ঢাকা
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

শঙ্কামুক্ত চাঁদপুরের সেই খতিব, আদালতে জবানবন্দী আসামির

আপডেট : ১৩ জুলাই ২০২৫, ০৪:৩৫ এএম

চাঁদপুর শহরের প্রফেসর পাড়া মোল্লা বাড়ি জামে মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা খতিব এবং নৃশংস হামলার শিকার মাওলানা আ ন ম নূর রহমান মাদানী বর্তমানে শঙ্কামুক্ত আছেন। তার ছেলে আফনান তাকি এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এদিকে আর নূর রহমান মাদানীকে লক্ষ্য করে হামলা করা বিল্লাল হোসেন আদালতে ১৬৪ ধারা অনুযায়ী স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন।

শনিবার (১২ জুলাই) বিকেলে চাঁদপুরের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শাহাদাতুল হাসান আল মুরাদের আদালতে তাকে তোলা তিনি এ স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দী দেন। চাঁদপুরের কোর্টের পুলিশ পরিদর্শক শহীদুল্লাহ ও বাদি পক্ষের আইনজীবী আব্দুল কাদের খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

হামলার শিকার খতিব মাওলানা আ ন ম নূরুর রহমান মাদানি (৬০) চাঁদপুর সদরের গুনরাজদি এলাকার বাসিন্দা। চাঁদপুরের বিভিন্ন মসজিদে তিনি প্রতি শুক্রবার খুতবা দেন। মহানবী (সা.)-কে অপমান করেছেন— অভিযোগ তুলে গত ১১ জুলাই শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে মসজিদের ভিতরেই ধারাল অস্ত্র দিয়ে তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন বিল্লাস হোসেন (৫০) নামের এক ব্যক্তি। বিল্লাল চাঁদপুর সদর উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের মনোহরখাদি গ্রামের মৃত আইয়ুব আলীর ছেলে। শহরের বকুলতলায় বসবাস করেন তিনি, পেশায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, আজ বিকেল তিনটার সময় তাকে প্রথমে আদালতে আনা হয়।  এরপর আসামি  ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জবানবন্দি দেন। জবানবন্দি শেষে আসামিকে রাত ৮টায় জেল হাজতে পাঠানো হয়। এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে দায়ত্ব রয়েছেন চাঁদপুর সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক নাজমুল হোসেন।

এর আগে শুক্রবার (১১ জুলাই) চাঁদপুর পৌর এলাকার প্রফেসর পাড়া মোল্লা বাড়ি জামে মসজিদে জুমআর নামাজে ইমামতি করেন  মাওলানা আ ন ম নূরুর রহমান মাদানী। জুমার নামাজে আলোচনা ও খুতবা নিয়ে ক্ষিপ্ত ছিলেন ওই এলাকার ভ্রাম্যমান ব্যবসায়ী বিল্লাল হোসেন। যার কারণে নামাজ শেষে মসজিদের ভিতরে পূর্বপরিকল্পিত ভাবে দেশীয় অস্ত্র (চাপাতি) দিয়ে মসজিদের খতিবের উপর হামলা চালায় বিল্লাল। এতে  খতিব মাওলানা আ ন ম নূর রহমান মাদানী মাথায় মারাত্মক জখম হয়। এ ঘটনার অল্প সময়ের মধ্যে হামলাকারী বিল্লাল হোসেনকে  স্থানীয়রা আটক করে পুলিশ কাছে সোপর্দ করেন।

খদিব নূরুর রহমান মাদানিকে প্রথমে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার ঢাকার একটি হাসপাতালে পাঠানো হয়। বর্তমানের চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এ ঘটনায় শনিবার বিকেলে চাঁদপুর শহরে ইসলামিক দলগুলো মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করে। এছাড়া শনিবার সকাল থেকেই গুঞ্জন উঠে মসজিদের খতিব মারা গেছেন। তবে পারিবারিক ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন এবং আগের চেয়ে তিনি সুস্থ আছেন।

মাওলানা আ ন ম নূর রহমান মাদানীর বড় ছেলে আফনান তাকি বলেন, ‘আমার বাবার ওপর হামলাকারী ব্যক্তির বিচার দাবি করছি। আমার বাবাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য শুক্রবার রাতে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা হলি কেয়ার হসপিটালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। বর্তমানে তিনি শঙ্কামুক্ত আছেন।’ 

শুক্রবার রাতেই মাওলানা আ ন ম নূর রহমান মাদানীর বড় ছেলে আফনান তাকি বাদি হয়ে বিল্লাল হোসেনের নামে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় মামলা করেন।

চাঁদপুরের কোর্টের পুলিশ পরিদর্শক শহীদুল্লাহ বলেন, আসামি তার দোষ স্বীকার  করেছেন। প্রয়োজন তাকে রিমান্ডে আনা হবে।

বাদী পক্ষের অ্যাডভোকেট আব্দুল কাদের খান বলেন, এটি একটি পরিকল্পিত ঘটনা। তার সাথে আরও লোকজন জড়িত আছে। সে আদালতে তার দোষ স্বীকার  করেছেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তার বিরুদ্ধে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছেন। সেহেতু সে আদালতে তার দোষ স্বীকার করেছেন। সেটি পেন্ডিং আছে। তিনি প্রয়োজনে আবারো রিমান্ড চাইবেন। আমরা চাই একটি সুষ্ঠু তদন্ত করা হোক।

 

khk
আরও পড়ুন