আবারও নতুন করে সার কেলেংকারির আশংকা বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন বা বিএডিসিতে। হাজার কোটি টাকার সার এক বছরেও বিএডিসিকে বুঝিয়ে দিতে পারেনি তিনটি পরিবহন ঠিকাদার কোম্পানি। অভিযোগ উঠেছে, এসব অনিয়ম আর দুর্নীতির নৈপথ্যে রয়েছে স্বয়ং বিএডিসির সাবেক প্রভাবশালী দুই কর্মকর্তাও। অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, সরকারিভাবে এক বছর আগে ননইউরিয়া সার আমদানি করে বিএডিসি। বন্দর থেকে এসব সার বিএডিসির গুদামে পরিবহনের দায়িত্ব পায় কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। নিয়ম আছে, ৬০ দিনের মধ্যেই এসব সার গুদামে পৌছানোর।
কিন্তু ৬০ দিনতো নয়-ই , এমনকি ১২ মাসেও এসব সার পুরোপুরি বিএডিসিকে বুঝিয়ে দিতে পারেনি তিনটি প্রতিষ্ঠান। বংঙ্গ ট্রেডার্স, প্যাসিফিক কনজ্যুমার গুডস ও স্বদেশ শিপিং। যাদের কাছে এখনও পাওনা প্রায় পৌনে ২ লাখ মেট্রিক টন সার। এরই মধ্যে বিএডিসি বংঙ্গ ট্রেডার্সকে চিঠিও দিয়েছে সার বুঝিয়ে দেয়ার। তাগাদা দিচ্ছে প্যাসিফিক এবং স্বদেশ ট্রেডার্সকেও। প্রশ্ন হচ্ছে সার বুঝিয়ে দিতে দেরি হচ্ছে কেন? আদৌ কী সার আছে? এ বিষয়ে গত ১৮ নভেম্বর ২৪ তারিখে বৈষম্য ও দুর্নীতি বিরোধী কর্মচারীদের পক্ষে মো. মোখলেছুর রহমানের একটি অভিযোগে বিস্তারিত পর্যালোচনা করে, এই প্রতিবেদকের অনুসন্ধান পাওয়া যায় যে, বুঝিয়ে না দেয়া এসব সার থাকছে খোলা আকাশের নিচে। রোদে পুড়ছে ভিজেছে বৃষ্টিতেও। তাই প্রশ্ন গুণগত মান নিয়েও। নিয়ম আছে, লট অনুযায়ী মাল বুঝিয়ে দেয়ার। অভিযোগ আছে পরিবহন কোম্পানিগুলো এক লটের সার আরেক লটের সারের সাথে মিশিয়ে বুঝিয়ে দিচ্ছে। এভাবে নয়ছয় করে ঘটছে আত্মসাতের ঘটনাও। যদি লট অনুযায়ী সার বুঝে নিতো তাহলে এসব কেলেংকারি হতো না।
রবি মৌসুম হচ্ছে নভেম্বরের ১৫ তারিখ থেকে ডিসেম্বরের ২০ তারিখ পর্যন্ত। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নর্থবেঙ্গলে কোন রকম সার নেই। এমতাবস্থায় উচ্চমূল্যেও সার পাচ্ছেন না দেশের প্রান্তিক কৃষক। সার সংকটের সমাধান না হলে বা সময় মতো সার না পাওয়া গেলে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়বে দেশের কৃষিখাত। এ অবস্থা চলমান থাকলে সামনের বোরো মৌসুমে সার সংকটের কারণে দেশের কৃষিজাত পণ্য উৎপাদন ব্যাহত হবে এবং চরম খাদ্যসংকটের মুখে পড়বে দেশ। এ সমস্যা কাটিয়ে ওঠা বর্তমান সরকারের জন্য চরম চ্যালেঞ্জের। অথচ যা কিনা খুব স্বাভাবিকভাবেই সমাধান হতো বা করা যেতো, যদি না সার ক্রয় সংক্রান্ত টেন্ডার নিয়ে বারবার ছিনিমিনি খেলা করে কালক্ষেপণ না হতো। নিন্মে টেন্ডার কল ও বাতিলের বিবরণ।
২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের বেসরকারি খাতে দরপ্রস্তাব সংক্রান্ত: কতিপয় দুষ্ট সিন্ডিকেট কর্তৃ কসৃষ্ট সংকট মোকাবেলায় দেশের স্বনামধন্য ঠিকাদারসমূহ বিপদের আশংকায় আর টেন্ডারে অংশ নিচ্ছেন না। ফলে সার সংকটে পড়তে যাচ্ছে দেশ।
বিএডিসির সাবেক এই দুই কর্মকর্তার অনিয়ম দুর্নীতির দায় কে নেবে? আর কেনই বা লট অনুযাযী সময় মতো সার বুঝিয়ে দেয়া হয় না? বিষয়টি জানতে প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান চেয়ারম্যানের দপ্তরে গেলে সামনাসামনি কথা বলেননি তিনি। তবে জানিয়েছেন, এসব নিয়ে তদন্ত হচ্ছে। প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেবে মন্ত্রণালয়।
