ঢাকার মূলসড়কে কোনো ধরনের রিকশা চলতে পারবে না বলে কঠোর বার্তা দিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।
তিনি জানান, রাজধানীর প্রধান সড়কগুলোতে শৃঙ্খলা ফেরাতে এবং সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে ডিএনসিসি ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করছে। এরই অংশ হিসেবে মঙ্গলবার (১৩ মে) আসাদগেট এলাকায় চালানো অভিযানে প্রায় ৩০টি ব্যাটারি চালিত অবৈধ রিকশা জব্দ করা হয়েছে।
ডিএনসিসি প্রশাসক জানান, সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, রাজধানীতে ঘটে যাওয়া সড়ক দুর্ঘটনার অন্তত ২০ শতাংশের জন্য দায়ী ব্যাটারি চালিত অবৈধ রিকশা। এগুলো নীতিমালাহীনভাবে তৈরি হওয়ায় চালকদের প্রশিক্ষণ না থাকায় এবং নিয়ন্ত্রণহীন গতির কারণে জনসাধারণ বিশেষত নারী ও শিশুরা চরম ঝুঁকিতে পড়ছে। অনেক সময় দেখা যায়, এসব রিকশা ফুটপাত বা পথচারীদের ওপর উঠে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, নিরাপত্তার মানদণ্ড বিবেচনায় না রেখেই এসব রিকশা সড়কে চলছে। এটি শুধু আইন লঙ্ঘনই নয়, জননিরাপত্তার ক্ষেত্রেও বড় হুমকি।
প্রশাসক আরও জানান, ব্যাটারি চালিত অবৈধ রিকশার বিরুদ্ধে অভিযান চলমান রয়েছে এবং এই প্রক্রিয়াকে আরও জোরদার করা হবে। ‘ডেসকোর সহযোগিতায় আমরা এইসব রিকশার চার্জিং পয়েন্ট ও উৎপাদনের অবৈধ ওয়ার্কশপগুলো বন্ধ করে দিচ্ছি,’ বলেন তিনি।
ডিএনসিসির পক্ষ থেকে জানা যায়, বুয়েটের সহায়তায় নিরাপদ ব্যাটারি রিকশার একটি মানসম্মত নকশা প্রণয়ন করা হয়েছে। সেই অনুযায়ী কয়েকটি অনুমোদিত প্রতিষ্ঠানকে নতুন রিকশা উৎপাদনের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। এগুলো ঢাকার নির্দিষ্ট এলাকায় চালানো যাবে।
‘আমরা একটি নিয়মতান্ত্রিক, আধুনিক, নিরাপদ ও টেকসই নগর পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চাই,’ বলেন মোহাম্মদ এজাজ।
নতুন নীতিমালা অনুসারে, এই মাসের মধ্যেই ডিএনসিসি রিকশাচালকদের প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নিচ্ছে। প্রশিক্ষণ শেষে যারা উত্তীর্ণ হবেন, শুধুমাত্র তারাই বৈধ লাইসেন্স পাবেন এবং অনুমোদিত কোম্পানির রিকশা চালাতে পারবেন। একটি জাতীয় পরিচয়পত্রের বিপরীতে শুধুমাত্র একটি রিকশার লাইসেন্স দেওয়া হবে। এ ব্যবস্থার মাধ্যমে রিকশা নিয়ে চলমান অবৈধ ব্যবসা ও লাইসেন্স বাণিজ্য বন্ধ করার পরিকল্পনা রয়েছে।
প্রশাসক আরও জানান, একটি এলাকার বৈধ রিকশা অন্য এলাকায় চলতে পারবে না। এভাবে রিকশা চলাচল এলাকাভিত্তিক সীমাবদ্ধ করে সিটি কর্পোরেশন যানজট ও বিশৃঙ্খলা কমাতে চায়। একই সঙ্গে যাত্রীদের সুবিধার্থে নির্ধারিত ভাড়া চালুরও পরিকল্পনা রয়েছে, যা ভোগান্তি কমাবে এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করবে।
অভিযানে উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির অঞ্চল-৫ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা আ ন ম বদরুদ্দোজা, ট্রাফিক ইঞ্জিনিয়ারিং সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খন্দকার মাহবুব আলম, ডিএমপির কর্মকর্তারা এবং ডিএনসিসির সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাবৃন্দ।
