ঢাকা
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

হাসিনার রায়ের আগে সহিংসতার সতর্কতা জয়ের

আপডেট : ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ১২:০৭ পিএম

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় ঘোষণার আগে তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় সতর্ক করে বলেছেন, আওয়ামী লীগের ওপর নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকলে দলীয় নেতাকর্মীরা ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচন ঠেকিয়ে দেবে।

তিনি দাবি করেন, তার মায়ের বিরুদ্ধে হওয়া মামলার রায় রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, পরিস্থিতি সহিংসতায় রূপ নিতে পারে।

জয় বলেন, আওয়ামী লীগের ওপর নিষেধাজ্ঞা না উঠলে তারা নির্বাচন প্রতিহত করবেন। তার ভাষায়, ‘আমরা নির্বাচন হতে দেব না আওয়ামী লীগ ছাড়া। আমাদের প্রতিবাদ আরও জোরালো হবে, আমরা যা দরকার তা করব। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কিছু না করলে নির্বাচনের আগে বাংলাদেশে সহিংসতা ঘটবে... মুখোমুখি সংঘর্ষ হবেই।’

সোমবার (১৭ নভেম্বর) ঢাকায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় ঘোষণার কথা রয়েছে। রায় টেলিভিশনে সরাসরি প্রচার হবে।

এর আগে রোববার (১৬ নভেম্বর) হাসিনার ছেলে এবং উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় রয়টার্সকে বলেন, ‘আমরা জানি রায় কী হবে। তারা তাকে দোষী সাব্যস্ত করবে, আর সম্ভবত মৃত্যুদণ্ড দেবে।’

তিনি দাবি করেন, তার মা ‘ভারতে সম্পূর্ণ নিরাপদ’, যেখানে তাকে ‘রাষ্ট্রপ্রধানের মতো’ নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মুখপাত্র জয়ের এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ট্রাইব্যুনাল ‘সম্পূর্ণ স্বচ্ছভাবে’ বিচারকাজ পরিচালনা করছে এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হওয়ার অভিযোগ ভিত্তিহীন। মুখপাত্র বলেন, ‘আওয়ামী লীগের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই। দলটি মানবতাবিরোধী অপরাধের দায় স্বীকার করতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে এবং জবাবদিহির প্রক্রিয়া মানতে চাইছে না।’

মুখপাত্র বলেন, সরকারের প্রথম লক্ষ্য ‘উত্তেজনা প্রশমন এবং মানুষের জীবন-সম্পদ রক্ষা।’

এদিকে হাসিনার রায় ঘিরে গত কয়েক দিনে ঢাকায় সহিংসতা বেড়েছে। রোববারই একাধিক ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এর আগে ১২ নভেম্বর শহরে ৩২টি বিস্ফোরণ ও একাধিক বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এসব নাশকতার অভিযোগে আওয়ামী লীগের কর্মীদেরও আটক করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ৪০০-র বেশি বিজিবি সদস্য মোতায়েন, চেকপোস্ট জোরদার এবং জনসমাবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

জয় বলেন, তিনি ও তার মা দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। তিনি দাবি করেন, গত কয়েক দিন ধরে সারা দেশে হরতাল, বিশাল বিক্ষোভ- এসব আরও বাড়বে।

দীর্ঘ ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকা শেখ হাসিনা উন্নয়নের জন্য প্রশংসিত হলেও মানবাধিকার লঙ্ঘন, বিরোধী মত দমন এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থানের অভিযোগ রয়েছে। ২০২৪ সালের নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দল অংশ নেয়নি, কারণ বহু নেতা জেলে ছিলেন বা বিদেশে পালিয়ে গিয়েছিলেন। এবার পরিস্থিতি উল্টো হয়েছে।

জয় বলেন, ‘তিনি ক্ষুব্ধ, রাগান্বিত, হতাশ। আর আমরা সবাই যা প্রয়োজন তা করে লড়াই চালিয়ে যাব।’ সূত্র: রয়টার্স

LH/SN
আরও পড়ুন