স্তন ক্যান্সারের পর সন্তান জন্ম কতটা ঝুঁকিপূর্ণ

একসময় স্তন ক্যান্সার জয় করার পর মাতৃত্বের স্বপ্ন দেখা ছিল একরকম অসম্ভব ভাবনা। কিন্তু চিকিৎসা বিজ্ঞানের অগ্রগতিতে এখন সেই ভাবনা পরিণত হয়েছে বাস্তব সম্ভাবনায়। অঙ্কোলজি (ক্যান্সার চিকিৎসা) ও প্রজনন চিকিৎসার উন্নতির ফলে আজ অনেক নারী স্তন ক্যান্সার থেকে সেরে ওঠার পর নতুন জীবনের পথে এগোচ্ছেন পরিকল্পনা করছেন মাতৃত্বের।

তবে চিকিৎসকরা বলছেন, এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে প্রয়োজন সঠিক সময় নির্বাচন ও শারীরিক অবস্থা অনুযায়ী বিশেষজ্ঞ পরামর্শ।

ভারতের আভা সার্জি সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা ডা. বাণীকুমার মিত্র বলেন, ‘সাধারণত ক্যান্সার চিকিৎসা শেষ হওয়ার পর অন্তত দুই থেকে তিন বছর অপেক্ষা করে গর্ভধারণের চেষ্টা শুরু করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এতে শরীর পুরোপুরি আরোগ্যের সুযোগ পায় এবং ক্যান্সার পুনরায় ফিরে আসার সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ সময় পার হয়ে যায়।’

তিনি আরও জানান, হরমোন রিসেপ্টর পজিটিভ স্তন ক্যান্সার আক্রান্ত নারীদের ক্ষেত্রে এই অপেক্ষার সময় আরও দীর্ঘ হতে পারে। কারণ, এ ধরনের রোগীরা অনেক সময় ট্যামোক্সিফেন বা অ্যারোমাটেজ ইনহিবিটর জাতীয় ওষুধ দীর্ঘদিন সেবন করেন, যা গর্ভাবস্থায় গ্রহণ করা নিরাপদ নয়।

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেন, স্তন ক্যান্সারের চিকিৎসা যেমন কেমোথেরাপি, রেডিয়েশন বা হরমোন থেরাপি নারীদের প্রজনন ক্ষমতার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষ করে কেমোথেরাপি ডিম্বাশয়ের রিজার্ভ কমিয়ে দেয়, ফলে গর্ভধারণের জন্য প্রয়োজনীয় ডিম্বাণুর সংখ্যা ও গুণমান হ্রাস পেতে পারে।

চিকিৎসা শেষে অনেক নারীর মাসিক (পিরিয়ড) চক্র স্বাভাবিকভাবে ফিরে এলেও, তা প্রজনন ক্ষমতা পুরোপুরি ফিরে এসেছে এমন নিশ্চয়তা দেয় না। তাই বিশেষজ্ঞদের মতে, গর্ভধারণের পরিকল্পনার আগে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রজনন মূল্যায়ন ও চিকিৎসা পরামর্শ নেওয়া জরুরি।