ইসলামী শরিয়তের দৃষ্টিতে বিসমিল্লাহ না বলে জবাই করা পশু-পাখির মাংস হালাল নয়, যদি ইচ্ছাকৃতভাবে আল্লাহর নাম না নিয়ে জবাই করা হয়।
আল-কুরআনে বলা হয়েছে: ‘তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত জন্তু, রক্ত, শুকরের মাংস, যার উপর আল্লাহর নাম উচ্চারণ করা হয়নি।’ (সূরা আল-আনআম, আয়াত ১২১)
তিনটি পরিস্থিতি:
১. ইচ্ছাকৃতভাবে আল্লাহর নাম না নেওয়া: হারাম, এমন মাংস খাওয়া যাবে না।
২. ভুলে বিসমিল্লাহ বলা হয়নি: অনেক আলেমের মতে, এ ক্ষেত্রে তা মাফযোগ্য এবং মাংস হালাল হবে। হানাফি মাজহাবে এ নিয়ে কিছু ভিন্ন মতও আছে, তাই সতর্কতা উত্তম।
৩. অমুসলিম/কাফের দ্বারা জবাই: কিতাবি (ইহুদি-খ্রিস্টান) হলে কিছু আলেম হালাল বলেন, তবে তারা আল্লাহর নাম না নিলে বা কুফরি মতে জবাই করলে তা হারাম।
আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) দুটি সাদা কালো রংয়ের ভেড়া দ্বারা কুরবানী করেছেন। দেখলাম, তিনি ভেড়াদুটির ঘাড়ের পাশে পা রেখে ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার’ বলে নিজের হাতেই জবাই করলেন। (সহিহ বুখারি: ৫৫৫৮)
পশু-পাখি জবাইয়ের সময় মাথা আলাদা করার বিধান
পশু-পাখি জবাইয়ের সময় ইচ্ছাকৃত মাথা আলাদা করে ফেলা মাকরুহে তাহরিমি বা হারামের কাছাকাছি অপছন্দনীয় কাজ। রাদ্দুল মুহতার কিতাবে বলা হয়েছে, খাবারের জন্য প্রস্তুত করার সময় পশু-পাখিকে অনর্থক কষ্ট দেওয়া মাকরুহ যেমন মাথা আলাদা করে ফেলা বা রক্ত প্রবাহিত হয়ে নিস্তেজ হওয়ার আগেই চামড়া ছাড়ানো শুরু করা ইত্যাদি। অনিচ্ছাকৃত মাথা আলাদা হয়ে গেলে তো কিছু করার নেই। আর জবাইয়ের সময় ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃতভাবে পশু-পাখির মাথা আলাদা হয়ে গেলে ওই পশু-পাখির মাংস খেতে কোনো সমস্যা নেই, ওই পশু-পাখির খাওয়া মাকরুহ বা হারাম হবে না।
অতএব ইচ্ছাকৃতভাবে বিসমিল্লাহ না বললে সে জবাইয়ের মাংস খাওয়া যাবে না। এজন্য হালাল মাংস নিশ্চিত করতে জবাইয়ের পদ্ধতি জানা জরুরি।
