ঘুমের সময় হঠাৎ করে কানে আসে গড়গড় শব্দ-আরও সহজভাবে বললে, নাক ডাকা। এই বিরক্তিকর বিষয়টি শুধু ঘুমের পরিবেশ নষ্ট করে না, বরং এটি শরীরের ভেতরে চলা কিছু সমস্যারও ইঙ্গিত হতে পারে। তবে চিন্তার কিছু নেই-চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের মতে, কিছু সহজ ও বাস্তব জীবনযাপন পরিবর্তনের মাধ্যমে নাক ডাকা অনেকটাই বন্ধ করা সম্ভব।
কেন নাক ডাকি আমরা
ঘুমের সময় গলার ও নাকের পেছনের নরম পেশি ঢিলে হয়ে যায়, এতে শ্বাসনালির পথ সংকীর্ণ হয়ে পড়ে। বাতাস প্রবাহিত হওয়ার সময় ওই সংকীর্ণ পথে ধাক্কা খেয়ে শব্দ সৃষ্টি করে, যেটিই নাক ডাকা।
Snoring২
এর প্রধান কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে-
- অতিরিক্ত ওজন, যা গলার পেছনে চর্বি জমিয়ে শ্বাসপথে বাধা সৃষ্টি করে
- মদপান ও ধূমপান, যা গলার পেশি ঢিলা করে ও শ্বাসনালির ক্ষতি করে
- সাইনাস, পলিপ বা অ্যালার্জি, যা নাকের ভিতরে পরিবর্তন এনে শ্বাসপ্রশ্বাসে বাধা দেয়
- পিঠের ওপর ঘুমানো, যাতে জিহ্বা পিছলে গলার পেছনে গিয়ে পড়ে
- ঘুমের ঘাটতি, যা পেশিকে দুর্বল করে তোলে
নাক ডাকা বন্ধের ৭ কার্যকর উপায়
১. ঘুমের ভঙ্গি পরিবর্তন করুন- পিঠের ওপর না শুয়ে বাঁ বা ডান পাশে ঘুমালে নাক ডাকা কমে যায়।
২. ওজন কমান- শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে আনলে গলার চাপ কমে, সহজ হয় শ্বাসপ্রশ্বাস।
৩. ঘুমের আগে অ্যালকোহল এড়ান- অ্যালকোহল ও সিডেটিভ গলার পেশি ঢিলা করে দেয়, যা নাক ডাকা বাড়ায়।
৪. নাক পরিষ্কার রাখুন- নাসা বন্ধ থাকলে নাক ডাকা বেড়ে যায়। তাই ঘুমের আগে নাক পরিষ্কার করুন।
৫, মাথা একটু উঁচু করে শুতে চেষ্টা করুন- অতিরিক্ত বালিশ ব্যবহার বা বেড হেড একটু উঁচু করে শোয়া সহায়ক হতে পারে।
৬. শরীরে পানি ঘাটতি রাখবেন না- শরীর হাইড্রেটেড থাকলে শ্বাসনালির পেশি স্বাভাবিক থাকে।
৭. ভালো ঘুমের অভ্যাস গড়ুন- প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমানো, ঘুমের আগে স্ক্রিন টাইম কমানো ইত্যাদি ঘুমের মান বাড়ায়।
নাক ডাকা যদি নিয়মিত হয় এবং তার সঙ্গে ঘন ঘন শ্বাস বন্ধ, মাথাব্যথা, ক্লান্তি বা ঘুমের মধ্যে দম বন্ধ হয়ে আসা দেখা দেয়, তাহলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কারণ এটি স্লিপ অ্যাপনিয়া-র মতো জটিল সমস্যার লক্ষণও হতে পারে।
নাক ডাকা কোনো অজেয় সমস্যা নয়। সঠিক ঘুমের ভঙ্গি, ওজন নিয়ন্ত্রণ ও স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তোলার মাধ্যমে এটি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। প্রয়োজনে চিকিৎসকের সহায়তা নিতে দেরি করবেন না।
সূত্র: মেডিকেল নিউজ টুডে