ঢাকা
সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

রানা ফ্লাওয়ার্স

বাংলাদেশের ৯৭ শতাংশ শিশু টাইফয়েড টিকার আওতায়

আপডেট : ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭:২৮ এএম

বাংলাদেশের ৯৭ শতাংশ শিশু টাইফয়েড টিকা পেয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘ শিশু তহবিল ইউনিসেফের বাংলাদেশ প্রতিনিধি রানা ফ্লাওয়ার্স। রোববার (৭ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে রানা ফ্লাওয়ার্সকে উদ্ধৃতি দিয়ে এ তথ্য জানায় ইউনিসেফ।

বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশে টাইফয়েড প্রতিরোধে এক ঐতিহাসিক মাইলফলক অর্জিত হয়েছে। প্রথমবারের মতো টাইফয়েড কনজুগেট ভ্যাকসিন (টিসিভি) ক্যাম্পেইন-২০২৫ এ দেশের ৯৭ শতাংশের বেশি শিশুকে টিকার আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছে সরকার। এতে ৪ কোটি ২৫ লাখেরও বেশি শিশু সুরক্ষিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইউনিসেফ বাংলাদেশের প্রতিনিধি রানা ফ্লাওয়ার্স। তার ভাষায়, এই অর্জন প্রমাণ করেছে যে, বাংলাদেশ শিশুদের জীবনরক্ষাকারী সুরক্ষা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

রানা ফ্লাওয়ার্স বলেন, জীবনরক্ষাকারী টিসিভি ক্যাম্পেইন চালু করা বিশ্বের মাত্র আটটি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ একটি। দেশের শিশুরা প্রতিদিন দূষিত পানির ঝুঁকির মধ্যে থাকায় এই টিকা কার্যক্রম শিশুস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ইউনিসেফ ও বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) পরিচালিত সর্বশেষ মাল্টিপল ইন্ডিকেটর ক্লাস্টার সার্ভে—এমআইসিএস-এর তথ্য অনুযায়ী, দেশে মাত্র ৩৯ দশমিক ৩ শতাংশ মানুষ নিরাপদ পানির ব্যবস্থাপনার আওতায় আছে। পানির বিভিন্ন উৎসের প্রায় অর্ধেক এবং পরিবারের ব্যবহৃত পানির ৮৫ শতাংশেই ই. কোলাই দূষণ পাওয়া গেছে, যা লাখো শিশুর জন্য টাইফয়েডে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়।

রানা ফ্লাওয়ার্স বলেন, পরিষ্কার পানি না পাওয়া পর্যন্ত শিশুদের সুরক্ষার সবচেয়ে শক্তিশালী উপায়গুলোর একটি হলো টিসিভি টিকা।

ইউনিসেফ জানায়, পুরো ক্যাম্পেইনে ৫ কোটি ৪০ লাখ ডোজ টিকা সরবরাহ, নতুন কোল্ড রুম স্থাপন, কোল্ড চেইন ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং ভ্যাক্সইপিআই ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সঠিক সময়ে শিশুর কাছে টিকা পৌঁছানো—এসব কার্যক্রমে তারা সহযোগিতা করেছে। স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ ও সক্ষমতা বাড়াতেও প্রতিষ্ঠানটি সহায়তা দিয়েছে।

এই ক্যাম্পেইনের অন্যতম শক্তি ছিল যোগাযোগ ও কমিউনিটি এনগেজমেন্ট। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সঙ্গে অংশীদারত্ব, টিভি-রেডিও-বিজ্ঞাপন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শিশুবান্ধব বার্তা প্রচারের মাধ্যমে ১২ কোটির বেশি মানুষের কাছে পৌঁছানো গেছে।

দুর্গম উপকূল, জলাভূমি, পাহাড়ি এলাকা, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সম্প্রদায়, চা-বাগান, কওমি মাদরাসা, ভ্রাম্যমাণ পরিবার ও যৌনকর্মীদের সন্তানসহ সব ধরনের শিশুদের কাছে টিকা পৌঁছানো হয়েছে। রোহিঙ্গা শিবিরেও ৪ লাখ ২৪ হাজার শিশুকে টিকার আওতায় আনা হয়েছে।

বাংলাদেশ সরকার, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, ইপিআই কর্মসূচি, গ্যাভি, ডব্লিউএইচও ও গণমাধ্যমের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে রানা ফ্লাওয়ার্স বলেন, যখন গুজব ছড়ানোর ঝুঁকি থাকে, তখন সঠিক তথ্য প্রচারে গণমাধ্যমের ভূমিকা পরিবারগুলোকে আস্থা দিয়েছে।

HN
সর্বশেষপঠিত