ঢাকা
মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

ভারতের হামলায় পাকিস্তানের ১১ সেনা ও ৪০ বেসামরিক নিহত

আপডেট : ১৩ মে ২০২৫, ০৫:৫৯ পিএম

দুই পরমাণু শক্তিধর প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সাম্প্রতিক সামরিক উত্তেজনায় পাকিস্তানের ১১ সেনাসদস্য ও ৪০ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গণসংযোগ শাখা—আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৭৮ জন সেনাসদস্য ও ১২১ জন সাধারণ নাগরিক।

মঙ্গলবার (১৩ মে) প্রকাশিত এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে পাকিস্তান আইএসপিআর জানিয়েছে, ভারতের চালানো ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামক ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় এই প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। যদিও সাময়িক যুদ্ধবিরতি হয়েছে, তবুও দুই দেশের ভেতর উত্তেজনা ও পারস্পরিক অবিশ্বাস এখনো প্রবলভাবে বিরাজ করছে।

গত ২২ এপ্রিল ভারতের জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর সংঘটিত এক বন্দুকধারীর হামলায় বেশ কয়েকজন নিহত হন। ভারত সরকার এ হামলার জন্য সরাসরি পাকিস্তানকে দায়ী করে এবং এর জবাবে ৬ মে দিবাগত রাতে পাকিস্তানের ভূখণ্ডে পরিচালনা করে ‘অপারেশন সিঁদুর’।

পাকিস্তান বলছে, ভারতের হামলায় বেসামরিক এলাকা লক্ষ্যবস্তু ছিল। এতে নিহত ৪০ জনের মধ্যে ৭ জন নারী ও ১৫ জন শিশু রয়েছে। আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও বিমানবাহিনীর নিহত ১১ সদস্যের পরিচয়ও প্রকাশ করেছে আইএসপিআর।

সেনাবাহিনীর শহীদ সদস্যরা হলেন: নায়েক আবদুল রেহমান, ল্যান্সনায়েক দিলাওয়ার খান, ল্যান্সনায়েক ইকরামুল্লাহ, নায়েক ওয়াকার খালিদ, সিপাহি মুহাম্মদ আদিল আকবর, সিপাহি নিসার।

বিমানবাহিনীর শহীদ সদস্যরা হলেন: স্কোয়াড্রন লিডার উসমান ইউসুফ, চিফ টেকনিশিয়ান আওরঙ্গজেব, সিনিয়র টেকনিশিয়ান নাজিব, করপোরাল টেকনিশিয়ান ফারুক, সিনিয়র টেকনিশিয়ান মুবাশির।

আইএসপিআরের মতে, এই শহীদদের আত্মত্যাগ তাঁদের সাহস, দেশপ্রেম ও নিষ্ঠার চিরন্তন প্রতীক হয়ে থাকবে। তাঁদের রক্তদান দেশের ভূখণ্ডগত অখণ্ডতা ও স্বাধীনতার বর্ম হয়ে থাকবে।

আইএসপিআর আরও জানায়, ভারতীয় আগ্রাসনের জবাবে পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনী ‘অপারেশন বুনইয়ান উন মারসুস’ পরিচালনা করে। এই প্রতিশোধমূলক অভিযানে সুনির্দিষ্ট ও কৌশলগতভাবে শত্রু লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানা হয়। এটি পাকিস্তানের সামরিক সক্ষমতা ও প্রতিরোধ শক্তির বাস্তব উদাহরণ হিসেবে উপস্থাপিত হয়।

পরিস্থিতির অবনতি ঠেকাতে আন্তর্জাতিক মহল বিশেষত যুক্তরাষ্ট্র দ্রুত মধ্যস্থতায় নামে। অবশেষে গত শনিবার (১০ মে) যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেন যে ভারত ও পাকিস্তান যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। যদিও এই যুদ্ধবিরতি সাময়িকভাবে সংঘর্ষ ঠেকাতে সক্ষম হয়েছে, তবে ভূরাজনৈতিক বাস্তবতা ও সীমান্ত উত্তেজনা বরাবরের মতোই বিপজ্জনক রূপে ফিরে আসতে পারে বলে আশঙ্কা বিশ্লেষকদের।

Raj/AHA
আরও পড়ুন