ঢাকা
মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে বেকার ভাতা দেওয়া হবে: এবিএম মোশাররফ হোসেন

আপডেট : ১১ আগস্ট ২০২৫, ০১:১৭ পিএম

বিএনপি রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসীন হলে দলের কর্মসূচি কী হবে তা তুলে ধরে বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন বলেছেন, যারা পড়াশোনা শেষ করে চাকরির জন্য চেষ্টা করবে, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সেসব শিক্ষার্থীদের এক বছর পর্যন্ত বেকার ভাতা দেওয়া হবে। কৃষকদের উৎপাদিত পণ্য উপজেলা পর্যায়ে তাদের কাছ থেকে সরাসরি ন্যায্যমূল্যে ক্রয় করবে।

বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) বেলা ১১টায় পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলা ও পৌর শাখা জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

এবিএম মোশাররফ হোসেন বলেন, খালেদা জিয়াকে মূল প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করতেন শেখ হাসিনা। এ কারণে তাকে সব সময় শেখ হাসিনা ভয় পেতেন। তাই খালেদা জিয়াকে জিয়া অরফানেজ মামলায় মিথ্যা অজুহাতে জেলে রেখেছিলেন। খালেদা জিয়াকে বারবার বলা হয়েছিল, আপনি বিদেশ চলে যান। আপনাকে জেলে দেওয়া হবে না। কিন্তু খালেদা জিয়া বলেছিলেন, এ দেশের মানুষ আমাকে ভালোবাসে। এ দেশের মানুষকে রেখে আমি কোথাও যাব না। অথচ শেখ হাসিনা পালিয়ে চলে গেছে। আজকে অসহায় হয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ নেতাকর্মীরা এতিমের মতো রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছে।

তিনি আরও বলেন, আগামী দিনে তারেক রহমান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হবেন। তিনি বলেছেন, অনেকের আয়ের পথ নাই। এ জন্য নারীরা যাতে স্বচ্ছভাবে চলতে পারে, সে জন্য তারেক রহমান বলেছেন প্রত্যেক পরিবারে একটি 'ফ্যামিলি কার্ড' করে দিবেন। পরিবারের বয়োজেষ্ঠ্য নারীর নামে এ কার্ডটি দেওয়া হবে।

এ দেশের নারী সমাজের উন্নতিতে বিএনপি কী করেছে তা তুলে তিনি বলেন, ১৯৮০ সালে জিয়াউর রহমান যৌতুক বিরোধী আইন পাশ করেছিলেন। নারীরা যাতে পুরুষদের দ্বারা নির্যাতিত না হয়, আমাদের দেশের নারীরা যাতে নিরাপদে বসবাস করতে পারে, সে জন্য এ আইন তৈরি করা হয়েছিল। সবচেয়ে বড় কথা হলো বাংলাদেশের নারী সমাজকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য যতগুলো ভালো কাজ করেছে, তার বেশিরভাগই করেছে জিয়াউর রহমান এবং বেগম খালেদা জিয়া। এ জন্য নারী সমাজকে বিএনপির পাশে থাকার আহ্বান জানান বিএনপির এ কেন্দ্রীয় নেতা।

শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মোশাররফ হোসেন বলেন, শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার সময় তার বোন শেখ রেহানাকে সাথে নিয়ে গেছে। অথচ তার দলের কোনো মন্ত্রী, এমপি এমনকি দেশের মানুষের কথা তিনি চিন্তা করেননি। শুধু নিজেদের জীবন বাঁচানোর চিন্তাই শেখ হাসিনা করেছেন। অন্তবর্তী সরকারের সময় এ পর্যন্ত শেখ হাসিনা পরিবারের একজন লোকও গ্রেপ্তার হয়নি। কারণ তাদেরকে আগেই ভাগিয়ে দিয়েছে।

তিনি জনতার কাছে প্রশ্ন রাখেন, আগামী দিনে বিএনপি ভোটে জিতবে, বিএনপি সরকার গঠন করবে, বিএনপি রাষ্ট্র পরিচালনা করবে তাহলে সে দলের সাথে আমাদের থাকা উচিত, না যে দলের কোনো সম্ভাবনা নাই সে সব দলের সাথে থাকা উচিত? কেন্দ্রীয় নেতার এমন আহ্বানে সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী তৃণমূল পর্যায়ের নারীরা হাত উচিয়ে বিএনপির সাথে থাকার কথা দৃঢ়ভাবে ব্যক্ত করেন।

স্থানীয় ভোটের হিসাবের পরিসংখ্যান এবং কেন মহিলা দল গঠন করা হয়েছিল, সে কথা তুলে ধরে বিএনপি নেতা এবিএম মোশাররফ হোসেন বলেন, কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী আসনে পুরুষ ভোটার আছে ১ লক্ষ ২ হাজার এবং নারী ভোটার আছে ৯৯ হাজারের মতো। নারী এবং পুরুষ ভোটার বলতে গেলে সমান-সমান। আমরা মনে করি, এত বিরাট সংখ্যক নারীকে বাদ দিয়ে কখনই উন্নয়ন করা সম্ভব নয়। আমাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বলেছিলেন নারীকে বাদ রেখে কোনোভাবেই সমাজকে এগিয়ে নেয়া সম্ভব নয়। যার জন্যই তিনি জাতীয়তাবাদী মহিলা দল গঠন করেছিলেন।

এছাড়া তিনি আগামীতে প্রতিটি সংসদ নির্বাচন কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে হবে বলে জানান।

তিনি বলেন, স্থানীয় সরকারের প্রতিটি নির্বাচনে আর কখনই আর দলীয় প্রতীক থাকবে না। বিএনপিকে সহযোগিতা করলে কখনই বিএনপি জনমানুষের সাথে বেঈমানি করবে না বলে দৃঢ়কন্ঠে উচ্চারণ করেন এ কেন্দ্রীয় নেতা।

পটুয়াখালী জেলা মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা সীমা সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে লিলি ইসলামকে উপজেলা মহিলা দলের সভাপতি, নার্গিস আক্তারকে সাধারণ সম্পাদক এবং ফারজানা শাম্মি ফ্লোরাকে পৌর মহিলা দলের সভাপতি ও মনিরা আক্তারকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ঘোষণা করেন।

উপজেলা মহিলা দলের জেষ্ঠ্য সহ-সভাপতি নার্গিস জামানের সভাপতিত্বে এতে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পটুয়াখালী জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা সীমা ও বিশেষ বক্তা ছিলেন পটুয়াখালী জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক ফারজানা রুমা।

বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- উপজেলা বিএনপির সভাপতি হুমায়ুন সিকদার, সাধারণ সম্পাদক মো. হাফিজুর রহমান, কলাপাড়া পৌর বিএনপির সভাপতি গাজী মোহাম্মদ ফারুক ও সাধারণ সম্পাদক মুসা তাওহীদ নান্নু মুন্সী প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন উপজেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক নার্গিস আক্তার।

NJ