ঢাকা
মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

কোনো ‘ডেভিল’ যেন পালাতে না পারে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

উপদেষ্টা বলেন, আপনারা নিশ্চয়ই অবহিত আছেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হলো জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। 

আপডেট : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০২:৩৪ পিএম

‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ সফল করতে হবে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও বিচারবিভাগের সমন্বয়ে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। যেন জামিন পেয়ে আবার যেন অপরাধে না জড়ায়।

মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর রাজারবাগে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটরিয়ামে দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মানবাধিকার ও পরিবেশের ওপর গুরুত্বসহ আইন প্রয়োগবিষয়ক কর্মশালায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনারা নিশ্চয়ই অবহিত আছেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হলো জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। ফ্যাসিবাদ ও তাদের দোসর, দুষ্কৃতকারী, নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী ও সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা। ফ্যাসিবাদ বিদায় নিয়েছে। কিন্তু তাদের দোসররা দেশে-বিদেশে সরকারের বিরুদ্ধে নানাবিধ ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে।’

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ফ্যাসিবাদী ও তাদের দোসররা এ দেশের জনগণের সম্পদ অন্যায়ভাবে লুটপাট করে অঢেল অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন। ফ্যাসিবাদীরা গণমাধ্যমগুলো দখল ও নিয়ন্ত্রণ করেছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলোকে শায়েস্তা করেছে। অনুগত পুঁজিবাদী শ্রেণি তৈরি করে সম্পদ লুণ্ঠন করেছে। সিভিল সার্ভিস ও নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর কর্তৃত্ব স্থাপন করেছে। আদালতের স্বাধীনতা খর্ব করেছে। এককথায় ফ্যাসিস্ট সরকার পুরো রাষ্ট্রযন্ত্রকে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য অন্যায়ভাবে ব্যবহার করেছে।

তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদীরা এখন বিগত ১৬ বছরের অর্জিত অবৈধ সম্পদ ব্যবহার করে অপশক্তির সম্পৃক্ততায় নৈরাজ্য সৃষ্টির মাধ্যমে নিজেদের অবস্থার জানান দিচ্ছে। জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত সন্ত্রাসী, নরহত্যায় জড়িত বিশেষ হেলমেট বাহিনী, ফৌজদারি অপরাধে সম্পৃক্ত ফ্যাসিস্ট ও তাদের দোসররা, অর্থ পাচারকারী, লুণ্ঠনকারী, ষড়যন্ত্রকারী, দুষ্কৃতকারী, রাষ্ট্রদ্রোহী, দুদকের মামলায় আসামিদের আইনের আওতায় আনার জন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে।

জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, পুলিশ, র‍্যাব, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা আইনি প্রক্রিয়ায় এসব অপরাধীদের উল্লেখযোগ্য সংখ্যককে গ্রেপ্তার করেছে। এ প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। সারা দেশে অস্থিরতা সৃষ্টির অপতৎপরতাকারী ও তাদের সহযোগীদের আইনের আওতায় আনার লক্ষ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আওতায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত বাহিনীগুলোর সমন্বয়ে ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ অভিযান শুরু হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সারা দেশের অভিযান-সংশ্লিষ্ট সামগ্রিক কার্যক্রম তদারকি করা হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন পুলিশ সদর দপ্তরে স্থাপিত ‘জয়েন্ট অপারেশন সেন্টারের’ মাধ্যমে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’-এর সার্বিক কার্যক্রম সমন্বয় করা হবে।

মহানগর এলাকায় মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার ও জেলা পর্যায়ে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এই অভিযান পরিচালনায় সমন্বয় করবেন বলে উল্লেখ করেন জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, সিএমএম আদালত, এমএম আদালত, সিজেএম আদালত, জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারকেরা, জেলা ম্যাজিস্ট্রেটরা, স্পেশাল আদালতের বিচারকেরা, আদালতে সরকার পক্ষের আইনজীবীরা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা, গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা এই অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য নিয়োজিত রয়েছেন।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সরকার ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় ৮ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পদায়ন করেছে, অপরাধীদের বিরুদ্ধে সামারি ট্রায়ালের (সংক্ষিপ্ত বিচার) জন্য। আপনারা (পুলিশ) দক্ষ ও প্রশিক্ষিত সচেতন নাগরিক। আপনাদের দেশের জনগণ, সরকার ও নিজ নিজ দায়িত্বের প্রতি জবাবদিহি, দায়বদ্ধতা ও কমিটমেন্ট রয়েছে। সুশাসন প্রতিষ্ঠায় আপনাদের অতন্দ্র প্রহরীর ন্যায় ভূমিকা পালন করা দরকার। কোনো অপরাধীকে রাস্তায়, বাজারে, মাঠে, ময়দানে, রাজপথে দেখতে চাই না। তাদের বিচার নিশ্চিত করতে চাই।

SN
আরও পড়ুন