কক্সবাজারের ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে বন্যপ্রাণীর খাদ্য সরবরাহে নিয়োজিত ঠিকাদারের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। নীতিমালা মোতাবেক পার্কের বেষ্টনিতে বাঘ-সিংহের খাবার হিসেবে প্রতিদিন গরুর তাজা মাংস দেওয়ার কথা থাকলেও দেওয়া হচ্ছে ফ্রিজে রাখা গরুর বাসি মাংস।
সংশ্লিষ্টরা জানান, টেন্ডারের মাধ্যমে সাফারি পার্কে বাঘ-সিংহের খাবার গরুর মাংস সরবরাহে নিয়োজিত রয়েছেন মেসার্স সামির ইন্টারন্যাশনাল নামের ঢাকার একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ওই ঠিকাদারের কাছে উপ-ভাড়াটিয়া ঠিকাদার হিসেবে বন্যপ্রাণীর মাংস সরবরাহের দায়িত্ব পালন করছেন সাব ঠিকাদার চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের বাসিন্দা জিয়াউদ্দিন নামের এক ব্যক্তি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, জিয়াউদ্দিন প্রভাবশালী হওয়ায় ক্ষমতা দেখিয়ে পার্কে খাদ্য সরবরাহ করে আসছেন। যে কারণে পার্কের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও নীরব ভুমিকা পালন করছেন। অভিযুক্ত জিয়াউদ্দিন গত ৭ বছর ধরে ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে হাতবদল করে খাদ্য সরবরাহে লুটপাটে জড়িত রয়েছে।
পার্কের অফিস সূত্র জানায়, ডুলাহাজারা সাফারি পার্কের বেষ্টনিতে ৪টি বাঘ, ৩টি সিংহ রয়েছে। প্রতিদিন প্রতিটি প্রাণীকে খাবার হিসেবে ৬ কেজি করে গরুর মাংস দিতে হয়। হিসাব অনুযায়ী ৭টি বাঘ ও সিংহকে গরুর জবাই করে প্রতিদিন ৪২ কেজি গরুর মাংস সরবরাহ করার কথা।
সাফারি পার্কের রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. মনজুর আলম জানান, একটি গরু জবাই করলে ৮০ থেকে ৯০ কেজি মাংস হয়ে থাকে। ঠিকাদার একদিনে বাঘ-সিংহের খাবার হিসেবে ৪২ কেজি মাংস সরবরাহ দিতে পারে। হয়তো অবশিষ্ট মাংস ফ্রিজে রেখে পরদিন দিয়েছেন। তবে ১৫ দিনের বাসি মাংস সরবরাহের অভিযোগে আদতে সঠিক নয়। আমরা কিন্তু নিয়মিত তদারকি করছি।
এ ব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত জিয়াউদ্দিনের মোবাইলে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের চট্টগ্রামের বনকর্মকর্তা (ডিএফও) আবু নাছের মোহাম্মদ ইয়াছিন নেওয়াজ বলেন, বাসি গরুর মাংস পার্কের বাঘ ও সিংহের খাবার হিসেবে দিচ্ছে এই ধরনের একটি ছবি পেয়েছি। ব্যাপারটি দেখার জন্য পার্কের রেঞ্জ অফিসারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারপরও বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। যদি সত্য পাওয়া যায় তাহলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
