শিশু কন্যাকে ধর্ষণের অভিযোগে সৎ বাবা আটক

আপডেট : ০৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:২১ এএম

কুমিল্লার দেবীদ্বারে কন্যা শিশুকে (৮) ধর্ষণের অভিযোগে সৎ বাবাকে বিক্ষুব্ধ জনতা মারধর করেছে। এছাড়াও তার বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুরের ঘটনায় পুলিশ ও সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ধর্ষক বাবাকে আটক করেছে।

শনিবার (৫ এপ্রিল) বিকেল ৫টার দিকে দেবীদ্বারে এ ঘটনা ঘটে। হামলা চলাকালে বাড়ির মালিক আব্দুর রশিদের ছেলে সাকিব হোসেন (১৬) নামে এক কিশোরসহ ৫ জন আহত হওয়ার সংবাদ পাওয়া গেছে।

শিশু ধর্ষণের সংবাদ পেয়ে সন্ধ্যায় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. রায়হানুল ইসলামের নেতৃত্বে দেবীদ্বার থানার একদল পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের সহায়তায় ধর্ষককে উদ্ধার করে দেবীদ্বার থানায় নিয়ে আসা হয়েছে‌।

জানা গেছে, ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার দিবাগত রাত অনুমানিক ১২টার দিকে উপজেলার পৌর এলাকার বারেরা গ্রামের হেলাল কাজী বাড়ির আব্দুর রশিদের ভাড়াটিয়ার ঘরে। ধর্ষণে অভিযুক্ত মো. জামাল হোসেন (৫০) দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুর চশুই পালপাড়ার বাচ্চু মিয়ার ছেলে।

স্থানীয়রা জানান, অটোচালক মো. জামাল হোসেন তার দ্বিতীয় স্ত্রী জেসমিন আক্তার (২৮) ও সৎ মেয়েকে নিয়ে ওই বাড়িতে প্রায় একমাস আগে ভাড়া বাসায় ওঠেন। শিশুটি কুমিল্লা শহরের দারুল হাকিমিয়া আলিম মাদ্রাসার দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী।

শুক্রবার দিবাগত রাত অনুমানিক ১২টার দিকে সৎ বাবা মো. জামাল হোসেন শিশুটিকে ধর্ষণ করে। তার বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানগুলোতে কামর দিলে ব্যথায় চিৎকার করলে প্রতিবেশীরা এসে ঘটনাটি দেখেন। প্রথমে এলাকার কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি অর্থের বিনিময়ে বিষয়টি গোপন রাখার চেষ্টা করেন। পরে স্থানীয়দের মাঝে বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে, শনিবার বিকেল ৫টার দিকে বিক্ষুব্ধ জনতা তার বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও তাকে মারধর করেন।

এসময় বাড়ির মালিকের ছেলে সাকিবসহ কিছু লোক বাঁধা দিতে গেলে তারাও হামলার শিকার হন। এতে কমপক্ষে ৫ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে সাকিব হোসেনকে দেবীদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

অভিযুক্ত জামাল হোসেন জানান,  ২০১৯ সালে তার প্রথম স্ত্রী রেহানা আক্তারকে নিয়ে দেবীদ্বার বানিয়াপাড়ায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। প্রায় একবছর পূর্বে রেহানা বেগমকে তালাক দিয়ে জেসমিনকে বিবাহ করেন। পূর্বের সংসারে এক ছেলে ও এক মেয়ে সন্তান রয়েছে। সৎ মেয়েকে শ্লীলতাহানীর বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি নিরব ছিলেন।

তার স্ত্রী জেসমিন আক্তার বলেন, ঘটনার সময় তিনি ঘুমিয়ে ছিলেন পরে মেয়ের কাছ থেকে বিস্তারিত শুনেছেন।

দেবীদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ শামসুদ্দিন মোহাম্মদ ইলিয়াছ জানান, সংবাদ পেয়ে বিকেলে অভিযুক্ত জামালকে উদ্ধার করতে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। জনতার রোষাণলে তাকে উদ্ধার করে আনতে ব্যর্থ হওয়ায়,  নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার রায়হানুল ইসলামের নেতৃত্বে সন্ধ্যায় আরও পুলিশ ও সেনা সদস্যের একটি দল নিয়ে তাকে উদ্ধার করা হয়েছে। পরে তাকে আটক রাখা হয়েছে। 

MMS
আরও পড়ুন