ঢাকা
সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ই-পেপার

রেভিনিউ স্ট্যাম্প সংকটে হাতিয়া ডাকঘর

আপডেট : ১১ জুলাই ২০২৪, ১০:৩১ এএম

নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার প্রধান ডাক ঘরে গত দুই সপ্তাহ ধরে রেভিনিউ স্ট্যাম্প না থাকায় গ্রাহকের ভোগান্তি ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। প্রতিদিন সরকারি বিভিন্ন আর্থিক পাওনা পরিশোধে দরকারি এই রেভিনিউ স্ট্যাম্প না পাওয়ায় বিপাকে পড়তে হয় মানুষদের। স্ট্যাম্প না থাকায় বেতন-ভাতা উত্তোলন কিংবা বিভিন্ন ভাউচার তৈরিতে বিঘ্ন ঘটছে দুই সপ্তাহ ধরে। এ ছাড়াও কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে শাখা পোস্ট অফিসেও।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাধারণত কোনো বিলের অর্থ সরকারি কোষাগার থেকে গ্রহণের জন্য এ রেভিনিউ স্ট্যাম্প ব্যবহার করে স্বাক্ষর করতে হয়। সঞ্চয়পত্রের লভ্যাংশ, এমটিডিআর, এফডিআরসহ মাসিক মুনাফাভিত্তিক বিভিন্ন স্কিমের লভ্যাংশ, গ্যাস ও বিদ্যুৎ বিলেও এই রেভিনিউ স্ট্যাম্প লাগানোর বিধান রয়েছে। ৪০০ টাকার বেশি লেনদেন হলেই ১০ টাকা মূল্যের রেভিনিউ স্ট্যাম্প ব্যবহার করতে হয়। এই রেভিনিউ স্ট্যাম্প ডাকঘর থেকে কিনতে হয়। বর্তমানে ডাকঘরে এই রেভিনিউ স্ট্যাম্পের সরবরাহ নেই।

ভুক্তভোগীরা জানান, প্রতি মাসেই এ ডাকঘরে রেভিনিউ স্ট্যাম্প সংকট দেখা দেয়। এ কারণে টাকা উত্তোলন ও বিল পরিশোধে ভোগান্তি পোহাতে হয়।

সরেজমিনে দেখা গেছে, রেভিনিউ স্ট্যাম্প কিনতে আসা ব্যক্তিরা উপজেলা ডাকঘরে লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। অনেকে দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে চাহিদামতো স্ট্যাম্প না পেয়ে হতাশ হয়ে ফেরত যাচ্ছেন।

উপজেলার সমাজসেবা দপ্তর থেকে এককালীন চিকিৎসা সহায়তা প্রত্যাশী রাফেয়া বেগম ও হাসনা আক্তার নামের দুই নারী জানান, সমাজসেবা অফিসে দশ টাকার রেভিনিউ স্ট্যাম্প লাগবে বিধায় আমরা পোস্ট অফিসে যায়। কিন্তু রেভিনিউ না পাওয়ায় তাদেরকে জিজ্ঞেস করলে ভেতর থেকে পোস্ট মাস্টার বিদখুটে ও কর্কশ ভাষায় বলেন সরকার না দিলে আমরা কোথেকে দেব। পোস্ট অফিসে রেভিনিউ স্ট্যাম্প না পেয়ে তারা ভেন্ডার দোকান থেকে ১০ টাকার রেভিনিউ ১৩ টাকায় কিনতে হয়েছে বলেও জানান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সোনালি ব্যাংক থানা পরিষদ শাখার একজন কর্মী জানান, পোস্ট মাস্টার সামছুল হুদা বেশি টাকা নিয়ে কিছু কিছু ব্যক্তিকে অতিরিক্ত হারে রিভিউ স্ট্যাম্প প্রদান করেন। যার কারণে আমরা প্রয়োজনে স্ট্যাম্প সংগ্রহ করতে পারি না।

সরেজমিন ডাকঘরে গিয়ে দেখা হয় সোনালি ব্যাংক থেকে আসা বিভিন্ন গ্রাহকদের সাথে। তারা জানায়, পোস্ট অফিসে কোনো চিঠি রেজিস্ট্রি করলে সাথে প্রাপ্তিস্বীকার (এডি)'র জন্যও খরচ কাটে। কিন্তু এডি সরকারিভাবে না দিয়ে তারা গ্রাহকদের দ্বারা সামনের দোকান থেকে ১০ টাকা খরচ করিয়ে ফটোকপি করিয়ে থাকেন।

এ বিষয়ে হাতিয়া উপজেলা ডাক অফিসের পোস্ট মাস্টার সামছুল হুদার কাছে জানতে চাইলে- তিনি তার ভাগিনা টিভির বড় সাংবাদিক, প্রধানমন্ত্রীর পিএ তার কাছের লোক ইত্যাদি অপ্রাসঙ্গিক কথা বলতে থাকেন। এবং সরকার রেভিনিউর দাম বাড়াবে বলে রাজস্ব বিভাগ রেভিনিউ স্ট্যাম্প সরবরাহ বন্ধ রেখেছেন বলেও জানান।

এদিকে সমস্যা দ্রুত সমাধান করবেন বলে আশ্বাস দেন চট্টগ্রাম পূর্বাঞ্চল পোস্ট মাস্টার জেনারেল মো. ছালেহ্ আহাম্মদ।

SM/ARS
সর্বশেষপঠিত