ঢাকা
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

ভুয়া তথ্য দিয়ে বিএনপি নেতা স্কুল সভাপতি

বরিশাল শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানকে লিগ্যাল নোটিশ

আপডেট : ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:৪০ পিএম

বরিশালের বানারীপাড়ায় শিক্ষাগত যোগ্যতার মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিএনপি নেতা সবুর খান উপজেলার বাইশারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি হওয়ার অভিযোগের বিষয়ে কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানকে ৭ দিনের আল্টিমেটাম দিয়ে লিগ্যাল নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

অভিযোগকারী উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নের কচুয়া গ্রামের মামুন ফরাজীর পক্ষে সোমবার (১৩ অক্টোবর) বরিশাল জজ কোর্টের অ্যাডভোকেট এম আব্দুল্লাহ্ আল-মামুন (তুহিন) ও শাহিন হোসেন শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. ইউনুস আলী সিদ্দিকীকে এ লিগ্যাল নোটিশ দেন। এদিন ডাকযোগে এ লিগ্যাল নোটিশ তার কাছে পাঠানো হয়েছে।

নোটিশ প্রাপ্তির ৭ কর্মদিবসের মধ্যে অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ের ফলাফল প্রদান ও এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে বোর্ড চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে এ নোটিশে উল্লেখ করা হয়।

নোটিশে বলা হয়, চলতি বছরের ফ্রেব্রুয়ারি মাসে বরিশাল শিক্ষা বোর্ড বাইশারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির অনুমোদন দেয়। এতে কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য এস সরফুদ্দিন আহমেদ সান্টুপন্থী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক ও উপজেলার বাইশারী ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আ. সবুর খানকে সভাপতি করা হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ নীতিমালা অনুযায়ী স্কুল কমিটির সভাপতি হতে হলে তাকে কমপক্ষে স্নাতক পাশ হতে হবে। বানারীপাড়ার বাইশারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কমিটি গঠনের সময়ে দেওয়া তথ্যে সবুর খান নিজেকে বিএ পাস বলে উল্লেখ করেন। কিন্তু এর অনুকূলে তিনি তার শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদের কোনো কপি জমা দেননি।

এদিকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফকরুল আলম তার ঘনিষ্ঠ বিএনপি নেতা সবুর খানের নাম তালিকার এক নম্বরে রেখে সুপারিশ বোর্ডে পাঠান।

অভিযোগকারী স্থানীয় মামুন ফরাজীর দাবি, বাইশরী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি আব্দুস সবুর খান তার বায়োডাটায় শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে বিএ পাস উল্লেখ করেছেন। মূলত তিনি এসএসসি পাস। বিএনপির নেতা হয়ে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে তিনি মিথ্যা তথ্য দিয়ে প্রায় ১৫০ বছরের ঐতিহ্যবাহী বাইশারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতির পদ বাগিয়ে নিয়েছেন।

তাই এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে তার বিএ পাসের তথ্য যাচাইয়ের জন্য বোর্ড নির্ধারিত ৫ হাজার টাকা ফি জমা দিয়ে গত ২৮ আগস্ট তিনি আবেদন করেন। মামুন ফরাজীর লিখিত ওই আবেদন করার প্রায় এক মাস অতিবাহিত হলেও শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। বোর্ডে বারবার যোগাযোগ করলেও তারা নির্বিকার থাকেন। পরে পত্রিকায় রির্পোট প্রকাশের পর কর্তৃপক্ষের টনক নড়ে। শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের নির্দেশে সহকারি সচিব অতিরিক্ত দায়িত্ব বিদ্যালয় নিবন্ধন মো. মাছুম মিয়া গত ২৩ সেপ্টেম্বর বানারীপাড়ার বাইশারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করেন। কিন্তু গত ২২ দিনেও আবেদনকারীকে এর ফলাফল প্রদান ও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। ফলে বোর্ড চেয়ারম্যানকে এ লিগ্যাল নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. ইউনুস আলী সিদ্দিকী বলেন, তদন্ত করে প্রতিবেদন তৈরিতে সময় লেগেছে। এই সময়টুকু ধৈর্য্য ধারণ না করে লিগ্যাল নোটিশ দেওয়া সমীচীন নয়।

তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে বাইশারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি পদ থেকে সবুর খানকে অপসারণ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। তবে এ পর্যন্ত সভাপতিকে বাদ দেওয়া সংক্রান্ত শিক্ষা বোর্ডের কোন চিঠি পাননি বলে জানান বাইশারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোস্তফা কামাল।

NJ
আরও পড়ুন