রাজনীতি, কৌশল আর ক্ষমতার অঙ্কের ভেতরেই সাধারণত আলোচনায় থাকেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তবে সম্প্রতি তার এক ভিন্ন রূপ চোখে পড়ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে; রাজনীতির কঠিন বাস্তবতার বাইরে এক নরম, মানবিক মুখ। কখনো পোষা বিড়ালের সঙ্গে খেলা করছেন, কখনো প্রাণী কল্যাণবিষয়ক অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন।
বিবিসি বাংলায় দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিষয়টি খোলাসা করলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। প্রসঙ্গটি তুলতেই হেসে হেসে প্রথমেই তারেক রহমান বললেন, ‘বিড়ালটি আসলে আমার মেয়ের। কিন্তু এখন ও সবারই হয়ে গেছে। আমরা সবাই ওকে আদর করি।’
তারেক রহমান জানালেন, বিড়াল বা প্রাণীর প্রতি তার এই ভালোবাসা হঠাৎ কোনো আবেগ নয়। এর শিকড়ে ছড়িয়ে আছে শৈশবে। তিনি বললেন, ‘আমি ও আমার ভাই যখন ছোট ছিলাম, তখন আমাদের একটি ছোট কুকুর ছিল। আম্মা হাঁস-মুরগি, ছাগল পোষতেন। ময়না, কবুতরসহ বিভিন্ন রকম পাখি ছিল বাসায়। ময়নাটা বরিশাল থেকে এনেছিলাম, ও বরিশালের ভাষায় কথাও বলতো।
তারেক রহমানের কথা শুনে বোঝা যায়, প্রাণীদের প্রতি স্নেহ তার পরিবারের এক অদৃশ্য ঐতিহ্য। রাজনীতির আলোচনায় যার কোনো স্থান নেই, কিন্তু জীবনের ভেতরে যার গভীর শিকড় রয়ে গেছে। তার মতে, ধর্মীয় ও মানবিক উভয় দৃষ্টিকোণ থেকেই প্রাণীর প্রতি ভালোবাসা গুরুত্বপূর্ণ।

প্রাণীপ্রেম নিয়ে তারেক রহমানের বক্তব্য সোজাসাপ্টা। তার ভাষ্য, আল্লাহ আমাদের সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে বানিয়েছেন। তার সৃষ্টি, প্রাণী, প্রকৃতি সবকিছুর প্রতিই যত্ন নেওয়া আমাদের দায়িত্ব। প্রকৃতি যদি না থাকে, তার ভারসাম্য যদি নষ্ট হয়, তাহলে মানুষের জীবনও টিকে থাকতে পারবে না।
আবহাওয়া-জলবায়ুর খবরও ভালো রাখেন তারেক রহমান। ইংল্যান্ডে দীর্ঘ ১৭ বছর বসবাসের অভিজ্ঞতায় তিনিও লক্ষ্য করেছেন আবহাওয়ার পরিবর্তন। জানালেন, ওয়েদার আগের মতো নেই। পরিবর্তন হচ্ছে ধীরে ধীরে। এরপরই বাংলাদেশের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, একটি দেশের অন্তত ২৫ শতাংশ এলাকা গ্রিন থাকা দরকার। আমাদের দেশে এখন সেটি প্রায় ১২ শতাংশের মতো। এটা ভয়ংকর।

প্রাণীপ্রেম থেকে শুরু হয়ে কথোপকথন শেষ হয় প্রকৃতি রক্ষার দায়বদ্ধতায়। নিজেদের স্বার্থে সবাইকে প্রকৃতিপ্রেমী হওয়ার তাগিদ দিয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি কীভাবে বনায়ন বাড়ানো যায়। নেচারকে যদি ঠিক রাখতে না পারি, তাহলে মানুষ হিসেবেও বাঁচাটা কঠিন হয়ে যাবে। নিজেদের স্বার্থেই আমাদের এই দায়িত্ব নিতে হবে।’
