দেশজুড়ে চলছে তীব্র দাবদাহ। ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। চলমান এই তাপপ্রবাহে শরীরে পানির চাহিদা পূরণ করতে অনেকে রসাল ফল তরমুজ খেতে চান। কিন্তু গরমের সাথে পাল্লা দিয়ে তরমুজের দামও বেড়েই চলেছে। তরমুজের দাম এতটাই বেড়েছে যে তা নিম্নবিত্তদের নাগালের বাইরে চলে গেছে।
তীব্র গরমে হাঁসফাঁস করা মানুষ ফলটি কিনতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন। ক্রেতারা বলছেন, গরমের কারণে পানি জাতীয় এই ফলের চাহিদা বাড়ায় সুযোগ বুঝে দামও বাড়িয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। আর ব্যবসায়ীদের দাবি, তরমুজের মৌসুম শেষ দিকে এসে গেছে। কৃষকের জমিতে এখন আর বেশি ফল নেই। যার ফলে বাজারে তরমুজের সরবরাহ কম। আবার পরিবহন খরচ বেড়েছে। সব মিলিয়ে তরমুজের দাম বেড়েছে।
রাজধানীর খিলগাঁও ও সেগুনবাগিচা এলাকার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রোজা ও ঈদের সময় তরমুজ বয়কটের ডাক ছিলো। যে কারণে তখন ছোট তরমুজের কেজি ছিল ৩০-৩৫ টাকা, বড় তরমুজ ছিল ৪০ টাকার মতো। এখন গড়ে তরমুজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। দাম বেড়ে যাওয়ায় এখন কেউ পিস হিসেবে বিক্রি না করে কেজি দরে বিক্রি করছে।
সেগুনবাগিচার ব্যবসায়ী সাইদুল হক বলেন, তরমুজের মৌসুম এখন প্রায় শেষ পর্যায়ে। যার ফলে, বাজারে সরবরাহ কমে গেছে। আবার পরিবহন খরচও বেড়েছে। তাই তরমুজের দামও বেড়েছে। অস্বীকার করার উপায় নেই কিছু ক্ষেত্রে দাম দ্বিগুণের মতো বেড়েছে। এই ব্যবসায়ী আরও বলেন, গরমের মধ্যে মানুষের শরীর থেকে বেশি ঘাম বের হয়। এতে পানিশূন্যতা দেখা দেয়। যে কারণে মানুষ পানি জাতীয় ফল বেশি খায়। এখন বাজারে পানি জাতীয় ফল আছে তরমুজ ও ডাব। তাই তরমুজের চাহিদা বেশি, দামও বেশি।
খিঁলগাওয়ের ব্যবসায়ী আব্বাস আলী বলেন, আমরা খুচরা বিক্রেতা। দাম বাড়লে আমরা বাড়াই। কমলে আমরা কম দামে বিক্রি করতে পারি। এখন আড়ত থেকে বেশি দামে কিনতে হয়, আমাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, রোজার মধ্যে ১০০ তরমুজ কিনতে পারতাম ১৮-১৯ হাজার টাকায়। আর এখন সেটা কিনতে লাগে ২৫-২৬ হাজার টাকা। কারণ বাজারে এখন তরমুজ নেই। এখনকার তরমুজগুলো অনেক ভালো এবং মিষ্টি বেশি।
এই ব্যবসায়ী জানান, এখন ৩ কেজি ওজনের তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকায়। আর ৪-৫ কেজি ওজনের তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ৫০০-৬০০ টাকায়। বাজারে এখন ৩০০ টাকার নিচে কোনো তরমুজ নেই। সেগুনবাগিচা থেকে ৩ কেজি ওজনের একটি ছোট তরমুজ নিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা জহিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, গরমের কারণে ছেলে-মেয়েরা তরমুজ খেতে বেশি পছন্দ করে। কিন্তু বাজারে দিনদিন তরমুজের দাম বাড়ছে। ঈদের পরে তরমুজ কিনছি পিস হিসেবে। এখন কেজি ছাড়া বিক্রি করে না ব্যবসায়ীরা।
এদিকে কিছু-কিছু এলাকার ফুটপাতে প্লেটে করে তরমুজ বিক্রি হতে দেখা গেছে। সেখানে দেখা যায় ছোট ছোট ৪-৫ টুকরো তরমুজের প্লেট বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকায়।
