ঢাকা
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

গাজা দখলের লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী

আপডেট : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:০৩ এএম

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর ভয়াবহ হামলা থামছে না। আন্তর্জাতিক মহলের চাপ ও মানবিক উদ্বেগ উপেক্ষা করেই ইসরায়েল গাজা দখলের লক্ষ্য নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। এ অভিযানে গাজার সাধারণ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়ছেন, জোরপূর্বক ঠেলে দেওয়া হচ্ছে উপকূলীয় এলাকায়।

ইসরায়েলের সেনাবাহিনী গাজা সিটির উত্তর-পশ্চিম ও দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ট্যাংক ও পদাতিক সেনাদের নিয়ে আক্রমণ জোরদার করেছে। ফলে সাধারণ মানুষের জীবন বাঁচাতে পালিয়ে যাওয়ার কোনো উপায় থাকছে না। সামরিক কৌশল অনুযায়ী শহর থেকে জনগণকে জোর করে উপকূলের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। এতে জনবসতিপূর্ণ এলাকায় তীব্র মানবিক সংকট তৈরি হয়েছে।

ইসরায়েলি সেনা মুখপাত্র নাদাভ শোশানি জানিয়েছেন, পদাতিক, ট্যাংক, আর্টিলারি এবং বিমানবাহিনী একযোগে হামলায় অংশ নিচ্ছে। লক্ষ্য হামাসকে দুর্বল করা। গাজায় এখন এমন এক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে যেখানে মানুষ পালানোর পথেও নিরাপদ নয়।

এছাড়া গাজায় রিমোট-চালিত বিস্ফোরকভর্তি রোবট দিয়ে এলাকা ধ্বংসের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়রা বলছেন, দিনের পর দিন ড্রোন ও যুদ্ধবিমানের বোমা হামলার পাশাপাশি এই রোবট ব্যবহার করা হচ্ছে। শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) অন্তত ২৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানায় স্থানীয় সূত্র।

জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সংস্থা (OCHA) জানায়, গাজা শহরের শেষ জীবনীশক্তি এখন ভেঙে পড়েছে। ইসরায়েল পরিকল্পিতভাবে ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ রেখেছে, বন্ধ রাখা হয়েছে উত্তরের জিকিম ক্রসিং, আরোপ করা হয়েছে খাদ্যদ্রব্য প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা।

এমন ভয়াবহ মানবিক সংকটের মধ্যেও জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ষষ্ঠবারের মতো ভেটো দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। নিউ ইয়র্কে স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠিত ভোটে ১৫ সদস্যের মধ্যে ১৪টি দেশ যুদ্ধবিরতির পক্ষে ভোট দিলেও, যুক্তরাষ্ট্রের একক ভেটোতেই প্রস্তাবটি বাতিল হয়ে যায়।

প্রস্তাবটিতে গাজায় অবরোধ তুলে নেওয়া, যুদ্ধবিরতির আহ্বান এবং হামাসসহ অন্যান্য গোষ্ঠীর হাতে থাকা জিম্মিদের নিঃশর্ত মুক্তির আহ্বান জানানো হয়েছিল।

ডেনমার্কের জাতিসংঘ প্রতিনিধি ক্রিস্টিনা মার্কাস লাসেন বলেন, গাজায় দুর্ভিক্ষ এখন বাস্তবতা। এটি অনুমান নয়, এটি ঘটছে। মানবিক বিপর্যয় এখন চরমে।

অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের উপ-প্রতিনিধি মরগান অর্টাগাস হামাসকে দোষারোপ করে বলেন, যুদ্ধ শুরু করেছে হামাস। ইসরায়েল যুদ্ধ শেষ করার প্রস্তাব মেনে নিয়েছে, কিন্তু হামাস তাতে রাজি নয়। জিম্মিদের ছেড়ে দিয়ে অস্ত্র নামালেই যুদ্ধ শেষ হতে পারে।

এই মুহূর্তে গাজার পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য বড় এক মানবিক ও নৈতিক পরীক্ষায় পরিণত হয়েছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো যুদ্ধবিরতি ও মানবিক সহায়তার পথ খুলে দেওয়ার দাবি জানালেও, কূটনৈতিক অচলাবস্থা পরিস্থিতিকে দিন দিন আরও জটিল করে তুলছে।

DR
আরও পড়ুন