ঢাকা
মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

সৌদির মরুভূমিতে উটের সঙ্গে একা বসবাস নারীর

আপডেট : ২০ মে ২০২৫, ০১:৩০ পিএম

সৌদি আরবের সুউচ্চ আকাশচুম্বী ভবন এবং আধুনিক নগর জীবনের কোলাহল থেকে অনেক দূরে মরুভূমিতে তিনি ভিন্ন এক ধরণের পরিপূর্ণতা খুঁজে পেয়েছেন এক নারী। সৌদির উত্তর সীমান্তের মরুভূমিতে একদল উট নিয়ে একাকী জীবনযাপন করছেন সেই নারী। দেশটির ওই নারীর নাম রুকিয়া আল-রুওয়াইলি। তিনি মৃত স্বামীর স্মৃতি রক্ষায় তার রেখে যাওয়া উটগুলো নিয়ে মরুভূমিতে বেশ সুখেই বসবাস করছেন।

সৌদি টেলিভিশন এমবিসির সাক্ষাতে ৭০ বছর বয়সী ওই বিধবা নারীর বলেন, আমার স্বামীর মৃত্যুর পর ২০ বছরেরও বেশি সময় কেটে গেছে। আমি আমার স্বামীর সঙ্গে এখানে ২০ বছর কাটিয়েছি। আল্লাহতায়ালা আমাদেরকে কোনো সন্তান দান করেননি। তার পরও আমি এই পরিস্থিতিতে কৃতজ্ঞ।

মরুভূমিতে উটের সঙ্গে রুকিয়া আল-রুওয়াইলি, ছবি: সংগৃহীত

রুকিয়া আল-রুওয়াইলি বলেন, এই উটগুলো এখন আমার পরিবার এবং সন্তান। তারা আমার কণ্ঠস্বর শোনে এবং সাড়া দেয়। যেমন একটি শিশু তার মায়ের কাছে ছুটে আসে, তেমনি এই উটগুলোও আমাকে দেখার সঙ্গে সঙ্গে আমার কাছে ছুটে আসে এবং আমার প্রতি তাদের ভালোবাসা প্রকাশ করে।

যে সমাজে বয়স্কদের প্রায়শই দূরে রাখা হয়, সেখানে রুকিয়ার গল্প অনেক সৌদির কাছে অনুরণিত হয়েছে, যারা তার মধ্যে বিশ্বাস, ধৈর্য এবং জীবনের ভাগ্যের প্রতি সন্তুষ্টির এক বিরল প্রতিমূর্তি দেখে। তিনি শহুরে জীবনের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত আরামের জন্য আকুল নন, এমনকি তিনি আধুনিক প্রযুক্তির প্রতিও আকৃষ্ট নন। তার আত্মা মরুভূমির, যেখানে তিনি সূর্যের সঙ্গে উদিত হন এবং তার পশুপালের সঙ্গে চলাফেরা করেন।

সৌদি এই নারী বলেন, আমি কিং আবদুল আজিজ উট উৎসবের কথা শুনেছি, যেখানে উট নিলামে ৫০ থেকে ৮০ লাখ টাকায় বিক্রি হয়। আমি প্রার্থনা করি যে, মহান আল্লাহ যেন আমাকে এমন একটি উট দেন যাতে আমি তা বিক্রি করে ৮০ লাখ টাকা পেতে পারি।

মরুভূমির জীবন কেমন, এ প্রশ্নে তিনি হেসে বললেন, ‘অর্ধেক হতাশ, অর্ধেক আশাবাদী।’ রুকিয়া আল-রুওয়াইলি মরুভূমিতে নিজের পিকআপ ট্রাক চালান এবং সারাদিন উটের যত্ন নেন।

শহুরে জীবন সম্পর্কে তিনি বলেন, এই মরুভূমিতে আমার স্বামীর স্মৃতি আমার মনে আছে। আমরা জীবনের সুন্দর দিনগুলো এখানে কাটিয়েছি। আমি এই স্মৃতি থেকে খুব বেশি দূরে যেতে চাই না। এই মরুভূমি আমার বাড়ি আর এই উটগুলো আমার সন্তান।

রুকিয়ার জীবন কষ্টমুক্ত নয়। স্বয়ংসম্পূর্ণতা থাকা সত্ত্বেও, একটি জরুরি প্রয়োজন রয়ে গেছে- পানি। এ জন্য তিনি একজন দয়ালু প্রতিবেশীর ওপর নির্ভর করেন, যে তার পানির ট্যাঙ্কটি পূরণ করে দেন। তাই মরুভূমির জীবনে তিনি নিজের মালিকানাধীন একটি পানির ট্যাঙ্কের স্বপ্ন দেখেন।

 

RF/SN
আরও পড়ুন