ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ:

প্রতি ঘণ্টায় ব্যয় ১ বিলিয়ন ডলার, ভারতের ক্ষতি ৮৩ বিলিয়ন

আপডেট : ১১ মে ২০২৫, ০৪:২১ পিএম

৮৭ ঘণ্টা ধরে চলা ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধ শুধু আকাশে সীমাবদ্ধ ছিল না, তা কাঁপিয়ে দিয়েছে অর্থনীতি, বিনিয়োগ।  শেয়ারবাজারে ধস, বিমান চলাচলে স্থবিরতা, সরবরাহ শৃঙ্খলার ভেঙে পড়া এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীদের পিছু হটে যাওয়ায় প্রতি ঘণ্টায় এক বিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হয়েছে। 

রোববার (১১ মে) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে দ্য নিউজ ডটকম ডট পিকে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৭ মে রাত ১টা ৫ মিনিটে ভারতীয় বিমানবাহিনী ‘অপারেশন সিদুঁর’ নামের একটি সামরিক অভিযান শুরু করে, যা ২৩ মিনিট স্থায়ী ছিল।  এতে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে নয়টি বেসামরিক স্থাপনাকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়।  মূল হামলায় ব্যবহৃত হয় ফ্রান্সের তৈরি রাফাল যুদ্ধবিমান, যা দূরপাল্লার ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ও নির্ভুল গ্লাইড বোমা দ্বারা সজ্জিত ছিল, যেগুলোর লক্ষ্যমাত্রা ছিল প্রায় ৫৫০ কিলোমিটার।

৭ থেকে ১০ মে পর্যন্ত ভারত পাকিস্তানের আকাশ প্রতিরক্ষা কাঠামো পর্যালোচনার জন্য কিছু স্বচালিত অস্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে রাডার এবং ভূমি থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিক্রিয়া পরীক্ষা করে। এতে ব্যবহৃত হয় ভারত ও ইসরাইলের যৌথভাবে তৈরি ড্রোন ও অন্যান্য আকাশযান, যা লক্ষ্যবস্তু শনাক্তকরণ ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার দুর্বলতা খুঁজে বের করার জন্য পরিচালিত হয়।

এর জবাবে পাকিস্তান তার বিমানবাহিনী, স্থলবাহিনী ও ক্ষেপণাস্ত্র ইউনিটসহ একত্রে প্রতিক্রিয়া জানায়। পাকিস্তান বিমানবাহিনী তাদের প্রধান বহুমুখী যুদ্ধবিমান হিসেবে চীনের তৈরি জে-১০সি নামের বিমান ব্যবহার করে, যা দূরপাল্লার আকাশে আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র ও উন্নত বৈদ্যুতিক প্রতিরোধ ব্যবস্থা দ্বারা সজ্জিত ছিল।

৭ মে রাত ১টা ৫ মিনিট থেকে ১টা ৩০ মিনিটের মধ্যে পাকিস্তান বিমানবাহিনী তিনটি ফরাসি  রাফাল যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করতে সক্ষম হয়—যা এই ধরনের বিমানের প্রথম যুদ্ধক্ষেত্রে পতনের ঘটনা।  পাকিস্তান জানায়, তারা মোট ১২টি ভারতীয় ড্রোন ধ্বংস করেছে, যার মধ্যে ছিল বৈদ্যুতিক প্রতিরোধ, বিমানবিধ্বংসী কামান ও স্বল্পপাল্লার ভূমি থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রের সম্মিলিত ব্যবহার।

এই ৮৭ ঘণ্টা ২৫ মিনিটের সংঘাতে ভারতের প্রধান শেয়ারবাজার সূচক নিফটি ও সেনসেক্স একত্রে প্রায় ৮২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূলধন হারায়। উত্তর ভারতের আকাশপথ বন্ধ থাকার কারণে প্রতিদিন প্রায় ৮০ লাখ ডলারের বাণিজ্যিক বিমান চলাচলের ক্ষতি হয়। জনপ্রিয় ক্রিকেট টুর্নামেন্ট স্থগিত হওয়ায় সম্প্রচার, টিকিট বিক্রি ও বিজ্ঞাপন থেকে প্রায় ৫ কোটি ডলারের ক্ষতি হয়।  

সামরিক খাতে প্রায় ১০ কোটি ডলার ও যুদ্ধবিমান ধ্বংসের ফলে প্রায় ৪০ কোটি ডলারের ক্ষতি হয়েছে। পণ্য পরিবহন ও বাণিজ্যিক লেনদেনে বিঘ্ন ঘটায় প্রায় ২০০ কোটি ডলারের ক্ষতি হয়েছে। সবমিলিয়ে ভারতের মোট ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় আনুমানিক ৮৩০০ কোটি ডলার।

অন্যদিকে পাকিস্তানের শেয়ারবাজারের প্রধান সূচক প্রায় ৪ দশমিক ১ শতাংশ কমে গিয়ে মোট ২৫০ কোটি ডলারের মূলধন হারিয়েছে। পাকিস্তানের ক্রিকেট লিগ স্থগিত হওয়ায় সম্প্রচার ও বিজ্ঞাপন থেকে প্রায় ১ কোটি ডলারের ক্ষতি হয়। আকাশপথ বন্ধে বাণিজ্যিক বিমান চলাচলে প্রায় ২ কোটি ডলারের ক্ষতি হয়েছে।  

প্রতিদিনের সামরিক ব্যয় ছিল প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ ডলার। ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র পরিচালনার জন্য আনুমানিক ৩০ কোটি ডলার ব্যয় হয়েছে। বিদেশি বিনিয়োগের আস্থা কিছুটা কমে গেলেও তা পরিমাপযোগ্য নয়। মোট ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে আনুমানিক ৪০০ কোটি ডলার।
সেই হিসাবে, এই সংঘাতে পাকিস্তানের চেয়ে ভারতের ক্ষতি হয়েছে প্রায় ২২ গুণ বেশি। 

এই ৮৭ ঘণ্টার যুদ্ধ কেবল আকাশেই লড়া হয়নি- তা আঘাত হেনেছে স্টক মার্কেট, অর্থনীতি ও আস্থা-তে। প্রতি ঘণ্টায় এক বিলিয়ন ডলার ক্ষতির হিসেব সামনে এনেছে আধুনিক যুদ্ধের ভয়াবহ মূল্য। যুদ্ধের প্রকৃত মাপকাঠি এখন আর শুধু যুদ্ধবিমান, ক্ষেপণাস্ত্র বা ড্রোন নয়- এখন তা নির্ধারিত হয় শেয়ারবাজারে পতন, মুদ্রার অবমূল্যায়ন, সরবরাহ ব্যবস্থার ভেঙে পড়া, বিমান চলাচল বন্ধ ও বিদেশি বিনিয়োগ হারানোর ওপর।

FJ