বাংলাদেশ গণ অধিকার পরিষদের শীর্ষ নেতা নুরুল হক নুর বলেছেন, মাইটিভি' দখলের জন্য কিছু ব্যক্তি পরস্পর যোগসাজশে প্রশাসনের ওপর চাপ সৃষ্টি করে তৌহিদ আফ্রিদি ও তার বাবাকে গ্রেপ্তার করিয়েছে।
সোমবার (২৬ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে করা এক পোস্টে এ কথঅ বলেন তিনি। খবর সংযোগের পাঠকদের জন্য ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের ফেসবুক পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো।
নুর তার পোস্টে লিখেছেন, 'জনকণ্ঠ' দখলের ন্যায় 'মাইটিভি' দখলেও সুপরিকল্পিতভাবে কিছু ব্যক্তি পরস্পর যোগসাজশে মাইটিভির চেয়ারম্যান নাসির উদ্দীন সাথী ও তার ছেলে তৌহিদ আফ্রিদিকে গ্রেপ্তার করিয়েছে। এতোদিন তারা নগদ ৫ কোটি কিংবা শেয়ার লিখে নেয়ার দেনদরবার করেছে, সমঝোতায় মিলেনি, তাই ডিজিট্যাল ও ফিজিক্যাল মবের মাধ্যমে প্রশাসনের ওপর চাপ সৃষ্টি করে তৌহিদ আফ্রিদি ও তার বাবাকে গ্রেপ্তার করিয়েছে।
আচ্ছা, এই যে তৌহিদ আফ্রিদি ও তার বাবাকে যাত্রাবাড়ী থানার ' ছাত্র হ*ত্যা ' মামলায় আসামি করে ১ বছর পর গ্রেপ্তার করানো হয়েছে। মামলার বাদী কি জানে এই মামলায় কাকে কাকে আসামি করা হয়েছে? তৌহিদ আফ্রিদি কিংবা তার বাবা ' ছাত্র হ*ত্যা 'করেছে এই মামলা প্রমাণ করতে পারবে? তাহলে কেন এই নাটক?

আফ্রিদি যদি লীগের হয়ে কিছু করে থাকে সেজন্য তাকে সুনির্দিষ্টভাবে সেসব অভিযোগে মামলা দেয়া যেত। সে ধরনের মামলা না করে কেন তাকে ও তার বাবাকে যাত্রাবাড়ীর ' ছাত্র হ*ত্যা 'র মামলায় ভিত্তিহীনভাবে আসামি করে ১ বছর পর গ্রেপ্তার করানো হলো?
এই যে হঠাৎ বেপ্লবের চেতনায় দখলদার হয়ে ওঠা ' ফিজিক্যাল ও ডিজিট্যাল মব 'সৃষ্টিকারী দুর্বৃত্তদের চাপে প্রশাসন মাঝে মাঝে কিছু বিবেচনাহীন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। এর প্রভাব কি প্রশাসন বা আমরা উপলব্ধি করতে পারতেছি?
স্বাভাবিকভাবেই সরাসরি রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত না থাকার ফলে এ দু'জনের গ্রেপ্তার দেশী-বিদেশী মানবাধিকার সংগঠনসহ অনেকক্ষেত্রে রেফারেন্স হবে যে, এভাবে যারা ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট নয়, গণমাধ্যমের মালিক/ব্যবসায়ী/সেলিব্রিটিরাও মবের শিকার হচ্ছে। তাদেরকেও ঢালাওভাবে আসামি করে প্রশাসন অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার হয়রানি, মামলা বাণিজ্য ও মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে। ফলে প্রকৃত অপরাধীদেরও বেলাতেও রেফারেন্স হিসেবে দেশী-বিদেশী মানবাধিকার সংগঠন ও অন্যান্য সংস্থা এগুলোকে উদাহরণ হিসেবে তাদের রিপোর্টে তুলে ধরবে (এ বিষয়টি হয়তো সাধারণ মানুষ অনেকেই বুঝবে না,তাদের জন্য বলা; মাঝে মাঝে নিশ্চয়ই দেখেছেন যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, কানাডাসহ পশ্চিমা দেশসমূহ লীগ আমলে বাংলাদেশে বিরোধী দলের ওপর দমন-পীড়ন নিয়ে রিপোর্ট দিতো) ব্যবহার করবে।
এসব ইস্যুতে সরকারের ওপর দেশী-বিদেশী চাপ বাড়বে, ফলে স্বাভাবিকভাবেই দেখা যাবে দেশী-বিদেশী চাপে অনেকক্ষেত্রে সরকার/আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রকৃত অপরাধীদের বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ গ্রহণে পিছপা হতে বাধ্য হবে। কার্যত এসব ভুল পদক্ষেপ প্রকারান্তে ফ্যাসিবাদের ফেরারই রাস্তা তৈরিতেই সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
'জনকণ্ঠ ' দখলের ন্যায় ' মাইটিভি ' দখলেও যারা প্রশাসনের ওপর চাপ সৃষ্টি করে এগুলো করাচ্ছে তাদের মুখোস উন্মোচন করে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হোক।
এদিকে নুরুল হক নুরের এমন পোস্টের পর মন্তব্যের ঘরে সৃষ্টি হয়েছে নানা আলোচনা সমলোচনা।
