ঢাকা
মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

বাংলাদেশি পর্যটক কমে যাওয়ায় চিন্তিত পশ্চিমবঙ্গের ব্যবসায়ীরা

‘বাংলাদেশিদের সংখ্যা কমে যাওয়ায় দেশটির পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশের শিলিগুড়িতে ব্যবসায়ীদের মাঝে হাহাকার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।’

আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৩১ পিএম

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশ থেকে ভারতে যাওয়া পর্যটকের সংখ্যা ব্যাপকভাবে কমে গিয়েছে। বাংলাদেশিদের সংখ্যা কমে যাওয়ায় দেশটির পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশের শিলিগুড়িতে ব্যবসায়ীদের মাঝে হাহাকার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। খবর আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন’র। 

এদিকে যথেষ্ট যাত্রী না থাকায় বিগত কয়েক সপ্তাহ শিলিগুড়ি ও ঢাকার মধ্যে বাস চলাচল করেনি। যাত্রী না থাকায় বাসের টিকিট কাউন্টারগুলিও ফাঁকা। পাশাপাশি চিকিৎসা, পড়াশোনা এবং জরুরি কারণ ছাড়া বাংলাদেশের নাগরিকদের ভিসা দিচ্ছে না নয়াদিল্লি। এই পরিস্থিতিতে বাস চালিয়ে কোনো লাভ হবে না বলে জানিয়েছেন ভারত-বাংলাদেশ বাস পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা।

পর্যটনের পাশাপাশি চিকিৎসা, পড়াশোনার জন্য বহু মানুষ বাংলাদেশ থেকে ভারত যেতেন। ঢাকা-সহ আশপাশের এলাকার মানুষ মূলত চ্যাংরাবান্ধা হয়ে ভারতে ঢোকেন। এ কথা মাথায় রেখে একটি বেসরকারি পরিবহণ সংস্থা তাদের এক জোড়া বাস শিলিগুড়ি ও ঢাকার মধ্যে চালাত। আগস্ট মাসের আগে বাসে যাত্রীদের ঠাসা ভিড় থাকলেও বর্তমানে সেখানে সপ্তাহখানেক অপেক্ষা করেও যাত্রী মিলছে না বলে দাবি ওই পরিবহণ সংস্থার।

বাসমালিকেরা জানিয়েছেন, বর্তমানে শিলিগুড়ি থেকে ঢাকা যাওয়ার ক্ষেত্রে ওপার বাংলার মানুষ ছোট গাড়ি ভাড়া করে চ্যাংরাবান্ধা পর্যন্ত যাচ্ছেন। অন্য দিকে, আগে থেকে বাংলাদেশে গাড়ির বন্দোবস্ত করে রাখছেন। সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে ঢুকে তার পর সেই গাড়িতেই নিজেদের গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা দিচ্ছেন তারা।

শিলিগুড়ির একটি হোটেলের ব্যবস্থাপক বিকাশ দাস বলেন, তারা সকলেই চান দু’দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক হোক। তিনি বলেন, ‘আমরা চাই দুই দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসুক; যাতে বাংলাদেশ থেকে আগের মতো অতিথিরা এখানে আসেন।’

ইন্দো-বাংলাদেশ বাস অপারেটর শিবপ্রসাদ ঘোষ বলেন, ‘আগে ঢাকা থেকে পর্যটকে পূর্ণ থাকতো বাস। কিন্তু এবার আমরা একজন যাত্রীও পাইনি।’

তিনি বলেন, ‘আমি পরিবহনের কাজ করি। আমরা শিলিগুড়ি থেকে বাংলাদেশের ঢাকা পর্যন্ত যাই। আমরা এখন কাজ করতে পারছি না। তারা যদি ভিসা না দেয়, তাহলে মানুষ এখানে আসবে কীভাবে? বাসগুলো এখন কাজ করছে না, লোকসান গুনছে। আমরা চাই এই সমস্যা সমাধানে দুই দেশ একযোগে কাজ করুক। তারা সংলাপ ও কূটনীতিতে ফিরে এলে সবার জন্যই মঙ্গলজনক হবে।’

অন্যদিকে, শিলিগুড়ির হাসমি চক, মহাত্মা গান্ধী চক, মাল্লাগুড়ি, বিধান মার্কেট এলাকার একাধিক হোটেলে বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন কাজে আসা মানুষজন থাকতেন। বাংলাদেশি নাগরিকদের যাতায়াত কমায় হোটেল ব্যবসাতেও তার প্রভাব পড়েছে। 

গ্রেটার শিলিগুড়ি হোটেলিয়ার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক উজ্জ্বল ঘোষ এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের নাগরিকদের শিলিগুড়ি আসা একেবারে কমে গিয়েছে। অনেক বাংলাদেশি পর্যটকের ‘ট্যুরিস্ট ভিসা’র মেয়াদ প্রায় শেষের পথে। শিক্ষা ও চিকিৎসার জন্যও বহু মানুষ ভারতে আসেন। কিন্তু সেই সংখ্যা তলানিতে ঠেকায় নিশ্চিত ভাবেই আমাদের আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে, তা জানি না।’

 

NC/WA
আরও পড়ুন