এই সপ্তাহের কবিতা

আপডেট : ১৪ জুন ২০২৫, ১১:২২ এএম

একদিন স্বাধীন হবে ফিলিস্তিন ।। রকিবুল হাসান
আমার জন্ম কোথায়—পৃথিবী কোথায়—কতদূর!
পৃথিবীর মানুষেরা দেখতে কেমন
আদৌ কি মানুষ আছে এই পৃথিবীতে

আমি-তুমি ফিলিস্তিনি—আমাকে-তোমাকে
দিনরাত হত্যা করা হচ্ছে—
খণ্ডবিখণ্ড করছে
বুক জুড়ে অগ্নিকুণ্ড—পোড়া গন্ধ-বিভীষিকাময়

মানুষের কি হাত থাকে? শরীর-পা থাকে? বুক থাকে?
ক্ষুধা ও যন্ত্রণা থাকে? মৃত্যু ও আর্তনাদ থাকে?
আমি ফিলিস্তিনি—কোন গ্রহে জন্ম আমাদের
ফিলিস্তিন ও পৃথিবী অনেক দূরের কোনো গ্রহ?

আমরা হয়তো আর খাবারের জন্য দাঁড়াবো না—
পানির জন্যও নয়।
রক্তাক্ত চোখের জলে তাকাবো না করুণ আর্তিতে!
তবুও শেষ হবে না— ফিলিস্তিন।
নতুন রক্তের লালে লাল হবে ফিলিস্তিন
পৃথিবী, তোমার বুকে একদিন স্বাধীনতা পাবে
রক্তলাল ফিলিস্তিন।

তখন দেখবে
আমরা এক গ্রহের—মানুষ ছিলাম—
শুধু আর আমাদের সন্তানেরা ফিরবে না ঘরে।

বরফ চোখের খোঁপ ।। জামসেদ ওয়াজেদ  
নিয়ত দশক আসে নতুনের ফোটে ফুলঝুরি
তিরিশে জীবনানন্দ চল্লিশের প্রিয় ফররুখ
কবিতা বাতাসে মিশে তৈরী হয় পাখি উড়া সুখ
আনাচে কানাচে নড়ে পদ্যময় প্রস্ফুটিত কুঁড়ি

পঞ্চাশের মাহমুদ ফজল কাদেরী রাহমান
আলোর জোয়ারে ভেসে যারা ছোঁয় কঠিন আগামী
চর্যার নায়কগণ ইতোমধ্যে হয়ে ওঠে দামি
তাদের এ ঘাসপথে যে কবিতা হয় বহমান

মেঘের পাহাড় কেটে যারা আনে বৃষ্টির সকাল
তাদের দর্শন তত্ত্বে পৃথিবীর বিস্তৃত সভ্যতা
ঈশান নৈর্ঋত ভেঙে চূর্ণ করা যত নীরবতা
বরফ চোখের খোঁপে বেঁচে থাকে কবি দীর্ঘকাল

দশকে বিশ্বাসী নই অদশকে থেকে যেতে চাই
ফুলের সুবাস মেখে মহাকালে বাজাবো সানাই

অনলাইন আড্ডাতে ।। চন্দনকৃষ্ণ পাল 
তোমরা অনুষ্ঠান বললেও, আমি আড্ডাই বলি। 
এই অনলাইন আড্ডা ভালোই তো লাগে- 
কিছুই জানিনা, শুধু স্মৃতি থেকে বলে যাই 
জীবনের টুকরো টাকরা গল্প শুধুই 
কোন জ্ঞানগর্ভ বক্তৃতা দিতে পারি না তো 
তারপরও ডেকে নেন তিনি, 
কেউ কি শুনেন? কতো ভিউ হয় 
কখনও দেখার তাগিদ আসে না তো মনে-
তার কাছ থেকে ছোট্ট মেসেজ আসে 
ঠিক পৌনে নয়টায়, আপনাকে চাই, 
কিছু কথা, কবিতা আর ছড়ায় 
নিজেকে উপস্থাপন করবেন নিজের মতোই....।

কিই বা আছে যা উপস্থাপন যোগ্য আমার? 
তাঁকে তো বুঝানো যায় না কখনো-
খেলাচ্ছলেই বসে যাই 
অন করি ফোনের ক্যামেরা 
লিংক ছুঁয়ে ঢুকে যাই অন্য জগতে,তাদের অনুষ্ঠানে, 
আমার আড্ডায়। 

আমি আড্ডাই বলি। আড্ডা বলতেই ভালো লাগে।

ঘ্রাণটুকু যায় রয়ে ।। তুহিন তৌহিদ
আমাদের পথ দুই দিকে যায় বেঁকে
বনের ভেতরে কেমন উদাসী একা
হয়ে চলে যায় অগনিত স্মৃতি রেখে;
কখনো কি আর হবে আমাদের দেখা

কখনো কি আর হবে আমাদের দেখা
দক্ষিণ থেকে বাতাস আছড়ে পড়ে
পাতাদের গায়ে, দূর দিগন্ত রেখা
ধরে এক ঝাঁক পাখি যায় দূরে ওড়ে

কখনো কি আর হবে আমাদের দেখা?
রোদ হয়ে গেছি জানালার কাচ ছুঁয়ে;
সব মিলনই বিরহের অপঘাতে
শেষ হয়ে যায়, ঘ্রাণটুকু যায় রয়ে

আমাদের পথ হয়ে যায় দুই তারা
দুই দিকে বেঁকে চলে যায় দিশেহারা