ বৃদ্ধিকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং বলেছেন যে এটি প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আত্মনির্ভরতা ও ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচিকে আরও গতি দেবে।
বিশ্লেষকদের মতে, প্রতিরক্ষা খাতে মূলধনী ব্যয় গত বছরের তুলনায় ৪.৬% বৃদ্ধি পেলেও, ভারতের সামরিক আধুনিকায়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য এটি আরও বেশি হওয়া প্রয়োজন, বিশেষ করে চীনের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতার প্রেক্ষাপটে।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, নতুন বাজেটে ৫.৬ বিলিয়ন ডলার নতুন যুদ্ধবিমান ক্রয়ের জন্য এবং ২.৮ বিলিয়ন ডলার নৌবহর শক্তিশালী করার জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিরক্ষা বাজেটের বড় অংশই অবসরভাতা ও বেতন প্রদানের জন্য ব্যয় হয়, যা বরাবরের মতোই গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে।
ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাবেক আর্থিক উপদেষ্টা অমিত কৌশিশ বলেছেন, অনেকদিন ধরেই এটি উদ্বেগের বিষয় যে প্রতিরক্ষা বাজেটের বিশাল অংশ পেনশন ও বেতন প্রদানে ব্যয় হয়, যা এখনও অব্যাহত রয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, ভারতের এই সামরিক সম্প্রসারণ কৌশল আঞ্চলিক উত্তেজনা আরও বাড়াতে পারে, বিশেষ করে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে বিদ্যমান ভূ-রাজনৈতিক প্রতিযোগিতার প্রেক্ষাপটে।
