আগামী ৫ জুন চতুর্থ ধাপে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এখানে চেয়ারম্যান পদে আটজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে ছয়জনই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত, একজন বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত অপর এক প্রার্থী হিরো আলমের ভক্ত হিসেবে পরিচিত এক অটোচালক নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
নির্বাচনে আটজন প্রার্থীর মধ্যে প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে ব্যাপক আলোচনায় আছেন তিন প্রার্থী। এদের মধ্যে বিএনপি সমর্থিত ফারুক আহমেদ আনারস প্রতিক নিয়ে গোটা উপজেলায় বেশ আলোচনায় রয়েছেন। তিনি সম্প্রতি দল থেকে বহিস্কৃত হলেও বিভিন্ন ইউনিয়নের সরকার দলীয় চেয়ারম্যানগন তার পক্ষে জোরেশোরে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
শনিবার (১ জুন) বিকেলে উপজেলার পূর্বাঞ্চলের ৬টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানগন ফারুক আহমেদের পক্ষে অবস্থান নিয়ে শিবপুর হাইস্কুল মাঠের নির্বাচনী জনসভায় উপস্থিত হন। ওই সভায় বিভিন্ন ইউনিয়নের হাজারো জনতার উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
এ ছাড়াও আলোচনায় থাকা আরেক প্রার্থী হল এইচ এম আল আমিন আহমেদ। কেন্দীয় যুবলীগের সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মটরসাইকেল প্রতিকে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। প্রচারণায় এগিয়ে থাকা এই প্রার্থীর সর্বমহলে রয়েছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা। দলীয় প্রভাবশালী কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা ও উপজেলাব্যাপী তরুণ, শিক্ষিত যুব সমাজ তাকে ব্যাপক সমর্থন দিচ্ছেন বলে জানা গেছে। যার ফলে ভোটের মাঠে তারও শক্ত অবস্থান তৈরি হয়েছে।
পৌরসভা এলাকা ও উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে তথ্য পাওয়া গেছে যে, আনারস ও মোটরসাইকেলের পাশাপাশি জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক এড. সিরাজুল ইসলাম ফেরদৌস (ঘোড়া) প্রতিকে আলোচনায় রয়েছেন।
সুত্র জানায়, উপজেলা ও প্রতিটি ইউনিয়নের যুবলীগের একটি বড় অংশ তাকে সমর্থন দিচ্ছে। তাছাড়া তার পূর্ব ছয় ইউনিয়নের একক প্রার্থী হিসেবে তার নিজস্ব ভোট ব্যাংক ছিলো যা কিনা ফারুক আহমেদকে সমর্থন করায় তিনি এখন কিছুটা বেকায়দায়।
ফারুক আহমেদ দল থেকে বহিস্কার হলেও গোটা উপজেলায় তার রয়েছে অসংখ্য সমর্থক। স্থানীয় বিএনপি নেতারা সরাসরি নির্বাচনে অংশ না নিলেও বিএনপির একটা বড় অংশের ভোট তার ঝুলিতেই পড়বেন বলে মনে করছেন স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
এ ছাড়াও আরেক প্রার্থী কাজী জহির উদ্দিন সিদ্দিক টিটু (কই মাছ)। তিনি গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীকে প্রতিদন্ধিতা করে হেরে ছিলেন। তবে এবারের নির্বাচনে তার তেমন শক্ত অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে ক্রমশই তিনি নির্বাচন থেকে ছিটকে পড়ছেন বলে জানা গেছে।
স্থানীয় ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, নির্বাচনী পরিবেশ স্বাভাবিক থাকলে, আর মানুষ ভোট দিতে কেন্দ্রে এলে মটরসাইকেল, ঘোড়া ও আনারস প্রতীকের মধ্যে ত্রিমুখী লড়াই হবে। তবে শেষ হাসিটা কে হাসবে তা জানতে অপেক্ষা করতে হবে নির্বাচনের দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত।
উল্লেখ্য, নবীনগর উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী ৮ জন, ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ৯ জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ৩ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
