ঢাকা
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

জৌলুস হা‌রিয়েছে দৌলতদিয়া ঘাট

আপডেট : ০৮ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৩৪ পিএম

একসময় যাত্রী, যানজট, হকারসহ বি‌ভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের হাকডাক ও পদচারণায় মুখর ছিলো রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলত‌দিয়া ঘাট। এ সবই যেনো ছিলো এ ঘাটের চিরচেনা রূপ। তবে এখন আর সেই রূপ নেই।

স্বপ্নের পদ্মা সেতু হওয়ার পর একেবারেই বদলে গেছে দৌলতদিয়ার এ ফেরিঘাট। প্রতিদিনই ঘাটে ভিড়ছে ফেরি। পার হচ্ছে যানবাহন। কিন্তু নেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকা গাড়ির দীর্ঘ সারি। যাত্রীদেরও যেনো নেই ভোগান্তির বিরক্তিকর সব অভিজ্ঞতা। সব উড়ে গেলো পদ্মা সেতুর কল্যাণে।

এখন কয়েক মুহ‌ূর্ত বা সামান‌্য অপেক্ষার পরই ঘাটে ফে‌রি দেখা যাচ্ছে। এ ঘাট দিয়ে যানবাহন পারাপারের সংখ‌্যা কমেছে প্রায় এক তৃতীয়াংশ। এছাড়া ঘাটকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা খাবার হোটেলসহ অন‌্যান‌্য বে‌শির ভাগ ব‌্যবসা প্রতিষ্ঠান ক্রেতার অভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে কর্মহীন হয়ে পড়েছে ঘাট কে‌ন্দ্রিক বা ঘাট সং‌শ্লিষ্ট কয়েক হাজার হোটেল মা‌লিক-শ্রমিক, মোটর শ্রমিক ও হকাররা। এতে জৌলুস হারিয়ে এখন অনেকটাই নিস্তেজ হয়ে পড়েছে দৌলত‌দিয়া ঘাট।

জানা‌ গেছে, দৌলত‌দিয়া প্রান্তে ৭টি ফেরিঘাট থাকলেও এখন চালু রয়েছে মাত্র ৩‌টি। পদ্মা সেতুর চালুর পর থেকে যানবাহনের সংখ‌্যা কমে যাওয়ায় ফেরির সংখ্যা অর্ধেকে নামিয়ে আনলেও গাড়ির জন্য অপেক্ষায় থাকে ফেরি। নেই আগের মতো দালাল চক্র ও ছিনতাইকারী। এবং ভাটা পড়েছে দৌলত‌দিয়া রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন দেশের বৃহত্তম যৌনপল্লীতে। সব মি‌লিয়ে দুর্ভোগ দূর হয়েছে যাত্রীদের, ফিরেছে স্বস্তি। পদ্মা সেতুর চালুর পূর্বে দৌলত‌দিয়া ঘাট দিয়ে প্রতিদিন সাড়ে ৩ থেকে ৬ হাজার যানবাহন পারাপার হলেও বর্তমানে পারাপার হচ্ছে মাত্র দেড় থে‌কে ২ হাজার।

দৌলতদিয়া ঘাটের ব্যবসায়ী আব্দুল মান্নান, সোহেল রানা ও হকার শ‌হিদুল, শাজাহানসহ কয়েকজন জানান, পদ্মা সেতু চালুর পর থেকেই যানবাহন পারাপার কমেছে প্রায় ৭০ শতাংশ। যার কারণে দৌলতদিয়া ঘাট এখন প্রায় যাত্রী শুন্য। যাত্রীদের অভাবে তাদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বে‌শির ভাগ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। যে কারণে এখন তারা বাধ্য হয়ে পেশা পরিবর্তন করছেন।

যাত্রী নুরুজ্জামান মিয়া, রাসেল আহম্মেদ, সোহানুর রহমানসহ একা‌ধিক যাত্রী বলেন, এখন আর দৌলত‌দিয়ায় তাদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয় না। এসেই ফে‌রির দেখা পান। পদ্মা সেতুর চালুর পর থেকে তাদের এই দীর্ঘ দিনের ভোগা‌ন্তি দূর হয়েছে।

যানবাহনের চালকরা মিন্টু শেখ, দেলোয়ার হোসেন, জাহাঙ্গীর হোসেনসহ একা‌ধিক চালক বলেন, এখন দৌলত‌দিয়া ঘাটে আর আগের মতো ঘণ্টার পর ঘণ্টা সি‌রিয়ালে থাকতে হচ্ছে না। এতে যাত্রী ও তাদের ভোগান্তি দূর হয়েছে। আর এই ভোগা‌ন্তি দূর হয়েছে পদ্মা সেতুর চালুর কারণে। 

বিআইডব্লিউটিসির দৌলতদিয়া ঘাট ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন জানান, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর এই নৌরুটে যানবাহনের সংখ‌্যা ক‌মেছে। সেই সাথে বন্ধ হয়েছে গেছে বহু ব‌্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং কর্মহীন হয়ে পড়েছে বহু হকার। যানবাহন কমার কারণে এখন ঘাটে আর সি‌রিয়াল তৈ‌রি হয় না। সরাসরি যানবাহনগুলো ফেরির দেখা পাচ্ছে। যানবাহনের জন‌্য এখন ফে‌রি অপেক্ষায় থাকে। বর্তমান এই নৌরুটে ৩টি ঘাট চালু রয়েছে এবং চলাচল করছে ছোট বড় ১৪টি ফে‌রি।

ZM/SA/AS
আরও পড়ুন