ঢাকা
সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

৬ দফা দাবিতে ভিসি বরাবর গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের স্মারকলিপি 

আপডেট : ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:১৭ এএম

সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে (গবি) সম্প্রতি সময়ে সংঘটিত র‍্যাগিং, ধর্ষণসহ বিভিন্ন অরাজকতা নিরসনে ভাইস চ্যান্সেলর (ভিসি) বরাবর ছয় দফা দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বিভাগের শিক্ষকরা।

রোববার (৭ ডিসেম্বর) দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে উপাচার্য অধ্যাপক ড মো. আবুল হোসেনের নিকট ডীনস্ কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. জহিরুল ইসলাম খান এ স্মারকলিপি প্রদান করেন। এসময় সকল বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এরআগে সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বিভাগের শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে একাডেমিক ভবনে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করে ডীনস্ কমিটি। এ সভায় সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘটিত বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়। মতবিনিময় সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তই স্মারকলিপি হিসেবে প্রদান করা হয়।

স্মারকলিপিতে উল্লেখিত দাবিসমূহ হলো- অতি সম্প্রতি আইন বিভাগের ছাত্র শের আলীকে র‍্যাগিং ও শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছি। সেই সাথে তার আশু সুস্থ্যতা কামনা করছি এবং উক্ত ঘটনায় গঠিত কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক গৃহীত শাস্তিমূলক ব্যবস্থায় সন্তোষ প্রকাশ করছি; আইন বিভাগের একজন ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। উক্ত ঘটনায় ধর্ষিতার প্রতি উক্ত ফোরাম সহমর্মিতা প্রকাশ করছে এবং এ ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা এবং কঠোরতম শাস্তি প্রত্যাশা করছি। সেই সাথে কোন শিক্ষক, কর্মকর্তা যদি এ ঘটনায় কোনভাবে দায়ী থাকেন তাহলে তা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত বিধি মোতাবেক নিবিড় তদন্তের মধ্য দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দাবি জানাচ্ছি।

এছাড়া স্মারকলিপিতে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে লক্ষ করা যাচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য, উপাচার্য, সকল স্তরের শিক্ষক ও কর্মকর্তাসহ অনেকের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নামে বেনামে বিভিন্ন ধরণের অপমানজনক মন্তব্য ও অশ্রাব্য ভাষা ব্যবহার করে পোস্ট দেয়া হচ্ছে। যাতে করে প্রতিষ্ঠানসহ সকলের সম্মানহানি হচ্ছে। এ ধরণের বিষয়কে প্রতিহত করতে বিশ্ববিদ্যালয়ে যথাযথ বিশেষজ্ঞ নিয়ে একটি সাইবার সেল গঠন করতে হবে এবং আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে; বিগত ০৪/১২/২০২৫ খ্রিষ্টাব্দে গত কয়েকদিনের লাগাতার বিশৃঙ্খল পরিস্থতি পুঁজি করে কতিপয় শিক্ষার্থী উপাচার্যের সভাকক্ষে বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্যসহ শিক্ষক এবং কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অশ্রাব্য ভাষা ব্যবহার করে মন্তব্য ও কুরুচিপূর্ণ আচরন প্রদর্শন করেছে। সে সকল শিক্ষার্থীকে চিহ্নিত করে তদন্ত কমিটি গঠন ও আগামী ০৩(তিন) কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন সাপেক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি মোতাবেক সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করার জন্য দাবি জানানো হচ্ছে।

স্মারকলিপিতে কর্মবিরতির ঘোষণাও দেওয়া হয়। এতে বলা হয়, শিক্ষার্থী কর্তৃক শিক্ষকদের অপমান ও হেয় প্রতিপন্ন করার প্রতিবাদে আগামী ০৮/১২/২০২৫ খ্রিষ্টাব্দে সকল শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মবিরতি পালন করবেন; একাডেমিক কার্যক্রমের বাইরে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে প্রশাসনিক বিভিন্ন কাজে যে সকল শিক্ষকবৃন্দ সম্পৃক্ত থাকেন তাদেরকে শিক্ষার্থী কর্তৃক হেয় প্রতিপন্ন করার নজির রয়েছে। ভবিষ্যতে এ ধরণের আচরণ অব্যাহত থাকলে শিক্ষকরা অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকবেন।

এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন'স কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো: জহিরুল ইসলাম খান বলেন, সম্প্রতি বিভিন্ন ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। কিছু নামধারী শিক্ষার্থী ও বহিরাগতরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হেয় প্রতিপন্ন মন্তব্য, উদ্ভতপূর্ণ আচরণ, গালাগালি এমনকি লাথি মেরে শিক্ষকদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের করে দিতে চেয়েছে এর প্রতিবাদে উপাচার্যের কাছে গিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, 'আমরা একটি শিক্ষক ফোরাম গঠন করতে যাচ্ছি , এই শিক্ষক ফোরামে সকল অনুষদের ডীন উপদেষ্টা হিসেবে থাকবে এবং প্রতি বিভাগের ২ জন শিক্ষক কার্যকরী সদস্য থাকবেন বাকী সবাই সদস্য।'

এ সময় বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় প্রধান ও শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

HN