সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ একটি সংবাদ হলো নেপালের সরকার পতনের খবর। বিষয়টি কম-বেশি সবাই অবগত। তবে সেটা নিয়ে আমার লেখা না। লেখাটি এই পতনে বিশেষ ভূমিকা রাখা গুরুত্বপূর্ণ একটা শব্দ নিয়ে। নেপালের এই আন্দোলনে একটি শব্দ বিশেষ ভাবে উচ্চারিত হয়েছে, সেটা হলো নেপো কিড (Nepo Kid)।
সম্প্রতি নেপালের তরুণ সমাজ ও রাজনীতিবিদদের সন্তানদের বিলাসী জীবনযাপন এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল এই "নেপো কিডস" শব্দটি। এই শব্দটির বিশেষ অর্থ একটু খোলাসা করি সবার জন্য।
নেপো" অংশটি এসেছে "নেপোটিজম" বা স্বজনপ্রীতি থেকে, এবং "কিড" বলতে সন্তান বোঝানো হয়। অর্থাৎ নেপো কিড (Nepo Kid) বলতে এমন ব্যক্তি বা ব্যক্তিদের বোঝানো হয় যারা তাদের পিতামাতা বা পরিবারের খ্যাতি, ক্ষমতা বা প্রভাব ব্যবহার করে কোনো নির্দিষ্ট পেশায় বা ক্ষেত্রে সুবিধা লাভ করে, ব্যবসা, শিক্ষা, রাজনীতি কিংবা বিনোদন জগতে। এই শব্দটি প্রায়ই একটি অপমানজনক বা সমালোচনামূলক অর্থে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। বিশেষত যখন মনে করা হয় যে এই সুবিধাগুলো তাদের মেধা বা যোগ্যতার চেয়ে পরিবারের পরিচিতির কারণে তারা পেয়েছে। তারা তাদের পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমে প্রাপ্ত সংযোগ বা প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে দুর্নীতির মাধ্যমে তাদের পেশাগত জীবনে সুবিধা লাভ করে।
সম্প্রতি নেপালের তরুণ সমাজ ও রাজনীতিবিদদের সন্তানদের বিলাসী জীবনযাপন এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল এই "নেপো কিডস" শব্দটি। তারা ইনস্টাগ্রাম, ফেসবুক ও অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে তাদের বিলাসী জীবন যাপনের ছবি ও ভিডিও পোস্ট করে মানুষের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি করতো। যা ধীরে ধীরে মানুষের মনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে শুরু করেছিলো। আর তারই অগ্নি বহি:প্রকাশ এই আন্দোলন।
বাংলাদেশেও নেপো কিডস এর সংখ্যা অনেক বেশি ফলে দেশ আজ বৈষম্য এর শিকার। নেপো কিডস এর বিরুদ্ধে আমাদের সবাইকে সোচ্চার থাকতে হবে। আর কোনো বৈষম্য নয়, চাই সহমর্মিতার বাংলাদেশ।
লেখক: লে.ক.(অব.) মহসিন আলী খান, পিএসসি, রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক।
