গাজীপুরের শ্রীপুরে রাস রিসোর্টে এক মডেলকে (২৪) ধর্ষণের ঘটনায় দুই নারীসহ ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় কোনো ধরনের বৈধ কাগজপত্র না থাকায় ২ লাখ টাকা জরিমানাসহ রিসোর্টটি সিলগালা করা হয়।
শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের উত্তর পেলাইদ গ্রামের ওই রিসোর্টে অভিযান চালায় ভ্রাম্যমাণ আদালত। স্থানীয়দের অভিযোগ, বিভিন্ন স্থান থেকে নারীদের এখানে এনে অসামাজিক কাজ করানো হয়।
ভুক্তভোগী নারী একজন আর্টিস্ট ও মডেল। তিনি চট্টগ্রামের বাসিন্দা। বর্তমানে রাজধানীর মীরপুর এলাকায় বসবাস করেন। গত বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) শ্রীপুর থানায় নাটকের পরিচালক নাসির (৩৫), তার সহযোগী বাবর (৩২) ও অজ্ঞাত (৫৫) একজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন তিনি।
ভুক্তভোগী নারী একজন আর্টিস্ট ও মডেল। তিনি চট্টগ্রামের বাসিন্দা। বর্তমানে রাজধানীর মীরপুর এলাকায় বসবাস করেন। গত বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) শ্রীপুর থানায় নাটকের পরিচালক নাসির (৩৫), তার সহযোগী বাবর (৩২) ও অজ্ঞাত (৫৫) একজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন তিনি।

মামলার আবেদনে ভুক্তভোগী উল্লেখ করেন, গত ২১ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত ২টার দিকে পরিচালক নাসির নাটকের শুটিং আছে বলে আমাকে মীরপুর এলাকার বাসা থেকে নিয়ে আসে। তারা শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের উত্তর পেলাইদ গ্রামের ‘রাস রিসোর্টে’ এনে আমাকে একটি কক্ষে আটক রাখে। পরে পরিচালক, তার সহযোগী ও অজ্ঞাত এক আসামি ওই কক্ষে আমাকে হত্যার হুমকি দিয়ে জোরপূর্বক পালাক্রমে ধর্ষণ করে।
পরদিন ২২ সেপ্টেম্বর বিকেল ৩টার দিকে আসামিরা ভিকটিমের ব্যবহৃত ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা মূল্যের আইফোন রেখে খুন-জখমের হুমকি দিয়ে তাকে রিসোর্ট থেকে বের করে দেয়। পরে তাদের ভয়ে আমি মীরপুরের ভাড়া বাসায় গিয়ে চিকিৎসা নিই। সুস্থ হয়ে গত বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুই জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত একজনকে আসামি করে শ্রীপুর থানায় মামলা দায়ের করি।
মামলার বাদী ভুক্তভোগী নারী দুপুরে গণমাধ্যমকে বলেন, আমাকে একটি নাটকে অভিনয় করার কথা বলে রিসোর্টে ডেকে এনে আটক করে রাখে আসামিরা। পরে কাঁচের মদের বোতল ভেঙ্গে আমাকে আঘাত করে এবং হত্যার ভয় দেখায়।
মামলার বাদী ভুক্তভোগী নারী দুপুরে গণমাধ্যমকে বলেন, আমাকে একটি নাটকে অভিনয় করার কথা বলে রিসোর্টে ডেকে এনে আটক করে রাখে আসামিরা। পরে কাঁচের মদের বোতল ভেঙ্গে আমাকে আঘাত করে এবং হত্যার ভয় দেখায়।
একপর্যায়ে তারা আমাকে শারিরীক নির্যাতনের পর জোরপূর্বক পালাক্রমে ধর্ষণ করে। ইতোমধ্যে আমার স্বাস্থ্য পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। প্রশাসনের কাছে আমি ন্যায়বিচার চাই।

ঘটনাটিতে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হলে শ্রীপুর উপজেলা প্রশাসন শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর থেকে বিকেলে পর্যন্ত ‘রাস রিসোর্টে’ অভিযান চালিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে। অভিযানে রিসোর্টের ১০৩ নং কক্ষ থেকে ২ জন পুরুষ পালিয়ে গেলে অসামাজিক কাজের জন্য যশোর থেকে নিয়ে আসা জন্য দুই নারীসহ ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করে। তাদের মধ্যে ১৬ জন রিসোর্টের কর্মকর্তা ও কর্মচারী।
ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকারী শ্রীপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইদুল ইসলাম জানান, হোটেল-রেস্তোরাঁর আইন অনুযায়ী রিসোর্টির কোন নিবন্ধন ছিল না। রিসোর্টটি পরিচালনার জন্য কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় বৈধ কোন ধরনের কাগজপত্র দেখাতে না পারায় নগদ ২ লাখ টাকা জরিমানা এবং রিসোর্টটি সাময়িকভাবে বন্ধ (সিলগালা) করা হয়েছে।
অভিযুক্ত নাসির নিজেকে নাটকের পরিচালক পরিচয় দিয়ে বলেন, সেখানে আমরা ঘুরতে গিয়েছিলাম। অন্য কোন ঘটনা ঘটেনি। আমাকে ব্ল্যাকমেইল করার জন্য মিথ্যা অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহম্মদ আব্দুল বারিক বলেন, অভিযানে ১০৩ নং কক্ষ থেকে বিদেশী মদসহ অসামাজিক কাজে ব্যবহারের বিভিন্ন আলামাত উদ্ধার করা হয়। আলামত উদ্ধারে নিশ্চিত হওয়া গেছে রিসোর্টটিতে অসামাজিক কার্যকলাপ হয়।

গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে আজ গাজীপুর আদালতে পাঠানো হবে। পালিয়ে যাওয়া আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযানে নেমেছে পুলিশ।
